×

মুক্তচিন্তা

বই পড়া না কি বই শোনা আপনার বেশি পছন্দ?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ এএম

বই পড়া না কি বই শোনা আপনার বেশি পছন্দ?
ভাষা মানুষের মস্তিষ্কে যেভাবে প্রসেসড হয় সেটা অত্যন্ত জটিল ও রহস্যময় এক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। গবেষণার কঠিন কঠিন তথ্য উপাত্ত না জানলেও এটা সহজেই বুঝি যে আমরা যখন কিছু পড়ি, তখন একটার পর একটা শব্দ এবং বাক্য জোড়া লেগে মনের ভেতরে কিছু দৃশ্যকল্প তৈরি হয়। যদি দেখি কোথাও একটা শব্দ লেখা আছে- ধরা যাক ঘোড়া, তখন এটি পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গে মনের ভেতরে ঘোড়ার পা থেকে মাথা পর্যন্ত এই প্রাণীর পুরো অবয়ব ভেসে ওঠে। শুধু তাই নয়, আমরা দেখতে পাই ঘোড়াটি হয়তো খোলা মাঠে কিংবা আস্তাবলের ভেতরে দাঁড়িয়ে আছে। ছোট্ট একটি শব্দ পাঠ করার সাথে সাথে মুহূর্তের মধ্যে এমন একটি দৃশ্যকল্প তৈরি হওয়া খুব সাধারণ বিষয় নয়। কিন্তু পড়ার বদলে আমরা যখন শব্দটা শুনি- ঘোড়া, তখনও তো মনের ভেতর ঠিক একই দৃশ্য তৈরি হয়। এই যে পড়া এবং শোনা- এই দুটো সময়ে ভাষা আমাদের মস্তিষ্কে কিভাবে প্রসেসড হয়? কোনটা দ্রুত হয়, কোন দৃশ্য বেশি শক্তিশালী এবং কোনটা বেশি স্থায়ী হয়? কখন একটা দৃশ্য বেশি মনে থাকে- পড়লে না কি শুনলে? শোনা প্যাসিভ ঘটনা। তাই শোনার সময় আরো কিছু কাজ করা সম্ভব। মস্তিষ্কের এক অংশে যখন শোনা কথা প্রসেসড হয়, তখন আরেক অংশ অন্য কিছুতে মনোযোগ দিতে পারে। কিন্তু পড়ার সময় এটা সম্ভব হয় না। কারণ পাঠ করার সময় সকল ইন্দ্রিয় লেখার উপর নিয়ে আসতে হয়। ফলে শোনা সহজ, পড়া কঠিন। কিন্তু পড়ার উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য হচ্ছে আনন্দ লাভ। এই আনন্দ যদি শুনে অর্জন করা যায়, তাহলে কি পড়ার প্রয়োজন আছে? এমনও তো কথা নেই যে কিছু পড়লে সেটা আমাকে মনে রাখতেই হবে। কেউ কেউ বলেন, শোনার সুবিধা হচ্ছে শুনতে শুনতে মস্তিষ্ককে মুক্ত রাখা যায়। কিন্তু এই মুক্ত রাখা কিসের জন্য? আমরা যখন শুনি, কিছু মিস করলে, কিংবা ভালো লাগলে কি রিওয়াইন্ড করে আবার শোনা হয়, যেমনটা আমরা পড়ার বেলায় করি? গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ যখন কিছু পড়ে, তখন তার চোখ ৭০ ভাগ সামনের দিকে এগিয়ে গেলেও বাকি অংশ পেছনে ঘুরপাক খায়। ফলে সামনের দৃশ্যকল্প দেখার পাশাপাশি পেছনের দৃশ্য একই সময়ে উপস্থিত থাকার কারণে ছবিটা আরো বেশি সামগ্রিকভাবে দেখা সম্ভব হয়। এতো কথা বলার পেছনে কারণ হচ্ছে, ডিজিটাল দুনিয়ায় ইদানীং বই পড়ার চেয়ে বই শোনা জনপ্রিয় হচ্ছে। এগুলোকে বলা হয় অডিও বুক। আমাদের পাড়ার লাইব্রেরিতে আগে বই-এর ক্যাসেট সিডি পাওয়া যেত, এখন এমপি থ্রিও পাওয়া যায়। ইউটিউবেও অনেক অডিও বুক আপলোড করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নামী দামী পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রিপোর্টও অডিও হিসেবে প্রতিবেদনের সঙ্গে পোস্ট করা হয়। তাহলে কি আগামীতে মানুষ বই পড়ার চেয়ে বই শোনায় আগ্রহী হয়ে উঠবে? প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের কোনটা পছন্দ- বই পড়া না কি বই শোনা?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App