×

বুয়েটের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট বোর্ড

ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন কারিগরির জাল সনদধারীরা

Icon

অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন কারিগরির জাল সনদধারীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ দিয়ে জালিয়াতি করে যারা সনদ নিয়েছিলেন ‘ফরেনসিক অডিটের’ মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এজন্য বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের সঙ্গে মিলে জাল সনদধারীদের খোঁজার জন্য একটি চুক্তির খসড়াও তৈরি করেছে বোর্ডটি। গত দুদিনে বুয়েটের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে এসব পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। কারিগরি বোর্ডে অধ্যাপক মো. মামুন উল হক নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েই এমন উদ্যোগ নেন। 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রায় ৫ হাজার সনদ জাল করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ। জাল সনদের অভিযোগ থেকে বোর্ডকে মুক্ত করতে শুরুতেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০০৭ সাল থেকে দেয়া ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারিদের সনদ ফরেনসিক অডিটের মাধ্যমে ‘আতস কাচের’ তলায় আসবে। এর ফলে গত ১৭ বছরে যতজন ডিপ্লোমা ডিগ্রি পেয়েছেন তাদের সনদ যাচাই হবে। এরপর এসএসসি (ভোকেশনাল) ডিগ্রিধারীদের সনদও ফরেনসিক অডিটের মাধ্যমে যাচাই করা হবে। সেই হিসেবে ভোকেশনাল থেকে গত সাত বছরে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের সনদ যাচাই হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগ একটি সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে।

প্রসঙ্গত, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, এগ্রিকালচার, ফিসারিজ, লাইভস্টক, ফরেস্ট্রি, মেডিকেল টেকনোলজি বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেয়া হয়। জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মামুন উল হক ভোরের কাগজকে বলেন, বুয়েটের সঙ্গে কথা হয়ে গেছে। তারা ফরেনসিক অডিটের মাধ্যমে জালিয়াতি করে নেয়া সনদগুলো বের করতে পারবে। তিনি বলেন, শুরুতে আমরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০০৭ সাল থেকে দেয়া ডিপ্লোমা সনদগুলো যাচাই করব। পরে ২০১৭ সাল থেকে এসএসসির (ভোকেশনাল) সনদও যাচাই করব। কারণ ওখানেও নম্বর ট্যাম্পারিং হয়েছে। 

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান টাকার বিনিময়ে সনদ দেয়ার দায়ে ২০১৭ সালেই অভিযুক্ত হয়েছিলেন। সে সময়ের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এর সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। পাশাপাশি তাকে সিস্টেম এনালিস্টের পদ থেকে সরিয়ে পরিদর্শন শাখায় বদলি করা হয়। কিন্তু গতবছর থেকে সে আবার সিস্টেম এনালিস্ট পদে ফিরে আসে। সব কলঙ্ক থেকে বোর্ডকে মুক্ত করার জন্য মাত্র কাজ শুরু হয়েছে। পুরো জঞ্জাল পরিষ্কার করতে একটু সময় লাগবে। 

সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০১২ সাল থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী টাকার বিনিময়ে জাল সনদ দেয়ার অপকর্ম শুরু হয়। ২০১৭ সাল থেকে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার ফলাফলেও নাম্বার ট্যাম্পারিং করা হতো। সম্প্রতি বোর্ডটির সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সনদ বাণিজ্যের কথা বেরিয়ে আসে। এমন অপরাধে বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যানকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। পুলিশ বলছে, কমপক্ষে পাঁচ হাজার সনদ জালিয়াতি করা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ভোরের কাগজকে বলেছেন, পরীক্ষা দিয়ে পছন্দমতো স্কোর করতে না পারলে, কিংবা ফেল করলে ওই পরীক্ষার্থী কারিগরি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তৈরি হওয়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কারিগরি বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্টের কাছে পৌঁছে যেতেন। তারপর প্রয়োজনীয় ঘুষের টাকা জমা দিয়ে পছন্দমত সনদ নিতেন। তিনি বলেন, পরীক্ষা দিয়ে কেউ হয়ত সিজিপিএ-২ স্কোর পেলেন। টাকা দিলে সেটি সিজিপিএ-সাড়ে ৩ হয়ে যেত। পরিবর্তী সময় স্কোরের সনদ অনলাইনেও আপলোড করা হতো। এমনভাবে সনদটি দেয়া হতো সেটি মোটা দাগে ধরার কোনো সুযোগ থাকত না। ২০০৭ থেকে শুরু হলেও ২০১২ সালের পর থেকে এমন দুনম্বরি বোর্ডে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারমতে, দেশজুড়ে একাধিক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও অধ্যক্ষরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। 

এদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের হাজার-হাজার সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় ওএসডি হওয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর এ বিষয়ে নিজ স্ত্রীকে নির্দোষ দাবি করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন। এদিন সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় তাকে তলব করে প্রায় ৩ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আপনার স্ত্রী বিনা অপরাধে জেল খাটছে বলে মনে করেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর বলেন, আমার স্ত্রী কোনো ভুল করেছে কিনা আমি জানি না। আমি তার বিষয়ে কিছুই জানি না। গোয়েন্দা সংস্থা তার কাছে কি তথ্য পেয়েছে সেটিও জানি না। আমি মনে করি বিনা অপরাধেই জেল খাটছে। তাহলে আপনাকে ওএসডি করা হয়েছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়ায় একটি সংবাদ চলে আসছে এবং ডিবির কাছে তথ্য আছে, সেজন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এক্ষেত্রে আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত। 

