১১ দিনেও আটক হয়নি কেউ
মানিকগঞ্জে ৭০ ভরি স্বর্ণ ডাকাতি নিয়ে রহস্য
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সুরেশ চন্দ্র রায়, মানিকগঞ্জ থেকে : মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ৭টি স্বর্ণের বার (৭০ ভরি) ডাকাতির ঘটনার ৯দিন পরেও ডাকাত চক্রের কাউকেই এখন পর্যন্ত আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাট থেকে স্পিডবোট নিয়ে সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল খালেরপাড় এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ৭০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। এ সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে শিবালয়ের কয়েকজন তার কাছ থেকে ৭০ ভরি স্বর্ণ ও একটি একটি দামি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৮০ লাখ বারো হাজার টাকা।
পরবর্তী সময়ে তাকে একটি বাড়িতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আটকে রেখে পরে উপজেলার উথলী বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার ৬দিন পর ২২ জুলাই শিবালয় থানায় স্বর্ণ ব্যবসাযী মিজানুর রহমান কোনো নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত ডাকাতির একটি মামলা দায়ের করেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান ২ যুগের বেশি সময় লেবাননে ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি স্বর্ণ ব্যবসায় বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেন। বর্তমানে দেশের নানা স্থানে তার স্বর্ণের ব্যবসা রয়েছে।
বৈধ ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ব্যবসাও থাকতে পারে বলে ধারণা অনেকের। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবার ভয়ে তিনি এ মামলা নিয়ে তেমন কোনো কথাবার্তা বলছেন না।
ভুক্তভোগীর সই করা একটি অভিযোগের অনুলিপি গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এলে সেখানে দেখা যায়, মিজানুর রহমানের স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে আসিয়ার রহমান সিকু (৪০), নয়ন (৪০), বিশ্বজিৎ ওরফে বিসু (৪৫), সেলিম রেজা (৪৩), রাকিবুল (৩৭) ও টুটুলের নাম অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঘটনার ৬দিন পর থানায় যে মামলা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, মামলায় কারো নাম নেই।
বাদীর কাছে অভিযোগের কপির সূত্র ধরে অভিযুক্তদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের সবার মোবাইল ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের এলাকায় গিয়ে জানা যায়, স্বর্ণ ডাকাতির পর থেকে তারা এলাকায় নেই। গা ঢাকা দিয়েছেন।
স্বর্ণ ডাকাতির বিষয়ে জানতে মিজানুর রহমানের মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির গেট বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পর মিজানুর রহমানের ছেলে মৃদুল বাড়ির দোতলা থেকে জানান, তার মা বাবা কেউ বাড়িতে নেই। তোমার বাবার স্বর্ণ ছিনতাইয়ের বিষয়ে তুমি কিছু জান কিনা প্রশ্নে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার জানান, তারা বাদীকে (স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান) খুঁজে পাচ্ছেন না। মামলার অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ডাকাতি হওয়া স্বর্ণ ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।