প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি : সাটুরিয়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের অর্থ আত্মসাৎসহ দপ্তরের বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগে নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ব্যাচমেট পরিচয় দিয়ে যিনি দাপিয়ে বেড়াতেন, এখন সেই কর্মকর্তাই বিএনপি পরিবারের সন্তান দাবি করে দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় গত বছর উপজেলা পর্যায়ে পিজি ও নন পিজি খামারিদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বরাদ্দ আসে। এতে মোট প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন ৯টি ইউনিয়নের ৪৪০ জন। বরাদ্দ ছিল ১৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ বাবদ সম্মানি ১ হাজার টাকা করে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২ দিন প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা থাকলেও ১ দিনে সীমিত আকারে সম্পন্ন করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণে নাস্তা ও দুপুরের খাবারের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রতিজনের ১ হাজার টাকা করে ৪ লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু ১৬০ টাকায় নিম্নমানের একবেলা খাবার দেয়া হয় প্রশিক্ষণার্থীদের। বরাদ্দ থেকে খাবার বাবদ তিনি ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রশিক্ষণে ব্যাগ, প্যাড, কলম, বাবদ জনপ্রতি ৭০০ টাকা বরাদ্ধ থাকলেও খরচ করেন মাত্র ১৬০ টাকা করে। এতে সরঞ্জাম বাবাদ ২ লাখ ৪২ হাজার আত্মসাৎ করেন। প্রশিক্ষণে মোট ১১টি গ্রুপে ২দিনে ২২টি ক্লাস করার কথা। প্রতি ব্যাচে বরাদ্দ ছিল ২০ হাজার টাকা করে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এখানেও নয়ছয় করে পিজি ও নন পিজি প্রশিক্ষণে ভুয়া বিল ভাউচার করে তিনি ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
জানা যায়, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় গত ২৮ মে তারিখে ১৯৫২ নম্বর স্মারকে উপজেলার পিজি গ্রুপের খামারিদের অন্য জেলায় সফল খামার পরিদর্শন করার জন্য বরাদ্ধ আসে। ৪৩৯ জন খামারিকে নিয়ে ভ্রমণমূলক প্রশিক্ষণে বরাদ্দ ছিল ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণার্থীদের বরাদ্দের ৫০০ টাকা হাতে দিলেও ভ্রমণে শুভংকরের ফাঁকি দেন তিনি। প্রাণিসম্পদ সাটুরিয়া অফিস থেকে খামারিদের অন্য জেলায় খামার পরিদর্শনের জন্য পরিবহনের খরচ বাবদ বরাদ্ধ ছিল ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ১ দিনে ৩টি বাস নিয়ে গেলেও পরে ৪ দিন অটোরিকশা নিয়ে যান মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়ার সীমান্তবর্তী ধামরাই উপজেলার আমতা গ্রামে। পরিবহন ভাড়া থেকেই ২ লাখ ৪১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। ভ্রমণে খাবারের জন্য বাবদ বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ১৬০ টাকা মাথাপিছু খাবার বিতরণ করেন। খাবার ক্রয় বাবদ ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকাসহ এ থেকে মোট ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
ডা. ইমরান হোসেন দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অডিটের জন্য কিছু টাকা রাখতে হয়। তাছাড়া ভ্যাট-ট্যাক্স রাখতে হয়। এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করতে হয়। কোথায় পাব এসব। তাই কিছু টাকা খরচের জন্য রাখি। যানবাহন দুর্ঘটনার তারিখ পরিবর্তন করা হয়নি। সেটি অডিট হয়ে গেছে।