×

সারাদেশ

লালমনিরহাট তিস্তা রেলসেতু

ফিশপ্লেটে নাটের বদলে গাছের ডাল!

Icon

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

 ফিশপ্লেটে নাটের বদলে গাছের ডাল!
লালমনিরহাট সংবাদাতা : লালমনিরহাটে তিস্তা রেলসেতুতে লোহার ফিশপ্লেট ও নাটবল্টুর পরিবর্তে লাগানো হয়েছে গাছের ডাল। এভাবে শত কোটি টাকার দুর্নীতি প্রকাশ্যে চলছে। এদিকে রেলওয়ের এই দুর্নীতি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত টিম কাজ করছে বলে জানা গেছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজারের (ডিআরএম) কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল তদন্তে এসেছেন বলেও জানা গেছে। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুই হাজার ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ রেলসেতুটির বিভিন্ন স্থানে লোহার পাতের পরিবর্তে লাগানো হয় বাঁশ। তিস্তা সেতুর ওপর দিয়ে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রতিদিন আন্তঃনগর, কমিউটার ও লোকালসহ মোট ৩২ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। অথচ এ রেলসেতুর অধিকাংশ স্থানে নেই স্পাইক। তার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ। এমনকি ফিশপ্লেট আটকানোর জন্যও নাটবল্টুর বদলে গাছের ডাল ও লাঠি ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক অংশে নষ্ট হয়ে গেছে সিøপার। এমনকি অতি গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুতে লোহার পরিবর্তে লাগানো হয়েছে কাঠের পাটাতন। তাই যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। আরো জানা যায়, একটি সিøপার হতে অন্য একটি সিøপারকে আটকে রাখতে লোহার পাতের পরিবর্তে সেতুতে লাগানো হয়ে ছিল বাঁশ কাবারি। বিষয়টি সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তুলে ফেলে এখন ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ। আর নাটবল্টুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে গাছের শুকনো ডাল। এতে ট্রেন যাত্রীরা দুর্ঘটনার আশঙ্কা করলেও বেশ জোর দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। মূল সেতু বা রেললাইনের সঙ্গে নাকি কোনো সম্পর্ক নেই। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে গাছের ডাল ও বাঁশ কেন লাগানো হলো। আবার গণমাধ্যমের কর্র্মীরা জানতে পারায় তা রাতারাতি কেন তুলে ফেলে কাঠ লাগানো হচ্ছে। রেলওয়ে একটি সূত্রে জানা গেছে, লোহার ফিশপ্লেটগুলো রেলওয়েতে সরবরাহ নেই। ক্রম করা দেখিয়ে লোহার ক্লিপের দামে বিল করে। কিন্তু বাস্তবে লাগানো হয় গাছের ডাল। এলাকাবাসী জানান, তিস্তা রেলসেতুর বেশির ভাগ অংশে লোহার নাটবল্টু নেই। এর পরিবর্তে গাছের ডাল ও কাঠ ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। আবার রেল সেতুর অনেক জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে কাঠের ফালা। সেতুতে ট্রেন উঠলে জোরে ঝাকুনি হয়। খুব আতঙ্কে আমরা ট্রেনে যাতায়াত করি। একমাত্র বাংলাদেশ রেলওয়ে বলে হয়তো এমন ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলছে। এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের মানুষ অভিভাবকহীন তার প্রমাণও এটি। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের লোকজন বলেন, রেললাইনের লোহার নাটবল্টু বা চাবি এখন আর পাওয়া যায় না। তাই সাময়িক কাজ চালানোর জন্য সেখানে বাঁশের খিল ও কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, এটা সেতুর মূল স্ট্রাকচারের কোনো অংশ না। যে কারণে এটা ব্রিজের সঙ্গে বা ট্রেন চলাচলে কোনোভাবে জড়িত না থাকায় এটি নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। আমরা সবসময় ব্রিজগুলোর দেখভাল করি। এর আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা ছিলেন তারা পুরনো সিøপার চিরাই করে ব্রিজে ব্যবহার করেছে বলেও তিনি জানান। দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি তদন্ত দল লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় দপ্তরে এসেছেন বলে তিনিও শুনেছেন। এর বেশি কিছু তার জানা নেই। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ রাজুল হক প্রেস রিলিজি দিয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App