×

খেলা

ফুটবল বিশ্বের নজর আজ লিসবনে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২০, ১০:০৩ এএম

ফুটবল বিশ্বের নজর আজ লিসবনে

ফুরফুরে মেজাজে পিএসজির খেলোয়াড়রা।

ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতার লড়াইয়ে আজ রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে পিএসজি ও বায়ার্ন মিউনিখ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে পর্তুগালের লিসবন শহরের স্তাদিও দ্য লুজ স্টেডিয়ামে। অন্যবারের চেয়ে এই মৌসুমের ফাইনালটা আলাদা। কারণ এবারই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিততে মাঠে নামছে পিএসজি।

ফরাসি ক্লাবের হয়ে মাঠ মাতাতে যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার ও ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী সদস্য কাইলান এমবাপ্পে। আর তাই আজকে ফুটবল বিশ্বের নজর থাকবে লিসবনের দিকে। ম্যাচটি শুরু হবে রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়, সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি টেন টু । পিএসজি ও বায়ার্ন মিউনিখ এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মোট ৮ বার মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে ৫টি ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে পিএসজি। আর বাকি ৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। তারা সর্বশেষ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৭ সালে। তারা যে ৮টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে সেই ৮টি ম্যাচই ছিল গ্রুপ পর্বের। ফলে দুই দলই এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ও নক আউট পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।

বায়ার্ন মিউনিখ শক্তিশালী দল। তাদের স্কোয়াডে লেভানদোস্কি, মুলার ও কিমিচের মতো দারুণ সব ফুটবলার আছে। তারপরও ফাইনালের ফেবারিট হিসেবে পিএসজিকেই এগিয়ে রাখছেন টটেনহ্যামের অভিজ্ঞ কোচ হোসে মরিনহো। নেইমার-এমবাপ্পের মতো তারকারা এমন মঞ্চে পারফর্ম করবে বলেই বিশ্বাস তার। ইউরোপীয় গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের মতামত জানিয়েছেন ‘স্পেশাল ওয়ান’ খ্যাত এই কোচ।

সেমিফাইনালে লাইপজিগকে হারিয়ে আরাধ্যের ফাইনালে ওঠার পরও অবশ্য শিরোপা নির্ধারণীতে নেইমারের খেলা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা ছিল। সেদিন ম্যাচশেষে জার্মান ক্লাবটির মার্সেল হাস্টেনবার্গের সঙ্গে জার্সি অদল-বদল করেছিলেন তিনি, যা করোনা মহামারির মধ্যে উয়েফার ‘রিটার্ন টু প্লে’ প্রটোকলের পরিপন্থি। জার্সি বদলের শাস্তি সুস্পষ্ট করা না থাকলেও প্রটোকল ভাঙলে উয়েফার ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন প্রয়োগ করা যাবে বলা হয়েছিল। সে অনুসারে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা বা দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনের সাজা হতে পারত নেইমারের। যার অর্থ, ফাইনাল খেলতে পারতেন না তিনি। তবে ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, নেইমারের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উয়েফা। নেইমার তাই পিএসজি ইতিহাসের একজন হয়ে ওঠার এবং নিজেকে নতুন উচ্চতায় তুলে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বায়ার্নের বিপক্ষে।

পিএসজি ফাইনালে পৌছে জার্মান ক্লাব আরবি লাইপজিগকে ৩-০ গোলে হারানোর মাধ্যমে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে তারা ফাইনালে উঠে ৪১ তম দল হিসেবে । চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাচ্ছে পিএসজির আগে যে ছয় দল প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল তাদের সবার রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। আর তাই পিএসজি যদি শিরোপা জয় করতে পারে তাহলে ১৯৯৭ সালের পর প্রথম দল হিসেবে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে শিরোপা জয়ের রেকর্ড করতে পারবে। পিএসজি যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে তাহলে তাদের পক্ষে শিরোপা জয় খুব বেশি কঠিন হবে না।

পিএসজি এবারই প্রথমবারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করলেও বায়ার্ন মিউনিখ এবারসহ মোট ১১ বার ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। গত ১০ বার তারা যে ফাইনাল খেলেছে এরমধ্যে ৫ বার শিরোপা জয় করেছে। আর বাকি ৫ বার রানার্সআপ হিসেবে সন্তুষ্ট থেকেছে। তারা তাদের পঞ্চম শিরোপাটা জয় করেছিল সেই ২০১৩ সালে। এই ৭ বছরের মধ্যে শিরোপা তো জয় করতে পারেইনি। এমনকি ফাইনালেও উঠতে পারেনি তারা। আর তাই তো শিরোপা জয়ের জন্য তারাও বেশ ক্ষুধার্ত।

আজকের ম্যাচটিতে বায়ার্ন শিরোপা জয়ের জন্য ভরসা করবে রবার্ট লেভানদোস্কি ও সার্জে নাবরির উপর। কারণ বায়ার্নের এবার ফাইনালে পৌছার ক্ষেত্রে তারাই সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে। লেভানদোস্কি এখন পর্যন্ত ৯টি ম্যাচ খেলে ১৫টি গোল করেছেন। অপরদিকে সার্জে নাবরি ৯টি ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৯টি। এখন পর্যন্ত ১৫টি গোল করায় লেভানদোস্কির সামনে নতুন করে ইতিহাস লেখার হাতছানি দিচ্ছে। তিনি যদি ফাইনাল ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিক করতে পারেন তাহলে এই মৌসুমে তার গোলসংখ্যা দাঁড়াবে ১৮তে। আর এর মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর করা এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৭টি গোলের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলতে পারবেন তিনি।

লেভানদোস্কি ও নাবরির ২৪ গোলের জুটির সুবাদে এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৪২টি গোল করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এখন বায়ার্নের সবাই মিলে যদি দলের হয়ে ৪টি গোল করতে পারেন তাতে করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক মৌসুমে দলগত সর্বোচ্চ গোল করার নতুন রেকর্ড গড়তে পারবে তারা। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে বার্সেলোনা সবমিলিয়ে ৪৫টি গোল করেছিল।

বায়ার্ন ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে সহজে প্রতিপক্ষ দলকে গুড়িয়ে দিয়ে। তারা কোয়ার্টার ফাইনালে বাসের্লোনাকে ৮-২ গোলে হারিয়েছে। অপরদিকে পিএসজি এসেছে কিছুটা ভাগ্যের জোড়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ইতালিয়ান ক্লাব আটলান্টার বিপক্ষে ম্যাচের শেষ ৩ মিনিটে দুটি গোল করে সেমিতে আসে। তবে সেমিতে লাইপজিগকে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েই ফাইনালে পৌছে। এখন সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাই হোক। আজকের ফাইনালে যে ভালো করতে পারবে সেই লিসবন থেকে শিরোপা নিজেদের ঘরে নিয়ে যেতে পারবে। এখন দেখার বিষয় আজ শেষ হাসিটা কে হাসে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App