×

খেলা

ডাচদের বিপক্ষে টাইগারদের লজ্জার হার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩০ পিএম

ডাচদের বিপক্ষে টাইগারদের লজ্জার হার

কলকাতার ইডেন গার্ডেনে আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) শেখ মেহেদী হাসানকে রানআউট করে নেদারল্যান্ডসের কলিন অ্যাকারম্যানের উল্লাস। ছবি: ইন্টারনেট

ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৮৭ রানে পরাজিত হয়েছে টাইগাররা। এমন হারের পর এবারের বিশ্বকাপে সেমির আশা এখানেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের। শক্তিশালী প্রোটিয়াদের হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয়া ডাচরা বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে। টেস্টখেলাড়ু দেশগুলোর বিপক্ষে যা তাদের দ্বিতীয় জয়। এ নিয়ে ৬ ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৮ নম্বরে অবস্থান করছে তারা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে সব মিলিয়ে মাত্র দুটি জয় পাওয়া ডাচরা ভারতের মাটিতে পেলো দুটি বড় জয়। অন্যদিকে আফগানদের বিপক্ষে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর টানা পঞ্চম ম্যাচে লজ্জাজনক এক হারের স্বাদ পেল টাইগাররা। কলকাতায় টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে স্কট এডওয়ার্ডসের ফিফটির উপর ভর করে ২২৯ রান সংগ্রহ করে ডাচরা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে কোন উইকেট ছাড়া ১৮ রান পেলেও পরের ১ রানেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ তামিম। ১৯-৭০ এই ৫১ রান করতেই ৬ উইকেট খোয়ায় টাইগাররা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৪২.২ ওভারে ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। ২৩০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৯ রানে আরিয়ান দত্তের বলে রিভার্সুইপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক স্কট এডওয়ার্ডসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন দাস। এর পরের ওভারেই ফন ভিকের বলে কট বিহাইন্ডে আউট হন তানজিদ তামিম। মুলত টাইগার শিবিরে ধস নামান ডাচ ডান হাতি ফাস্ট বোলার পল ভ্যান মিক্রিন। পরপর মিরাজ,সাকিব এবং মুশফিকের উইকেট নিয়ে তিনি বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ভিত ভেঙ্গে দেন। আর টপ অর্ডারদের মাঠছাড়া করেন আরিয়ান দত্ত, ফন ভিক এবং ডি লিড। তারা প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট নেন। ওয়ান ডাউনে নামা মিরাজের ৩৫ রান ব্যতিত আর করো রানই দুই অঙ্ক পেরোতে পারেনি। ৪০ বলে ৩৫ রান করে বাস ডি লিডের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। শান্ত, সাকিব এবং মুশফিক আউট হন যথাক্রমে ৯, ৫ এবং ১ রানে। এরপর মাহদিকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ ৩৮ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১০৮ রানে ভুল বোঝাবুঝিতে ১৭ রান করে বাস ডি লিডের দুর্দান্ত থ্রোতে ডিরেক্ট হিটে রানআউট হন মাহেদি। ১১৩ রানে ডি লিডের বলে আরিয়ান দত্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২০ রান করেই থামতে হয় গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। শেষে মোস্তাফিজুর রহমানের ২০, তাসকিনের ১১ রান শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে সাহায্য করে। ডাচদের হয়ে পল ভ্যান মিক্রিন নেন ৪ টি উইকেট। এছাড়া ডি লিড ২টি এবং ফন ভিক, আরিয়ান দত্ত ও অ্যাকারম্যান একটি করে উইকেট পান। এর আগে টস হেরে বল করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পান পেসার তাসকিন। মিড অফে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৩ রান করা বিক্রমজিত সিং। পরের ওভারেই সাফল্য পান বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলামও। স্লিপে তানজিদ হাসানকে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরেন ম্যাক্স ও’দাউদ। ১৪ বলে ৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে শুরুতেই নেদারল্যান্ডসকে চাপে ফেলে বাংলাদেশের পেসাররা। এবারের বিশ^কাপে এটিই দলের পেসারদের সেরা সাফল্য। শুরুর ধাক্কা সামলে উঠতে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ওয়েসলি বারেসি ও কলিন অ্যাকারম্যান হাফ সেঞ্চুরির জুটি গড়েন। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকা বারেসিকে ১৪তম ওভারে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজ। ৮টি চারে ৪১ বলে ৪১ রান করেন বারেসি। তৃতীয় উইকেটে অ্যাকারম্যান-বারেসি ৬৮ বলে ৫৯ রান যোগ করেন। পরের ওভারে অ্যাকারম্যানকে ১৫ রানে শিকার করে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান সাকিব। ৬৩ রানে চতুর্থ উইকেট পতনে আবারও চাপে পড়ে নেদারল্যান্ডস। এ অবস্থায় ডাচদের আরও ভালোভাবে চেপে ধরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু মুস্তাফিজের করা ১৬তম ওভারে দু’বার জীবন পান নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। দ্বিতীয় বলে গালিতে লিটন দাস ও চতুর্থ বলে মুশফিকুর রহিম ক্যাচ ফেলেন। তখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি এডওয়ার্ডস। দু’বার জীবন পেয়ে পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেটে দারুন জুটি গড়েন এডওয়ার্ডস। প্রথমে বাস ডি লিডেকে নিয়ে ৭৪ বলে ৪৪ ও পরে সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের সাথে ১০৫ বলে ৭৮ রান যোগ করেন তিনি। লিডকে ১৭ রানে থামান তাসকিন। এঙ্গেলব্রেট ৩৫ রানে শিকার হন মাহেদির। এঙ্গেলব্রেটের সাথে জুটি গড়ার পথে ৪১তম ওভারে ওয়ানডেতে ১৫তম হাফ সেঞ্চুরি করেন ৭৮ বল খেলা এডওয়ার্ডস। এই ইনিংসের মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসের পক্ষে সর্বোচ্চ অর্ধশতকের মালিক এখন এডওয়ার্ডস। হাফ সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেছিলেন এডওয়াডর্স। তবে ৪৫তম ওভারে মুস্তাফিজের বলে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে দলীয় ১৮৫ রানে আউট হন তিনি। তার আগে ৬টি চারে ৮৯ বলে ৬৮ রান করেন ডাচ অধিনায়ক। এডওয়ার্ডস ফেরার পর ইনিংসের শেষদিকে লোগান ফন ভিক ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ বলে অপরাজিত ২৩, শারিজ আহমেদের ৬ ও আরিয়ান দত্তের ৯ রানে সম্মানজনক স্কোর পায় নেদারল্যান্ডস। ইনিংসে শেষ বলে শেষ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানের পুঁজি পায় নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ৫১ , তাসকিন ৪৩ , মুস্তাফিজ ৩৬ ও মাহেদি ৪০ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ৩৭ রানে ১ উইকেট নেন সাকিব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App