×

তথ্যপ্রযুক্তি

ওটিটি প্লাটফর্মে স্বাধীনতা চান খাত সংশ্লিষ্টরা

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ পিএম

ওটিটি প্লাটফর্মে স্বাধীনতা চান খাত সংশ্লিষ্টরা

ওটিটি প্লাটফর্মে স্বাধীনতা চান খাত সংশ্লিষ্টরা

শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটি সংলগ্ন হোটেল রয়েল-ইন এর দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ওটিটি/ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে লাইভ টেলিভিশন দেখতে চাওয়া গ্রাহকের অধিকার শীর্ষক একমত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সচিব ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, আমরা পরাধীনতার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি, সেই সাথে মুক্তি পেয়েছি অর্থনৈতিকভাবে। বর্তমানে ইন্টারনেট আমাদের মৌলিক অধিকার। তাই ইন্টারনেটে লাইভ টেলিভিশন দেখতে চাওয়া বা ওটিটি প্লাটফর্মে লাইভ টিভি দেখতে চাওয়া গ্রাহকের অধিকার। এখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা সমীচীন নয়। তিনি আরো বলেন ওটিটিতে লাইভ টিভি বন্ধ করা পারস্পরিক সাংঘর্ষিক বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। সরকারের এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে অবশ্যই ইন্টারনেটে স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সরকার এবং সকল পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। 

আই এস পি এ বি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, অন্যান্য দেশে আগে পলিসি তৈরি হয় তারপর গ্রাহক তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের দেশে হয় উল্টোটা। এখানে গ্রাহক আগে তৈরি হয় তারপরে সমস্যা তৈরি হয় লাইসেন্সধারীদের মাঝে পরবর্তীতে পলিসি তৈরি হয়। এখানে হয়তো দেশের ভিতরে পরিচালনাকারী অপারেটরদের প্লাটফর্মে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে কিন্তু নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনের মত প্লাটফর্ম কি আপনি বন্ধ করতে পারবেন? 

কেবল ব্যবসায়ীদের ৭০ ভাগ অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তাদের ইন্টারনেট ব্যবসা করার আইনগত অধিকার নেই অথচ তারা করছে। আমরা তাদের বাধা দিচ্ছে না কিন্তু তারা আমাদের ইন্টারনেট ব্যবসার মধ্যে হস্তক্ষেপ করছে যা মোটেও কাম্য নয়। পৃথিবীর কোন দেশেই ইন্টারনেট আর কেবল ব্যবসা আলাদা করা নাই এই সিস্টেম একমাত্র বাংলাদেশে আর এসব কারণেই অতিরিক্ত তারের জঞ্জাল। ওটি টি  প্লাটফর্মে লাইভ টিভি বন্ধ করা উচিত হয়নি। খুব দ্রুত তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিটিআরসি এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সমস্যার সমাধান করা না হলে দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে টাকা চলে যাবে। ইন্টারনেটে এক্সেস বন্ধ করে দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। 

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক জনাব মোঃ খালিদ আবু নাসের ছোট্ট একটি তথ্য তুলে ধরে বলেন ২০১৯ সালে বিশ্বে অতিথি ব্যবসা ছিল ১২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৭ সালে বিশ্বব্যাপী এই বাজার দাঁড়াবে প্রায় ১হাজার ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে ২০৩০ সালে নাগাদ ১ হাজার কোটি টাকার বাজার দাঁড়াবে। তাই খুব দ্রুততার সাথেই এই সেক্টরে প্রতিবন্ধকতা দূর করে সম্ভাবনা নিয়ে ভাবা জরুরী। তিনি বলেন আইনবিধি ছাড়া এভাবে প্লাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া বাজার প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর ২৭ ধারা পরিপন্থী। 

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, বিশ্বে ইতিমধ্যে ৪২ টি দেশে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালের ৩ জুন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এর ইন্টারনেটের গুরুত্ব বিষয়ক প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই দেশগুলি ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন বা আইটিইউ এর সনাতন অনুসারে বর্তমানে ইন্টারনেটকে মৌলিক মানবাধিকার বলা হয়েছে। 

বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের ক্ষমতা আসার পর এমনকি তাদের নির্বাচন ইশতেহারে ভিশন টুয়েন্টি টোয়েন্টি ওয়ান এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এবার ক্ষমতায় এসে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশকে নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যেখানে সরকার ঘরে ঘরে শতভাগ মানুষের কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে সে সময় তিন কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কে ওটি টি প্লাটফর্মে লাইভ টিভি দেখতে না দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। 

বিনোদনের অন্যতম উৎস হচ্ছে ইন্টারনেট। এখন আর ডিস কেবলের মাধ্যমে টেলিভিশন গ্রাহক দেখতে চায় না। যেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহার করে সকল কিছু পরিচালনা করা যায় তাই দুটি সেবা ক্রয় করতে গ্রাহক আগ্রহী নয়। যেখানে ফেসবুকে সরকারের লাইসেন্সই না হয়েও আমাদের বিশাল রেভিনিউ নিয়ে যাচ্ছে সেখানে আমাদের বৈধ লাইসেন্সধারীকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে লাইভ টিভি দেখাতে না দেওয়া খুবই দুঃখজনক। আমরা সরকারের কাছে সমস্যা দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিলা রহমান বলেন আমি ট্রফির একজন গ্রাহক আমি টাকা দিয়ে প্রিমিয়াম কিনে কেন দেখতে পাবো না? 

তুমি মনে করেন এটি এক ধরনের দেওয়ানি অপরাধ। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট সাহিদা বেগম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App