×

মুক্তচিন্তা

অশান্ত পার্বত্যাঞ্চল এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩, ১২:২৭ পিএম

অশান্ত পার্বত্যাঞ্চল এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা
অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত আমাদের পার্বত্যাঞ্চল। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা নিয়ে গঠিত এই পার্বত্যাঞ্চল চিটাগং হিল ট্র্যাক (সিএইচটি) নামে পরিচিত। এই পার্বত্যাঞ্চলে ৩০টিরও অধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এই নৃগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রধানতম হচ্ছে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা এবং বম জনগোষ্ঠী। সমতল থেকে ভিন্ন প্রকৃতির এই অঞ্চলটির জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবনধারাও অনেকটাই ভিন্নতর। যত দূর জানা যায়, এদের আদিপুরুষদের অনেকেই ১২-১৬ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মঙ্গোলিয়া থেকে এসে এ পাহাড়ি জনপদে বসবাস শুরু করে। সমতলে বাঙালিদের কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্য থাকলেও পাহাড়ে তাদের বসবাস সে অর্থে প্রাচীন নয়। তবে বাঙালি ও পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীগুলো যুগের পর যুগ ধরে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছে এই পার্বত্যাঞ্চলে। তা সত্ত্বেও পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীগুলোর উগ্র জাতীয়তাবাদী অংশ বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সহাবস্থানকে মেনে নিতে পারেনি। ক্ষেত্রবিশেষে জাতিগত বিরোধকে উসকে দিয়ে নিজেদের অবস্থানকে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মাঝে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। এদের কেউ কেউ পাহাড়ের এই সংঘাতের কারণ হিসেবে বাঙালিদের ক্রমবর্ধমান বসতি স্থাপনকে দায়ী করলেও একটি বড় অংশ আবার ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নেয়া হাইড্রো-ইলেক্ট্রিক ড্যাম নির্মাণের ফলে পাহাড়িদের বাস্তুচ্যুতির কারণকে চিহ্নিত করেন। তবে ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, মোগলদের শাসন অবসানের পর থেকে বিগত প্রায় তিনশ বছরে বিভিন্ন সময় এই জনগোষ্ঠীর কোনো কোনো অংশ যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ চাকমা এবং ত্রিপুরারা কোনো না কোনোভাবে পাহাড়িদের অধিকারের নামে সশস্ত্র পন্থা বেছে নিয়েছিল। এক্ষেত্রে চাকমা নেতা শের দৌলত খাঁন, জান বকস খাঁন, রামু খাঁন, জব্বার খাঁনের নাম প্রণিধানযোগ্য। অবশ্য তাদের নামের মুসলিম-বাঙালিয়ানা ভাব দেখে বোঝারই উপায় নেই যে, তারা ছিলেন চাকমা সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রধান। অতএব অনেকেই যারা মনে করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা উত্তরকালে এই জনগোষ্ঠী তাদের স্বাধিকারের দাবিতে সংঘটিত হয়েছে এবং প্রথম সশস্ত্র পন্থা অবলম্বন করেছে, তারা আসলে অসম্পূর্ণ তথ্যের আলোকে কথা বলেন। এ কথা সত্য যে, ১৯৭২ সালে চাকমা নৃগোষ্ঠীর নেতা মানবেন্দ্রনাথ লার্মা (এমএন লার্মা) পাহাড়িদের স্বাধিকারের দাবিতে রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। গঠন করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। পাহাড়িদের অন্তর্দ্বন্দ্বে এমএন লার্মার মৃত্যুর আগেই ৭০-এর দশকের মাঝামাঝিতে তার ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) জনসংহতি সমিতির সামরিক শাখা শান্তিবাহিনী নামক সশস্ত্র বাহিনী গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অখণ্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করে বসে। পরবর্তী দুই দশকব্যাপী অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পূর্ব পর্যন্ত পাহাড় ছিল অতিমাত্রায় অস্থিতিশীল। বিশেষ করে, আশি থেকে নব্বই দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র কর্মকাণ্ড পাহাড়ি বাঙালি তো বটেই, এমনকি চাকমা ভিন্ন অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভেতরেও দারুণ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সমতল থেকে পাহাড়ে বসতি স্থাপনকে দারুণভাবে উৎসাহিত করে সামরিক সরকারগুলো। এটি ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারও করেছে। তবে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব অনুধাবন করেছিলেন, দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। তারই আলোকে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং পাহাড়ি গোষ্ঠীরা অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার