×

তথ্যপ্রযুক্তি

বেসিস এজিএম স্থগিত: উড়ো চিঠিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১১:৩২ পিএম

বেসিস এজিএম স্থগিত: উড়ো চিঠিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ

বেসিস লোগো। ছবি: ভোরের কাগজ গ্রাফিক্স টিম

আগামী ১৬ মার্চ শনিবার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বেসিসের এজিএম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫.৪৬ মিনিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এজিএম স্থগিত করতে আদেশ দেয়া হয়। বেসিস সদস্য নয় এমন এক ব্যক্তির উড়ো চিঠিতে কোনো শুনানি ছাড়াই এজিএম স্থগিত করার বিষয়টি অনেকেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। 

চিঠিতে বলা হয়, গত ১০ মার্চ ডাকাতিয়ার প্রোপাইটর মো. ফাইকুজ্জামানের আবেদনের প্রেক্ষিতে বেসিসের আগামী ১৬ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিতব্য এজিএম স্থগিত করতে বলা হলো। একইসঙ্গে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অডিট কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করে এজিএম করার নির্দেশনা দেয়া হয়। 

বেসিস ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে ডাকাতিয়া নামে একটি সদস্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এসএম শাহ রাইহান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রোপাইটার হিসেবে দাবীদার মো. ফাইকুজ্জামানের কোনো তথ্য নেই। রাইহানের ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলেও কেউ কল রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি, যা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা বিস্মিত হয়েছি। সুনির্দিষ্ট কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে এজিএম স্থগিত করতে বলা হয়েছে সেটার বিস্তারিত আমরা জানি না। সাধারণত ডিটিওর কাছে খুব সাধারণ বিষয় নিয়ে অভিযোগ করলেও সেটার শুনানি করা হয়। কিন্তু এখানে কোনো শুনানি ছাড়াই এক তরফা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

বেসিসের দুই হাজারের অধিক সাধারণ সদস্যরা এজিএম-এর জন্য অপেক্ষায় আছে। একজন সদস্যের আবেদনের উপর ভিত্তি করে এমন চিঠি বেসিসের মত সুনামধন্য সংগঠনের জন্য অত্যন্ত দু:খজনক। 

ডাকাতিয়া নামের যে প্রতিষ্ঠানটি থেকে এই অভিযোগ করা হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান বেসিসের সদস্য। কিন্তু মো. ফাইকুজ্জামান নামে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন বেসিস ডাটাবেজে তার কোনো তথ্য নেই। ফলে এমন একজন ব্যক্তির আবেদনের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। 

রাসেল বলেন, রোজার দিনে বৃহস্পতিবার অফিস টাইমের বাইরে ৫.৪৬ মিনিটে এজিএম স্থগিত করতে ইমেইল করা হয়েছে। পরদিন শুক্রবার। তার একদিন পর শনিবারে এজিএম বন্ধ করবো কীভাবে? আমাদের অফিস টাইমের পর চিঠি পাঠিয়েছে। আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি। আমরাও আশা করি ডিটিও আমাদের রিপ্লাই দিয়ে সহযোগিতা করবে শনিবারের আগেই। তাদের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিটিও) ড. জিন্নাত রেহানা ভোরের কাগজকে বলেন, আমি অভিযোগের ভিত্তিতে অর্ডার দিয়েছি। মানতে পারলে মানেন, না মানলে নাই। আমার এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকলেও আমার ঊর্ধ্বতন সচিব মহোদয়ের নজরে দিয়েই চিঠি পাঠিয়েছি। 

শুনানি করে এরপর চিঠি ইস্যু করা যেত কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শুনানি করার জন্য কি সময় আছে বলেন? একদিন পরেই এজিএম। আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে সেটা দেখেই এই আদেশ দিয়েছি। দরখাস্তের ভিত্তিতে আমি আদেশ দিতে পারি। সেটা তারা খণ্ডন করুক। এজিএম তো বছরে একদিন হয়। একটি অভিযোগ এসেছে সেই অভিযোগ তারা খণ্ডন করে কয়েকটা দিন পর এজিএম করুক। 

যিনি এজিএম বন্ধের আবেদন করেছেন তিনি বেসিস সদস্য না। অভিযোগকারী সঠিক কিনা সে বিষয়ে খোঁজ না নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সঠিক হয়েছে কিনা? উত্তরে বলেন, কে অভিযোগ করেছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, কাজটি হয়েছে কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি না হয়ে থাকে তাহলে তারা দেখে ব্যাখ্যা দিক। এরপর এজিএম করবে। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App