×

সারাদেশ

রামগড়ে বন্যায় মৎস্য-কৃষিতে সাড়ে ৪ কোটি টাকার ক্ষতি

Icon

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রামগড়ে বন্যায় মৎস্য-কৃষিতে  সাড়ে ৪ কোটি টাকার ক্ষতি

করিম শাহ, রামগড় (খাগড়াছড়ি) থেকে : খাগড়াছড়ির রামগড়ে ঢলের পানিতে প্লাবিত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মৎস্য ও কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। সরকারি হিসাবে শুধু মৎস্য ও কৃষি খাতে সম্মিলিতভাবে প্রায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮০ লাখ টাকা। তবে সরকারি হিসাবের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো কম-বেশি হতে পারে।

উপজেলার রামগড় পৌরসভার ফেনীরকুল, সদুকার্বারীপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতায় আউশ রোপা আমনের বীজতলা ও ধানের চারা গাছ মরে গেছে। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন সবজির আবাদের জন্য প্রস্তুত করা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের গাছ ও লতাপাতা সরিয়ে আবারো আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। রামগড় পাথর এলাকার কৃষক মো. ইলিয়াছ জানান, তিনি তার ২০০ শতক জমিতে প্রায় লাখ টাকার আমনের চারা রোপণ করেছিলেন। বন্যার পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি এখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না। তার মতো শত শত কৃষক ক্ষেতের ফসল হারিয়ে আর্থিক লোকসানে পড়েছেন।

এদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরাবর একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৫টি কৃষি পরিবার।

৬৮ হেক্টরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হেক্টর জমির রোপা আউশ এবং ২ হাজার ২৪৬ হেক্টরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৯৬ হেক্টর জমির রোপা আমন। এ ছাড়া ৫৮৫ হেক্টরের মধ্যে ২৫ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অঙ্কে কৃষিতে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, পৌর সদরের ফেনীরকুল, মহামুনি, দারোগাপাড়া, চৌধুরীপাড়া, সদুকার্বারীপাড়াসহ দুই ইউনিয়নের আংশিক এলাকার কৃষিজমি পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষকরা রবি মৌসুমসহ সবজির যেন আগাম আবাদ করতে পারে সেজন্যে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। যদি সরকারি সহযোগিতা আসে, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর ডুবে মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রামগড়ে মোট ১০৫টি জলাশয় ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৬ হেক্টর পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা। সদুকার্বারীপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী নুর হোসেন জানান, এ বন্যার পানিতে তার প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে। শেষ সম্বল হারিয়ে তিনি এখন দিশাহারা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত)) প্রনব কুমার সরকার বলেন, তারা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে একটা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক মৎস্য খাতে ক্ষতি পূরণে কাজ করবেন বলে জানান তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতা আফরিন জানান, বন্যার এ ক্ষতি কখনো পোষাবার নয়। কৃষক ক্ষতি কাটায়ে উঠবে- এ আশায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরিমাপ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। যদি কৃষক প্রণোদনা আসে, সেটি সরকার নির্দেশমতো কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

পেশাদার সাংবাদিকতা করেছি, আমি সরকারের সুবিধা নেইনি

রিমান্ড শুনানিতে শ্যামল দত্ত পেশাদার সাংবাদিকতা করেছি, আমি সরকারের সুবিধা নেইনি

১৭ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৭ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কতটা গুরুত্ব বহন করে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র কতটা গুরুত্ব বহন করে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

কবির, নূরুল, তৌফিকসহ আরো যারা গ্রেপ্তার হলেন

কবির, নূরুল, তৌফিকসহ আরো যারা গ্রেপ্তার হলেন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App