×

মুক্তচিন্তা

গণঅভ্যুত্থানে বহির্বিশ্বকে নিষেধাজ্ঞা দিতে চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:০১ পিএম

গণঅভ্যুত্থানে বহির্বিশ্বকে নিষেধাজ্ঞা দিতে চাই
চিৎকার করে বলা হচ্ছে জনগণ ক্ষমতার মালিক, জনগণের ভোটে জয় লাভ করে ক্ষমতায় আছি। জনগণ কমপ্লেইন করছে তারা ভোটই দিতে পারেনি অথচ সরকার বলছে আমরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি। আমার প্রশ্ন তাহলে কি আমাদের ভীমরতিতে ধরেছে যে আমরা এই সহজ সমীকরণটি মিলাতে পারছি না? হয়তো ধরেছিল তবে এখন সব আস্তে আস্তে মনের জানালায় পরিষ্কার হয়ে বিষয়টি সহজ থেকে সহজতর হতে চলেছে। চলুন তাহলে জেনে নেই কে জনগণ এবং কে সেই ক্ষমতার মালিক। যদি বলি বাংলাদেশের জনগণ বলতে বোঝানো হয়েছে আমেরিকা, ভারত, রাশিয়া, গণচীন এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে। এরা বাংলাদেশের যে দলকে সাপোর্ট করবে সেই দল ক্ষমতায় আসবে, যে দলকে সাপোর্ট করবে না তাকে নানা ধরণের নিষেধাজ্ঞা দিবে এবং শেষে নাজেহাল করে তিলে তিলে শেষ করে দিবে। অভাগা ১৮ কোটি মানুষ মাঝখানে হুলুস্থুল, চিল্লাচিল্লি করবে, অভিযোগ করবে যে তারা ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এটা মেনে নেওয়া যাবে না। কিন্তু ১৮ কোটি মানুষের চিৎকারে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে? আসুন আরো একটু পেছনে ফিরে যাই, ৭১ এর যুদ্ধে জীবন দিয়েছে কারা? দেশের মানুষ? ভোট দিয়েছে কে বা কারা? রাশিয়া ছাড়া সবাই ভোট দিয়েছে পাকিস্তানের পক্ষে শুধু রাশিয়ার ভেটোর কারণে বার বার পরাজিত হয়েছে পাকিস্তান। শেষে ভারতসহ আরো অনেক দেশের সমর্থনসহ নানা সাহায্যের ফলস্বরুপ পাকিস্তানের স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশ নামটি পেয়েছিলাম তবে সত্যিকার মুক্তি এবং স্বাধীন হতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭১-এর ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। আমরা স্বাধীন এবং মুক্তি পেয়েছি পাকিস্তান থেকে কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি আজও, যার ফলে আমেরিকা, গণচীন, ভারত এবং রাশিয়া এখনও বলছে আমাদেরকে কী করতে হবে এবং কী না করতে হবে। এ পর্যন্ত দেশের কোনো সরকার ৫২ বছরে দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহি করেনি তবে তারা সেটা করে চলছে উপরের দেশগুলোর কাছে, এ বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়। তাহলে বুঝতেও অসুবিধা হবার কথা নয় কে সেই সত্যিকার জনগণ। তাহলে আমরা কারা? আমরা দেশের মেহনতি মানুষ—কাজের লোক। মনে কি পড়ে নিচের কবিতাটি? মৌমাছি, মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচি দাঁড়াও না একবার ভাই। ওই ফুল ফোটে বনে যাই মধু আহরণে দাঁড়াবার সময় তো নাই। ছোট পাখি, ছোট পাখি কিচিমিচি ডাকি ডাকি কোথা যাও বলে যাও শুনি। এখন না কব কথা আনিয়াছি তৃণলতা আপনার বাসা আগে বুনি। পিপীলিকা, পিপীলিকা দলবল ছাড়ি একা কোথা যাও, যাও ভাই বলি। শীতের সঞ্চয় চাই খাদ্য খুঁজিতেছি তাই ছয় পায়ে পিলপিল চলি। নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য (১৮৫৯ – ১৯৩৯) তোমাকে আমার মনে পড়েছে। তুমি কি করে জানতে জাতি সারাজীবন কাজের লোক হয়ে বাংলাদেশে বসবাস করবে? আমরা সেই মৌমাছি, ছোট পাখি এবং পিপীলিকার মতো শুধু কাজ করে চলছি। আমার ভাবনা—পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহভরা কোলে তব মা গো, বলো কবে শীতল হবো —কতদূর আর কতদূর, বলো মা? আমি এবার এমন একটি গণঅভ্যুত্থান দেখতে চাই যেখানে আমরা সব কাজের লোক এক হয়ে বহির্বিশ্বকে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারি। আমরা ১৮ কোটি কাজের লোক এবার জনগণ হতে চাই। আমরা নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে চাই নিজেদের মনোনীত প্রার্থীকে যে বা যারা জনগণের প্রতিনিধি হয়ে জাতীয় সংসদে বসে, বেগমপাড়া, আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া বা অস্ট্রেলিয়া না গড়ে, নিজ দেশ গড়ার কাজে সময় ব্যয় করবে। লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন থেকে, [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App