তুর্কি সুপার কাপের ৫০তম আসরের ফাইনালে উঠেছিল গ্যালাতাসারে ও ফেনেরবাচ। নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল সৌদি আরবে। কিন্তু দেশ দুটির ফুটবল কর্তৃপক্ষের মাঝে বেশকিছু বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে ম্যাচটি আর মাঠে গড়ায়নি।

যার নেপথ্য কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় সংগীত গাইতে না দেয়া এবং গা গরমের সময় কামাল আতাতুর্কের স্লোগানসংবলিত টি-শার্ট পরতে না দেয়ার কথা।

এর আগে, সৌদি সরকার ও তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশন ফাইনাল ম্যাচটি রিয়াদের আল-আউয়াল পার্ক স্টেডিয়ামে আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছিল। কিন্তু এদিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে যখন দুই দলের ফুটবলাররা গা গরমের অনুশীলন (ওয়ার্মআপ) শুরু করেন, বিপত্তি বাধে তখনই। আধুনিক তুরস্কের জনকখ্যাত মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের স্লোগান লেখা টি-শার্ট পরায় আপত্তি জানায় সৌদি কর্তৃপক্ষ। পরে ফুটবলাররা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। যদিও আয়োজক সৌদির দাবি– ক্লাব দুটি ম্যাচের নিয়মকানুন মানেনি।

তুর্কি ফুটবল ফেডারেশন পরবর্তীতে জানিয়েছে, ‘আমাদের তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের শততম বর্ষপূর্তি উদযাপনে টিএফএফ (তুর্কি ফুটবল ফেডারেশন) দেশের বাইরে ক্লাব ‍ফুটবলের ফাইনালের আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কিছু সমস্যার কারণে ২০২৩ সুপার কাপ স্থগিত করা হয়েছে। ক্লাব দুটির সঙ্গে আলোচনার পর খেলাটির নতুন তারিখ জানানো হবে।’ যদিও খেলা স্থগিতের সুনির্দিষ্ট কারণ ও পরবর্তীতে কখন আবার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে, তার সূচি ঘোষণা করেনি দেশটির ফেডারেশন।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার রাত বাংলাদেশ সময় ১১টা ৪৫ মিনিটে রিয়াদের আল-আউয়াল পার্ক স্টেডিয়ামে তুর্কি সুপার কাপ হওয়ার কথা ছিল। ২৫ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে প্রচুর দর্শকসমাগমও হয়েছিল। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ গ্যালাতাসারে ও ফেনেরবাচের চাওয়া পূরণ না করায় ক্লাব দুটি যৌথভাবে না খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু জাতীয় সংগীত গাইতে না দেয়া এবং কামাল আতাতুর্কের বিখ্যাত স্লোগান ‘ঘরে শান্তি থাকলে বাইরেও শান্তি’–সংবলিত টি-শার্ট পরতে বারণ করাই নয়, দর্শকদের তুরস্কের জাতীয় পতাকা নিয়েও স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

অন্যদিকে, আয়োজক কমিটির বিবৃতির বরাতে সৌদির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল বলছে, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ম অনুযায়ী যথাসময়ে ম্যাচ আয়োজনের অপেক্ষায় ছিলাম। নিয়মে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, মাঠে কোনো স্লোগান ব্যবহার করা যাবে না। ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকেও তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিশ্বজুড়ে আলোচিত সেই হত্যাকাণ্ডের দায় দেয়া হয় সৌদি যুবরাজ ও দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে। এরপর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে দেশ দুটির মধ্যে শীতল সম্পর্ক রয়েছে।