×

তথ্যপ্রযুক্তি

সাইবার সচেতনতায় ১০ পরামর্শ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ০৫:২০ পিএম

সাইবার সচেতনতায় ১০ পরামর্শ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের
নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার ও সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মুক্ত আলোচনার অনুষ্ঠান করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার শ্যামপুর আদর্শ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপদ ইন্টারনেট ও সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে লিফলেট প্রদান ও মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তারা ১০টি পরামর্শও দিয়েছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। উক্ত কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করছি এবং আমরা প্রযুক্তি যারা বেষ্টিত। এক্ষেত্রে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রলোভনে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আজকাল খাবার অর্ডার করা হোক বা জামা কাপড় কেনা, সবকিছু মাত্র এক ক্লিকের কাজ। প্রয়োজনীয় বিষয়ের বাইরে যেমন অপ্রয়োজনীয় ফেসবুকিং, ব্রাউজিং, গেমিং, গ্যাম্বলিং এমনকি পর্নোগ্রাফি দেখাতে ইন্টারনেটের ব্যবহারকে অপব্যবহার বলা হয়। অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কাজ করা হয় যা ব্যক্তির মন ও শরীর নিতে পারেনা সেটাকেই অপব্যবহার বলা হয়। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় অপব্যবহারকারি শিশু-কিশোর, তরুণ, যুবক, পূর্ণবয়স্ক, মধ্যবয়স্ক এমনকি বয়োবৃদ্ধ এক কথায় সবাই অপব্যবহারের শিকার। তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা বন্ধু সিলেকশন, অ্যাফেয়ার রিলেশন, চ্যাটিং, গেমিং, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অপব্যবহার বেশি করছে। টিকটক ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই কম বয়সী শিক্ষার্থী। লাইকি ও টিকটক এর জন্য খুব সামান্য সেটআপ ও দক্ষতা দরকার হয় বলে স্বল্পশিক্ষিত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরাও খুব সহজেই সাইবার বিনোদন জগতে প্রবেশ করছে। শুধু একটি স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হয়। এছাড়া এখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে তেমন কোন কিছুরই দরকার হয় না। টিকটক এর রিপোর্টিং সিস্টেমে অশ্লীল বিষয়ে বা আলাদা করে দেখানো হয় না বলে যে যা খুশি আপলোড করতে পারছে। ইন্টারনেট আসক্ত তারা তাদের পড়াশোনার কাজ গুছিয়ে উঠতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বিধি কাজ করার কথা না থাকলেও ইন্টারনেট আসক্তির কারণে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষাকে বেশ ভয় পায় এবং বিষয়টি নিয়ে তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন থাকছে। যে কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাকীত্ব বাড়ছে, যা পড়াশোনাকে আরও বেশি কঠিন করে তুলছে বলে মন্তব্য করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। উক্ত আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের দপ্তর ও তথ্য সম্পাদক শেখ ফরিদ, শাজাহান, জুয়েল, জাকির হোসেন, মো. বাবুল মিয়া প্রমুখ। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের করণীয় কি? ১. ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্যারেন্টাল গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে সংযোগ প্রদানের সময় অবশ্যই প্যারেন্টাল গাইডলাইন অনুসরণ করতে বাধ্য করুন বা অনুরোধ করুন। ২. ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইন প্লাটফর্মে শেয়ার না করা। মোবাইলে ব্যক্তিগত কিছু স্টোর করে না রাখা উত্তম। যে অংশগুলো একদম ব্যক্তিগত সেগুলো হার্ডডিস্ক থেকে সরিয়ে নেওয়া ভালো। যেকোনো সময় মোবাইলটি হারিয়ে যেতে পারে তখন স্টোরে থাকা ডাটাগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ৩. স্মার্টফোনে অচেনা অ্যাপস, ই-মেইল বার্তা, ক্লিক না করে এড়িয়ে যাওয়া উত্তম। ৪. ফেসবুকে বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে সচেতন হোন। ৫. ফেসবুক, নেট, ই-মেইল ব্যবহার করার পর লগ আউট করুন। ৬. অর্থ সংক্রান্ত লেনদেন বিষয়ে সতর্ক হওয়া বা কোন প্রলোভনে পা না দেওয়া, এক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত পাসওয়ার্ড কারো সাথে শেয়ার করবেন না। কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ফোন দিয়ে চাইলেও আপনি তা দিবেন না। ৭. সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতন হোন। দেশের প্রচলিত আইন অর্থাৎ ডিজিটাল নিরাপত্তা বা সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক আইন সম্পর্কে অবগত হন। ৮. হয়রানির শিকার হলে ৯৯৯ অথবা পুলিশের ফেসবুক পেজে নক করলেও সহায়তা পাবেন। ৯. ফেসবুকে ফ্রেন্ড লিস্টে আপনার সন্তানের সাথে যুক্ত থাকুন। ১০. আপনার সন্তানের সামনে অপ্রয়োজনে চ্যাটিং বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার না করাটা উত্তম। সচেতনতা: ছোটবেলা থেকেই ডিজিটাল স্বাক্ষরতা এবং প্রযুক্তির নৈতিক ব্যবহার প্রচার করুন। দায়িত্বশীল অনলাইন আচরণ, গোপনীয়তা সুরক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে ধারণা নিজে রাখুন এবং অন্যকে জানান। জনপ্রিয় কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই বাংলাদেশের নিবন্ধিত নয়। অতএব ব্যবহার এবং অত্যধিক ব্যবহারের মধ্যে একটি পাতলা রেখা রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের তাদের সীমানা আঁকতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা: শিক্ষার্থীদের জ্ঞানী ও ক্ষমতার উন্নতির জন্য একাডেমিক সেশনে গ্রুপ ওয়ার্ক, উপস্থাপনা, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অভিভাবকের করণীয়: চার থেকে পাঁচ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ২০ থেকে ২২ বছরের অধিকাংশ ছেলে-মেয়ে প্রযুক্তিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই অভিভাবকদের সন্তানের এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে আমলে নিতে হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপের বিপদ সম্পর্কে অভিভাবক ও কিশোর কিশোরী, তরুণ তরুণীদের সচেতন করে তুলতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App