ভারত বিশ্বকাপে আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) ম্যাচের আগ পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে অবস্থানে ছিল বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৬০ রানের জয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ হারের পর জয়ের মুখ দেখলো তারা। এ জয়ে ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এক ধাপ এগিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৭ নম্বর অবস্থানে উঠল ইংলিশরা। জয়ের মূল ভূমিকায় ছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। গত আসরে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের প্রধান নায়ক ছিলেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কারণে এই বিশ্বকাপে তার খেলার কথা ছিলনা তার। কিন্তু অবসর ভেঙে বিশ্বকাপের ঠিক আগে ফিরে আসেন। ফেরার পর ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি আসরের প্রথম তিনটি ম্যাচ। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তার ফেরা নিশ্চিত হয়। ফেরার পর একটি চল্লিশ এবং একটি ষাটোর্ধ্বো রানের ইনিংস খেললেও ম্যাচ হারের কারণে আড়ালে চলে যায় তার পারফরম্যান্স। তবে আজকের ম্যাচে তার সেঞ্চুরির উপর ভর করেই প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ৩৩৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। এটি তার ওডিআই ক্যারিয়ারে ৫ম এবং এবারের বিশ^কাপে প্রথম সেঞ্চুরি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৭.২ ওভারে ১৭৯ রানেই গুটিয়ে যায় ডাচদের ইনিংস। ৮৪ বলে ১০৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সাবধানী ক্রিকেট খেলতে থাকে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা কাজে লাগেনি। ৫ম ওভারে দলীয় ১২ রানে ক্রিস ওকসের বলে মিড অনে মঈন আলির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ওপেনার ম্যাক্স ও দাউদ। তার ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। তার পরের ওভারেই কোন রান না পেয়ে ডেভিড উইলির বলে বাটলারের হাতে কট বিহাইন্ডের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন অ্যাকারম্যান। মাত্র ১৩ রানেই ২ উইকেটের পতনে চাপে পড়ে নেদারল্যান্ডস। সেখান থেকে দলকে ৫৫ রানের জুটি এনে দেন বারেসি এবং এঙ্গেলব্রেখট। দলীয় ৬৮ রানে রান আউটের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বারেসি। ২৩ তম ওভারে উইলির দ্বিতীয় শিকার হন এঙ্গেলব্রেখট। ৩৩ রান করে তিনি ওকসের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন। আদিল রশিদের বলে বোল্ড আউট হয়ে ১০ রান নিয়ে ফেরেন বাস ডি লিড। ৬ষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক স্কটের সাথে ৫৯ রানের জুটি করেন তেজা। দলীয় ১৬৩ রানে মঈন আলির বলে মালানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩৮ রান করে আউট হন স্কট। তারপরে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাকি ব্যাটাররা। ফলে ১৭৯ রানেই থামে ডাচদের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন আদিল রশিদ ও মঈন আলী। উইলি নেন দুটি উইকেট। অপর উইকেটটি নেন ক্রিস ওকস। ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডের হয়ে ভালো শুরু করেন দুই ইংলিশ ওপেনার ডেভিড মালান এবং জনি বেয়ারস্টো। ৬.৫ ওভারে তোলে ৪৮ রান তোলার পর আরিয়ান দত্তের বলে শর্ট ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার অঞ্চলে মিক্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেয়ারস্টো। তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। প্রথম পাওয়ারপ্লে শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭০ রান এক উইকেটের বিনিময়ে। দ্বিতীয় উইকেটে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকে জো রুট এবং ডেভিড মালান। ৮৫ রানের জুটি করার পর ২১ তম ওভারে ফন বিককে রিভারর্সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড আউট হন রুট। ৩৫ বলে ২৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তার ঠিক পরের ওভারের শেষ বলেই স্টোকসের সাথে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে রান আউট হন ডেভিড মালান। সেঞ্চুরির কাছাকাছি চলে গিয়েও সেঞ্চুরির দেখা মেলেনি তার। ৭৪ বলে ১০ চার এবং ২ ছয়ে ৮৭ রান করেন তিনি। ইনিংস বড় করতে পারেননি ব্রুক, বাটলার এবং মঈন। তাদের ব্যাট থেকে আসে মোট ২১ রান। ১৯২ রানে ৬ উইকেট পতনের পর তাদের বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা হুমকির মুখে পড়ে। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে নামা বেন স্টোকস লড়াই চালিয়ে যান ক্রিস ওকসকে নিয়ে। ৪৮ তম ওভারে মিক্রিনকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের ৫ম এবং এবারের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পান স্টোকস। ৪৫ বলে ৫১ রান করে বাস ডি লিডের শিকার হন ওকস। প্রথম বলে ছয় হাঁকিয়ে তার পরের বলেই ক্যাচ আউট হন উইলি। শেষদিকে তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে ৩৩৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। তাদের জুটি থেকে আসে ১২৯ রান। ডাচদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন বাস ডি লিড। এছাড়াও দুইটি করে উইকেট নেন ফন বিক এবং আরিয়ান।