×

খেলা

অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে ফাইনালে ইংল্যান্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৭ পিএম

অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে ফাইনালে ইংল্যান্ড

অস্ট্রেলিয়ার ক্যাটরিনা ও ইংল্যান্ডের এলা টুনের মধ্যে বল দখলের লড়াই।

অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে ফাইনালে ইংল্যান্ড

নারী বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে আনন্দে মাতোয়ারা ইংল্যান্ডের মেয়েরা

নারী বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ (১৬ আগস্ট) স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে পা রেখেছে ইংল্যান্ড। এর আগে দুই বার শেষ চারে উঠলেও তারা একবারও শিরোপার লড়াই করতে পারেনি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারে খেলা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তারা অবশেষে সফলতার মুখ দেখেছে। আগামী রবিবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় শিরোপা জয়ের লড়াই করবে ইংল্যান্ড ও স্পেন। ইংলিশ নারীদের প্রতিপক্ষ স্পেনেরও ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম বারের মতো নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে নামা অস্ট্রেরিয়া খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। বিশ্বকাপের আসরে এর আগে কখনোই মুখোমুখি হয়নি দুই দল। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে স্বাগতিক নারীদের ব্যাতিব্যস্ত করে রাখে ইংল্যান্ডের নারীরা। ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যেতে পারতো ইংলিশরা। কিন্তু গ্রিন উডের বাড়ানো বল দারুণ ভলিতে গোল বারের দিকে শট নিলে, শটটি ঠেকিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডার আর্নল্ড। যার কারণে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হারায় ইংল্যান্ড নারী দল। ব্যর্থতার শিকার হলেও একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় ইংল্যান্ডের নারীরা। আরেকদিকে রক্ষণে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে লড়াই চালিয়ে যায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার নারী ফুটবল দল। তবে বেশিক্ষণ তারা নিজেদের জাল রক্ষা করতে পারেননি। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে এলাসিয়া রুশোর থ্রু পাস থেকে বল পান এলা টুনে। বল পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই তারকা। দুর্দান্ত শটে তিনি গোল পোস্টের ডান দিক দিয়ে বল জালে জড়ান। এরপর তারা ব্যবধান দ্বিগুণ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। যার কারণে একের পর এক আক্রমণ ঠেকাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া দলকে। তবে জাল রক্ষায় সফল ছিল স্বাগতিক নারী দলটি। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হজম করতে হয়নি তাদের। তাই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করতে হয়েছে লায়নেসদের। বিরতির পর মাঠে খেলা গড়ালে জমে উঠে লড়াই। রক্ষণ ছেড়ে আক্রমণে মনোযোগ বাড়ায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ তখন উত্তেজনায় পরিপূর্ণ। বল দখল করে আক্রমণ করে ইংল্যান্ড। তাদের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগে হানা দেয় অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাঠে ম্যাচ হওয়াতে অধিকাংশ দর্শকদের সমর্থনও পাচ্ছিল তারা। আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণের এক পর্যায়ে ৬৩ মিনিটে সমতায় ফেরে অসেট্রলিয়া। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় স্যাম কারের গোল থেকে ম্যাচ সমতায় ফিরলে রোমাঞ্চ আরো বেড়ে যায়। তবে এমন মুহুর্ত বেশিক্ষণ টিকে থাকতে দেয়নি ইংলিশ নারীরা। ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার সিটি তারকা লরেন হেম্প গোল করে ফের এগিয়ে নেন দলকে। এরপর তারা অস্ট্রেলিয়ার উপর আরো চড়াও হতে থাকে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার কফিনে শেষ প্যারেকটি ঠুকে দেন রুশো। দ্বিতীয় গোল হজম করার পরই আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। আর তৃতীয় গোল হজমের পর অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে পা রাখে ইংল্যান্ড। এর আগে প্রথম সেমি ফাইনালে গত মঙ্গলবার সুইডেনের বিপক্ষে খেলতে নামে স্পেন। ম্যাচটিতে ২-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে ফাইনালে পা রেখেছে স্প্যানিশ নারীরা। পুরুষদের ফুটবলে নাম-ডাক থাকলেও নারীদের ফুটবলে চলতি আসর নিয়ে মাত্র তিনটি আসরেই অংশগ্রহণ করেছে তারা। বিশ^ নারী ফুটবলে তুলনামূলক দলটি এবারই প্রথম শেষ আটে উঠতে পেরেছে। আর এবারই সুইডেনকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছে দলটি। তাদের বিপক্ষে হেরে সেমি থেকে ছিটকে যাওয়া সুইডিশ নারীরা এই পর্যন্ত ৫ বার খেলেছে শেষ চারে। তাছাড়া সুইডিশ নারীরা একবার রানার্স আপও হয়েছে। [caption id="attachment_456772" align="aligncenter" width="700"] অস্ট্রেলিয়ার ক্যাটরিনা ও ইংল্যান্ডের এলা টুনের মধ্যে বল দখলের লড়াই।[/caption] শক্তিশালী সুইডেনের বিপক্ষে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভোগছিলেন স্পেনের নারী ফুটবলাররা। সেমিফাইনালে সুইডেনের নারীরা ৫ বার খেলার কারণে অভিজ্ঞতায় অনেক পিছিয়ে ছিল স্প্যানিশরা। আর সেই অনভিজ্ঞতার বেড়াজালেই আটকে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল স্প্যানিশ নারী ফুটবলারদের। ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণ করলেও সুইডেনের রক্ষণভাগের সঙ্গে পেরে উঠছিল না স্পেনের আক্রমণভাগ। মাঝমাঠ পেরিয়ে রক্ষণভাগে হানা দিতে গেলেও তারা ডি বক্সে ঢুকতে ব্যর্থ হয়েছে অনেকবার। গোল পোস্টের দিকে শট নিলেও অনেকগুলো শটই হয় উপর দিয়ে, না হয় বাইরে দিয়ে চলে যায়। যার কারণে প্রথমার্ধে কোনো গোলই যোগ হয়নি স্পেনের স্কোরবোর্ডে। আরেকদিকে প্রথমার্ধে স্পেনের রক্ষণে তেমন আক্রমণই করতে পারেনি সুইডিশ নারীরা। ফলাফল হিসেবে গোলশূন্য সমতায় প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল। ম্যাচের প্রথম গোল করার জন্য স্প্যানিশ নারীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৮১ মিনিট পর্যন্ত। এর পর থেকেই সবগুলো গোল হয়েছে। ম্যাচের ৮১ মিনিটে স্পেনের ডেডলক ভাঙ্গেন ১৯ বছর বয়সী সালমা পারায়উয়েলো। স্পেন লিড নেয়ার ৭ মিনিট পর রেবেকা ব্লমকভিস্টের গোলে সমতা আনে সুইডেন। এরপর সকলেই ধারণা করছিলেন ম্যাচ হয়তো টাইব্রেকারে গড়াবে। তবে পরের মিনিটেই স্প্যানিশ অধিনায়ক ওলগা কারমোনা দুর্দান্ত একটি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। যার কারণে ২-১ গোল ব্যবধানে জয় পেয়ে শিরোপার জন্য লড়াই করার টিকিট পায় স্পেনের নারী ফুটবল দল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App