এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে উড়ছে গত দুই আসরে পর পর রানার্সআপ হওয়া নিউজিল্যান্ড। নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় পাওয়া ব্ল্যাকক্যাপসরা। বুধবার (১৮ অক্টোবর) ১৪৯ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখানো আফগানিস্তানকে।

দিল্লির এম এ চিদাম্বরণ স্টেডিয়ামে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান আফগান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদী। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রান সংগ্রহ করে ব্ল্যাকক্যাপসরা। ২৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৪.৪ ওভারে ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। এ ম্যাচে ৮০ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন গ্লেন ফিলিপস। এ জয়ে +১.৯২৩ নেট রান রেট ও ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্টটেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে নিউজিল্যান্ড। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে ২২ অক্টোবর ভারতের মুখোমুখি হবে ব্ল্যাকক্যাপসরা। অপরদিকে, চার ম্যাচে এক জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ৯ নাম্বারে থাকা আফগানরা ২৩ অক্টোবর মাঠে নামবে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

নিউজিল্যান্ডের দেয়া ২৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে আফগানিস্তান। ইনিংসের প্রথম ওভারের ৫ম বলেই বোল্টের বল খেলতে গিয়ে প্যাডে লাগান রহমানুল্লাহ গুরবাজ। অনফিল্ড আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নেয় নিউজিল্যান্ড। তবে, সে যাত্রায় বেচে যান গুরবাজ। তবে, ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে হেনরির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন গুরবাজ। এরপরের ওভারেই অপর প্রান্ত থেকে আঘাত হানেন ট্রেন্ট বোল্ট। আরেক ওপেনার জাদরানকে ফেরান তিনি। ইনিংস বড় করতে পারেননি আফগান অধিনায়ক শহিদীও। লকি ফার্গুসনের বলে স্যান্থনারের দুর্দান্ত ক্যাচে ২৯ বলে ৮ রান করে ফিরেন শহিদী। এরপর জুটি গড়ে ব্যাটিং বিপর্যয় ঠেকান আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও রহমত শাহ। ২৬তম ওভারে দলীয় ৯৭ রানের মাথায় বোল্টের বলে কট বিহাইন্ড হন ওমরজাই। সাজঘরের ফেরার আগে তিনি করেন ৩২ বলে ২৭ রান। তিনি ফিরে যাওয়ার পর রহমতও ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। রাচিন রবীন্দ্রর বলে বোল্ড হয়ে তিনি ফিরেন ৬২ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে। এ দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর আফগানিস্তানের হারের শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। তবে, ইকরাম আলিখিল এক প্রান্ত থেকে প্রতিরোধ গড়ার প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু অপর প্রান্তে চলতে থাকে আসা যাওয়ার প্রতিযোগিতা। নবি ৭, রশিদ ৮, মুজিব ৪, নাভিন এবং ফারুকি ০ রান করে ফিরে যান। ফলে, মাত্র ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। কিউইদের হয়ে স্যান্থনার ও ফার্গুসন ৩টি করে এবং বোল্ট শিকার করেন ২টি উইকেট। এর আগে, ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই স্পিন বোলারদের মুখোমুখি হতে হয় কিউইদের। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ডেভন কনওয়েকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আফগানদের প্রথম সফলতা এনে দেন মুজিব উর রহমান। এরপর রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে আরেক ওপেনার উইল ইয়াং পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। কিন্তু আফগান বোলিংয়ে হঠাৎ ব্যাটিং ধস নামে কিউইদের। ১ রান তুলতে হারিয়ে বসেছে ৩টি উইকেট। রাচিন রবীন্দ্র আর উইল ইয়াং মিলে ৮৩ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়ার পর ২১তম ওভারে জোড়া শিকার করেন আফগান পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ওভারের দ্বিতীয় বলে রাচিনকে বোল্ড আর শেষ বলে হাফসেঞ্চুরিয়ান ইয়াংকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান ওমরজাই। ইয়াং ৬৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় করেন ৫৪ রান। পরের ওভারে আঘাত হানেন রশিদ। ড্যারেল মিচেল মিডউইকেটে খেলতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইব্রাহিম জাদরানকে। ১ উইকেটে ১০৯ থেকে ৪ উইকেটে ১১০ রানে পরিণত হয় নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন ফিলিপস ও লাথাম। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেয়া ফিলিপস করেন ৮০ বলে ৪টি করে চার ও ছয়ে ৭১ রান। এক ম্যাচ পর আবারও অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া লাথাম করেন ৩ চার ও ২ ছয়ে ৬৮ রান। দুজনকেই একই ওভারে ফেরান আফগান পেসার নাভিন উল হক। মূলত ফিলিপস-লাথামের ১৪৪ রানের বিশাল জুটিতে লড়াকু পুঁজি পায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট করে নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও নাভিন উল হক।