অঙ্গীকার করে। তবে রাজনৈতিক সরকারের আসা যাওয়ার কারণে শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ভূমির মালিকানার মতো জটিল ইস্যু পরিস্থিতিকে ক্রমেই জটিলতর করে তুলে। আবারো নতুন করে সংঘটিত হতে থাকে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এবার এদের সশস্ত্র কার্যক্রমে ভিন্নতা আসে। সশস্ত্র তৎপরতার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। অনলাইনভিত্তিক প্রচারণাকারীদের সিংহভাগই বাংলাদেশের বাহিরে বিশেষত ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা বা কাজ করতে যাওয়া এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরই অংশ। এদের অনেক সাইটে আদিবাসী অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবি করে কাল্পনিক তথ্য সমৃদ্ধ সংবাদ এবং ছবি শেয়ার করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে বৈশ্বিক সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা হিসেবে। আমারা দেখেছি, ভারতের পাঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলনে জনগণের সাড়া না থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা যুক্তরাজ্যে খালিস্তানবাদীদের ডোনেশন সংগ্রহ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কার্যক্রম তুঙ্গে। অতীতেও আমরা দেখেছি যে, শ্রীলঙ্কাতে এলটিটির কার্যক্রমে শ্রীলঙ্কার তামিল জনগোষ্ঠী যত না সম্পৃক্ত, তার চেয়েও বেশি তামিল জাতীয়তাবাদী আবেগ নিয়ে রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের অন্যান্য স্থানে বসবাসকারী তামিলরা। বাংলাদেশের পাহাড়ি জনপদ নিয়ে নৃগোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা অনেকটাই উল্লেখিত খালিস্তানবাদী বা তামিলদের মতো; বহির্বিশ্ব থেকে পরিচালিত পাহাড়ি উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রপাগান্ডা। মোটাদাগে প্রপাগান্ডার বিষয়বস্তু হলো পাহাড়ি জনগণের জীবন, জীবিকা, সংস্কৃতি ভুলূণ্ঠিত হয়ে পড়েছে। আর প্রপাগান্ডার লক্ষ্যবস্তু বাংলাদেশের সরকার, পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী বিশেষত সেনাবাহিনী, পাহাড়ি বাঙালি জনগোষ্ঠী, স্থানীয় রাজনৈতিক এবং উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। এ কথা সত্য আজ থেকে দুই দশক আগেও পাহাড়ে উন্নয়নের ছোঁয়া সেভাবে লাগেনি। কিন্তু বিগত দেড় দশকে বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের পর, ২০০৯-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গঠনের পর যোগাযোগ অবকাঠামো, কৃষি, বনায়ন, বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সুবিধা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পর্যটন বিকাশ ও উন্নয়নে সরকার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রমে পাহাড়ের অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনে নতুন ছোঁয়া লেগেছে। সমতলে উৎপাদিত পণ্য যেমন পাহাড়ে যাচ্ছে, পাহাড়ে উৎপাদিত পণ্য অবাধে সমতলে আসছে। এই কাজটিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষির আধুনিকায়ন, বনায়ন বা বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন- সব ক্ষেত্রেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে একরকম জিম্মি করে চাঁদাবাজি করে আসছে। স্বভাবিকভাবেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, আইনশৃঙ্খলাসহ সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজন দেখা গেছে। যদিও শান্তিচুক্তির আওতায় সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনার একটি বড় অংশ গুটিয়ে ফেলানো হয়েছিল, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায়, বিশেষ করে ২০১৪ সালে নতুন করে শুরু হয়ে বর্তমানে চলমান নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র গ্রুপগুলোর তৎপরতায় আবারো শান্তি রক্ষার্থে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম জোরদার করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি শুধু পাহাড়ে স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্যই নয়, বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্যেও জরুরি। সম্প্রতি মূলধারার গণমাধ্যমে বেশ বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে সমতলের ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগের চাঞ্চল্যকর খবর। এটি কোনো আদর্শিক সহযোগিতার বিষয় নয়। বরং পাহাড়সহ সমতলে দেশকে অস্থিতিশীল করার বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ। বাংলা ভাইয়ের জামানায়, ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মডারেট মুসলিম দেশের ইমেজ দারুণভাবে ক্ষুণ্ন হয়। ওয়ান ইলেভেন-পরবর্তী সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯-এ পুনরায় সরকার গঠন করেই ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গিদের সশস্ত্র কার্যক্রমকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে দমন করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে এদের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে কয়েক বছরে বৈশ্বিক রাজনীতিতে জঙ্গিবাদের ইস্যু কিছুটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায় তার কিছুটা ঢেউ এসে লেগেছে আমাদের দেশেও। র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে আর আগের মতো ধার নেই। এর অনেক কারণের সবচেয়ে বড় কারণ পশ্চিমা দুনিয়া এবং তাদের এ দেশীয় ঠিকাদারদের র‌্যাবের বিষয়ে অত্যন্ত সরব হওয়া। কিন্তু ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো গোপনে সময়ের সৎ ব্যবহারে ব্যস্ত। গণমাধ্যমে বিস্তারিত এসেছে কীভাবে সমতলের ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো বিগত কয়েক বছর ধরে দুর্গম পাহাড়ের গহিন অংশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। আর ভাড়াটে প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছে, পাহাড়ে বর্তমানের সবচেয়ে ক্রিয়াশীল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি। কেএনএফ দুটি উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এই সমতল থেকে যাওয়া জঙ্গিগোষ্ঠীদের। প্রথমত, এর বিনিময়ে তারা অর্থ পাচ্ছে যা দিন শেষে কেএনএফের সশস্ত্র তৎপরতার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র, গোলাবারুদসহ অন্যান্য লজিস্টিকস ক্রয়ে তাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক ধর্মীয় জঙ্গিদের আর্থিক কানেকশন বন্ধ না হলে কেএনএফের সক্ষমতা বাড়তে থাকবে। আবশ্য কেএনএফের সক্ষমতা বাড়ার আরো ভূরাজনৈতিক কারণও রয়েছে। তার প্রমাণ গত বছরের শেষার্ধ থেকে অতি সম্প্রতিক সময় পর্যন্ত কেএনএফ/কেএনএ যে ধরনের অত্যাধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বরত টিমের ওপর দূর থেকে আচমকা আক্রমণ পরিচালনা করে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আগে কখনো দেখা যায়নি। দ্বিতীয় শঙ্কার কারণটি হলো আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনীর সীমিত উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেএনএফ যদি সমতল থেকে আগত ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রাখতে পারে, প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি কার্যক্রম জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে ব্যস্ত রাখবে। এই সুযোগে পাহাড়ি সশস্ত্রগোষ্ঠী কেএনএফ তাদের প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে বাংলাদেশ-ভারত ও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে তথাকথিত স্বাধীন জুমল্যান্ড প্রতিষ্ঠার বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম জোরালো করার সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং অখণ্ডতার প্রশ্ন যেখানে জড়িত, সেখানে জনগণ, রাজনীতিবিদ, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র কার্যক্রমসহ পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীর অধিকারের বিষয়ে মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত। দুঃখজনক হলেও সত্য কোনো কোনো মহল সার্বিক বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে, শুধু সাধারণ পাহাড়িদের অধিকারের প্রতি মানবীয় আবেগের বশে অথবা শুধু পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সমর্থকদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়ে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে, যা নেহাতই অনভিপ্রেত। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকারের দাবিকে সমর্থন করে বিভিন্ন সংগঠনের নামে যে বিভাগীয় সমাবেশ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বা টকশোতে এ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যেভাবে আসছে, তাতে সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোই অনুপ্রাণিত হবে, যা প্রকারান্তরে হুমকির মুখে ফেলবে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে। অতএব সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। প্রফেসর ড. মোস্তফা সারোয়ার: নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App