×

খেলা

উত্তেজনার ম্যাচে শান্তর ব্যাটে ভর করে জিতলো বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৪, ১০:২৮ পিএম

উত্তেজনার ম্যাচে শান্তর ব্যাটে ভর করে জিতলো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ব্যাট হাতে সফরকারী শ্রীলঙ্কা বেশ দুর্দান্ত শুরু করলেও তাসকিন আহমেদ এবং তানজিম সাকিবের তোপে বড় সংগ্রহের দিকে যেতে পারেনি সফরকারীরা। কিন্তু ২৫৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা খুব বাজে হয় ।

তবে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ওভার শেষের অনেক আগেই জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।

বুধবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের দেয়া ২৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩২ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।

ব্যাট হাতে দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন শান্ত। চাপের মুখে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। ১২৯ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১২২ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। অভিজ্ঞ মুশকির রহিমও নট আউট ছিলেন। ৯১ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮২ রান করেছেন তিনি। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে  বুধবার সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পথে বাউন্ডারি হাঁকান টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত - ইন্টারনেট

চট্টগ্রামের বাউন্সি উইকেটে এই লক্ষ্যটা খুব একটা কঠিন হওয়ার কথা ছিলো না বাংলাদেশের জন্য। তবে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে নিজেদের কাজটা কঠিন করে ফেলে টাইগাররা। ৫ ওভার ১ বলে দলীয় ২৩ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই লিটনের উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। দিলশান মাদুশঙ্কার করা প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন এই ওপেনার। লিটনের পর দ্রুত সময়ের ব্যবধানে ফেরেন সৌম্য সরকার। ৯ বলে ৩ রান করে আউট হয়েছেন তিনি।  

দুর্দান্ত বিপিএল কাটিয়ে আসা তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে বিপর্যয় প্রতিরোধের চেষ্টা করেন অধিনায়ক শান্ত। তবে হৃদয়ও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দলীয় ২৩ রানে প্রমোদ মাদুশানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।

দ্রুত উইকেট হারিয়ে যখন দিশেহারা দল, তখন উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেন দুজনেই। তবে সেই আক্রমণই শেষমেশ কাল হলো রিয়াদের।

লাহিরু কুমারার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন রিয়াদ। ৩৭ বলে ৩৭ রান করে তিনি ফিরলে আবারও খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে শান্ত-মুশফিকের জুটিতে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠে টাইগাররা।

চাপের মুখে আরো একবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন অভিজ্ঞ মুশফিক। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৯তম ফিফটি। ব্যাটিং করেছেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। শান্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। ১২২ রানের ইনিংসে প্রতিপক্ষকে একটি সুযোগও দেননি এই ব্যাটার। পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে গড়েছেন ১৬৫ রানের জুটি। আর এই জুটিতে ভর করে শেষমেশ জয়ের বন্দরে পৌঁছে বাংলাদেশ। 

এর আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা ও আভিস্কা ফার্নান্ডো মাত্র ১০ ওভারেই ৭১ রান তুলে ফেলেন। দশম ওভারের পঞ্চম বলে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। ৩৩ বলে ৩৩ রান করা আভিস্কাকে সাজঘরে পাঠান তিনি। 

দ্বিতীয় আঘাতটাও হানেন তানজিম সাকিবই। ১২ তম ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই শিকার করেন ভয়ঙ্কর নিশাঙ্কাকে। তানজিমের শট বলে পুল করেছিলেন নিশাঙ্কা। তবে শট খেলে ফেলেন বেশ আগেই। ব্যাটের একদম নিচের কানায় লেগে ক্যাচ চলে যায় সৌম্যর কাছে। ২৮ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রান করেন তিনি। 

ত্রাস হয়ে ওঠা সাকিব নিজের করা পরের ওভারে ফেরান সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও। এরপর আসালাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস সতর্ক ব্যাটিংয়ে ধীরলয়ে আগাচ্ছিলেন। দুজনের জুটিতে ৪৪ রান আসে। আসালঙ্কাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৭ বলে ১৮ রান করেন আসালঙ্কা।

টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজেও রানের মধ্যে আছেন কুশল মেন্ডিস। ৩৩তম ওভারে ৬৭ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন লঙ্কান অধিনায়ক। তাকে ফেরান তাসকিন। ৭৫ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫৯ রান করে বিদায় নেন কুশল মেন্ডিস।

অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন জানিথ লিয়ানাগেওত। ৬৯ বলে ৩ চার ২ ছয়ে ৬৭ রান করে শরিফুলের বলে আউট হন তিনি। শেষ দুই ব্যাটার হিসেবে প্রমোদ মাদুশান ও দিলশান মাদুশাঙ্কার উইকেটও নেন শরিফুল।

তানজিম সাকিব ৮.৪ ওভারে ৪৪ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন। ১০ ওভারে ৬০ রান ও ৯.৫ ওভারে ৫১ রান দিয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন তাসকিন ও শরিফুলও। বাকি উইকেটটি মেহেদী মিরাজের দখলে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App