কী পরিমাণ সার্টিফিকেট বাণিজ্য হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়াতে শুনতে পেয়েছি পাঁচ কি সাড়ে পাঁচ হাজার। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা বের করেছে, এর বেশি কিছু জানি না। সার্টিফিকেটের কাগজ ওয়েবসাইটে পাইনি। ২০ লাখ টাকা ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এটির তদন্ত চলছে। 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের হাজার হাজার সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় ওএসডি হয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেছেন, সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত মনে হলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া আলী আকবরকেও গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, বোর্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ লোক ছিল না। তাই নজরদারি রাখতে পারেননি। তবে তিনি এই জালিয়াতির দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা অনেক প্রশ্ন করেছি। তিনি দুয়েক দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেবেন। হারুন অর রশিদ আরো বলেন, আজকের মতো ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিনি এখনো আমাদের নজরদারিতে আছেন। বুয়েটের একটি প্রতিনিধি দলকে নিয়ে আবারও তার সঙ্গে বসব। আমাদের যদি মনে হয় তিনি জড়িত তবে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে। 

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় একের পর এক বেরিয়ে আসছে অনেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার নাম। এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরাও। শিগগিরই এসব রাঘব-বোয়ালদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবি। সনদ বাণিজ্যের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আলোচিত নাম হলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীন। ইতোমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবরকেও। সনদ বাণিজ্যের ঘটনায় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান, তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল, কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলি, কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ। 

এ বিষয়ে ডিবি লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এই দুর্নীতির খনির ভেতরে আমরা ধীরে ধীরে প্রবেশ করছি। এখানে আমাদের আরো কাজ বাকি রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত আছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। যারাই এর সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার হওয়া ৬ জন ছাড়া সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরো তিন কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিবিএ নেতা আব্দুল বাছের, রেজিস্ট্রেশন শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার মামুনুর রশীদ ও বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আব্বাস। তারা বিভিন্ন সময় বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি করার কথা বলতেন। তাদের দাবি অনুযায়ী শামসুজ্জামান সনদ তৈরি করে দিতেন এবং রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিতেন। এজন্য তারা শামসুজ্জামানকে কোনো টাকা দিতেন না। একই বোর্ডের লোক হওয়ায় শামসুজ্জামান তাদের কাছে টাকা চাইতে সাহস পেতেন না। তদন্ত সূত্রে আরো জানা যায়, বোর্ডের আরো অনেক কর্মকর্তা এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছেন। তাদের নাম জানার জন্য ডিবি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। 

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান অভিযুক্ত শামসুজ্জামান জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদের কাগজ প্রতি বান্ডিলে ৫০০টি করে থাকে। বান্ডিল করা এসব কাগজ শামসুজ্জামান শিক্ষা বোর্ডের অফিস থেকে সংগ্রহ করতেন। তবে তার কাছে জাল সার্টিফিকেট তৈরির এত চাহিদা থাকত যে বোর্ড অফিসের কাগজ পর্যাপ্ত হতো না। কাগজের জোগান ঠিক রাখতে রাজধানীর পুরান ঢাকা ও রংপুরের একটি প্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের আসল কাগজের নমুনা দেখানোর পর তারা হুবহু সার্টিফিকেটের কাগজ তৈরি করে দিতেন শামসুজ্জামানকে। শামসুজ্জামান প্রতিদিন অফিস শেষ করে বাসায় গিয়ে এসব কাগজ দিয়ে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করতেন। সার্টিফিকেট প্রিন্ট করার কাজ করতেন তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল। রাজধানীর পীরেরবাগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয়া হয়েছিল সার্টিফিকেট প্রিন্ট করার জন্য। সেখানে এসব জাল সার্টিফিকেট প্রিন্ট করতেন ফয়সাল। তারপর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েব সাইটে গিয়ে এসব জাল সার্টিফিকেট আপলোড করে দিতেন শামসুজ্জামান। আপলোড করার পর এসব সার্টিফিকেট বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে ভেরিফাই করা যেত। 

জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানান, তিনি ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জাল সার্টিফিকেট তৈরি করা শেখেন। মোহাম্মদ শামসুল আলম নামে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক সিস্টেম অ্যানালিস্টের কাছ থেকে এই জালিয়াতি শেখেন তিনি। শামসুল আলম বিভিন্ন সময় ডিপ্লোমা পরীক্ষার সার্টিফিকেট জালিয়াতি করতেন। তিনিও শিক্ষার্থীদের কাছে জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী পাস করতে পারত না তাদের নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে পাস করিয়ে দিতেন শামসুল হক। তার কাছ থেকে শিখে শামসুজ্জামান এসএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষার্থীদের জাল সার্টিফিকেট বানানোসহ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার কাজ করতেন। 

সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীরা প্রথমে দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। দালালরা শমসুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করত। সনদ প্রতি ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন শামসুজ্জামান। এ ব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকরাও যোগাযোগ করতেন তার সঙ্গে। পরিচালকরা সার্টিফিকেট প্রতি ৩০-৫০ হাজার টাকা দিতেন। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরো মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন। প্রায় ৩০ জনের মতো দালাল ও প্রতিষ্ঠান পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে শামসুজ্জামানের। নরসিংদী, ময়মনসিংহ, খুলনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দালালরা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট বানিয়ে নিতেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App