×

সারাদেশ

নাব্য সংকটে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শঙ্কা

কেশবপুরের পাঁচ নদনদী গভীর করে খননের দাবি

Icon

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কেশবপুরের পাঁচ নদনদী  গভীর করে খননের দাবি

জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর (যশোর) থেকে : সংস্কারের নামে লুটপাট আর ভূমিদস্যুদের দখলদারিত্বে যশোরের কেশবপুর উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদনদীগুলো নাব্য হারিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। এতে নদনদীগুলোর পানি ধারণ ও নিষ্কাশন ক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এদিকে নদনদী খনন না করায় এ বছরও ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ, হরিহর, বুড়িভদ্রা, আপার ভদ্রা, শ্রী নদী। এ নদনদী দিয়ে এক সময় পালতোলা নৌকা চলাচল করত। হরিহর নদীর পাড়ে গড়ে উঠে কেশবপুর বাজার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসারীরা নৌকা করে কেশবপুর বাজারে আসত খেজুরের গুড়, ধান, পাট, নারিকেলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য কিনতে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে নদনদীগুলো পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এ সুযোগে নদীর দুপাশ একটু একটু করে দখল করে কৃষি জমি, মাছের ঘের, পুকুর তৈরি করেছে ভূমিদস্যুরা। এতে নদনদী নাব্য হারিয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে। এসব নদনদী খননে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও যেনতেনভাবে খনন করায় নদনদীগুলো দিন দিন আরো নাব্য হারিয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে। তবে সীমানা নির্ধারণ করে, সম্পূর্ণ নদী এক অর্থবছরে চওড়া ও গভীর করে খনন করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে ভুক্তভোগী মহল মনে করে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হরিহর নদের ৫ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রা নদীর ৭ কিলোমিটার অংশ পলিতে ভরাট হয়েছে। এছাড়া আপার ভদ্রা নদীর ১৮ কিলোমিটার ও হরি নদের ১৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হয়েছে। এর আগে ২০১৬-১৭ সালে এই নদনদীগুলো পানি নিষ্কাশিত না হতে পেরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সে সময় কেশবপুর পৌরসভা এলাকাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১৬১ বর্গকিলোমিটার এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। ভুক্তভোগীদের অভিমত, উপজেলার মানুষকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করতে হলে নদনদীগুলো চওড়া ও গভীর করে খনন করতে হবে । নদনদী খনন এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি। বর্ষা মৌসুমের আগে নদী খননের দাবি জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মূলত কেশবপুর শহরের পানি হরিহর নদ, বুড়িভদ্রা ও আপার ভদ্রা নদী দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। এ তিন নদনদী পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। অন্যদিকে কেশবপুরের পূর্বাংশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হরি নদের ১৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে এখনো বাগডাঙ্গা গ্রামে মানুষের বাড়িতে পানি রয়েছে। বিল খুকশিয়া, কালীচরণপুর বিল ও বাগডাঙ্গা বিল জলাবদ্ধ হয়ে আছে। এ বিলগুলোতে আট বছর ধরে কোনো ফসল হচ্ছে না।

গত শনিবার (২৯ জুন) কেশবপুর বাজারসংলগ্ন হরিহর নদ ঘুরে দেখা গেছে, নদের এই পাঁচ কিলোমিটার অংশে এক, দেড় ফুট পানি আছে। বিদ্যানন্দকাটি রাসবিহারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে বড়েঙ্গা পর্যন্ত সাত কিলোমিটার বুড়িভদ্রা নদীতে সামান্য পানি রয়েছে। অন্যদিকে বড়েঙ্গা থেকে পশ্চিমে আপার ভদ্রা নদীর ১৮ কিলোমিটারে কোনো পানি নেই। এখানে আপার ভদ্রা নদী থেকে পূর্বে হরিহর নদ এবং উত্তরে বুড়িভদ্রা নদীর সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, বর্ষা মৌসুমের আগে নদনদী ও বিলের মধ্যে খাল খনন করতে হবে। না হলে কেশবপুর ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় নির্মজিত হবে। তিনি অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ তাদের দাবির বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করছে না।

কেশবপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নদনদীগুলো পলিতে ভরাট হওয়ায় এ বছর জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। তবে টাকার সংস্থান না হওয়ায় নদী খননের কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।

পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করলে তা থেকে কোনো ফলাফল আসবে না। তাই মনিরামপুর-কেশবপুর এলাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে সমন্বিত একটি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

জবি থেকে প্রথম উপাচার্য ড. রেজাউল করিম

জবি থেকে প্রথম উপাচার্য ড. রেজাউল করিম

যে কারণে সবাই ‘দ্য ডেলিভারেন্স’র গ্লেন ক্লোজকে নিয়ে বিরক্ত

যে কারণে সবাই ‘দ্য ডেলিভারেন্স’র গ্লেন ক্লোজকে নিয়ে বিরক্ত

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয় ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয় ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ

প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকল্পের সব তথ্য ওপেন থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App