×

খেলা

ঈগলসকে হারিয়ে প্লে অফে আবাহনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০৭:১৩ পিএম

ঈগলসকে হারিয়ে প্লে অফে আবাহনী

মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসের বিপক্ষে বুধবার বল নিয়ে ছুটছেন আবাহনীর এমেকা । এ ম্যাচে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা ২-১ গোলে জয় পেয়েছে।

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কাপের বাছাই পর্বে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে আজ (১৬ আগস্ট) সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসের বিপক্ষে মাঠে নামে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। রোমাঞ্চকর ম্যাচ শেষে ২-১ গোলের জয় পেয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাবটি। ভারতের মোহনবাগান ও নেপালের মাচ্চিন্দ্রার মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে প্লে অফ খেলবে আবাহনী। দলটির হয়ে বুধবার গোল করা দুই ফুটবলারই ধারে আনা। তাদের মধ্যে একজন শেখ জামালের কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট এবং আরেকজন ফর্টিস এফসির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানিলো আগুস্তো। বর্ষাকাল হওয়াতে অনেকদিন যাবৎ টানা বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। আর সিলেট জেলায় ভারী বর্ষণের পরিমাণটা একটু বেশিই। তাই সিলেট জেলা স্টেডিামের মাঠ ছিল যথেষ্ট কর্দমাক্ত। বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়াটা তাই ছিল অনেকটাই কষ্টসাধ্য। তবে সেই সীমাবদ্ধতাকে ম্যাচের শুরু থেকেই জয় করে নেয় স্বাগতিক আবাহনীর খেলোয়াড়রা। প্রথম থেকেই তারা আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে। ম্যাচের ৫ মিনিটেই তার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। তবে মুজাফফরের শট হাত উচিয়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষ ঈগলসের গোলরক্ষক। ১০ মিনিট পর উজবেকিস্তানের এই মিডফিল্ডারের বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটও রুখে দেন তিনি। পরপর দুটি শট আটকে দিয়ে তিনি দলকে লজ্জাজনক হার থেকে বাঁচিয়েছেন সেটা বলাই বাহুল্য। কেননা, দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে আবাহনীর আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা দলটি আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। একের পর এক ধারাবাহিক আক্রমণের সুবাদে তাদের সামনে ভালো একটি সুযোগ আসে ম্যাচের ২০ মিনিটে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের লিড নেয় আবাহনী। ডেভিড ইফেগুয়ের ক্রসে লাফিয়ে উঠে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন কর্নেলিয়াস। তাকে এএফসি কাপের জন্য শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থেকে ধারে এনেছে ঢাকা আবাহনী। ধারে ফুটবলার আনার ক্ষেত্রে ক্লাবটি যে কোনো ভুল করেনি, এই গোলই তার প্রমাণ। একটি গোল করেও তারা ধারাবাহিক আক্রমণ বজায় রাখে। আরেকদিকে সফরকারী ঈগলসের খেলোয়াড়রা প্রতিরোধ গড়ার দিকে মনোযোগ দিতে গিয়েই কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তাই প্রথমার্ধে তারা কোনো ভালো আক্রমণই করতে পারেনি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরেকটি সুযোগ আসে আবানীর ফুটবলারদের সামনে। তবে ৪৫ মিনিটে নেয়া ডেভিডের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি। তারপরও ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পর ম্যাচের উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ঈগলসের খেলোয়াড়রা তালে তাল মিলিয়ে লড়াই করতে শুরু করলে জমে উঠে ম্যাচটি। ৬৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে মালদ্বীপের দলটি। মিলোভান পেত্রোভিচির ফ্রি কিকে দৃষ্টিনন্দন সাইড ভলিতে জালের দেখা পান রিজুভান আহমেদ। ম্যাচ সমতায় গড়ানোর পর দুই দলই জয়সূচক গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। বিশেষ করে আবাহনীর খেলোয়াড়রা প্রথমার্ধের মতো টানা একের পর এক আক্রমণ করতে শুরু করে। তবে এবার ঈগলসের রক্ষণে হানা দিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে স্বাগতিক দলটিকে। ঈগলসও জয়ের জন্য লড়তে থাকে প্রাণপনে। ৮১তম মিনিটে সতীর্থের ক্রসে হুমাইদ হোসেনের হেড দূরের পোস্টে লেগে প্রতিহত হলে বেচে যায় আবাহনী। এর পরপরই এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ কড়া নাড়ে আবাহনীর দরজায়। তবে মোজাফফরভের ফ্রি কিকে মিলাদ শেখ সোলেমানির ডাইভিং হেড লক্ষ্যে না থাকায় বল চলে যায় বাম দিকে থাকা এমেকা ওহবাহর পায়ে। তার বাড়ানো আড়াআড়ি ক্রসে মিলাদের হেড অল্পের জন্য বাইরে যায়। প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ ধরে রেখে ৮৯তম মিনিটে কর্নার আদায় করে নেয় আবাহনী। মোজাফফরভের কর্নারে দূরের পোস্টে থাকা দানিলোর হেডে ফের এগিয়ে যায় আবাহনী। ব্রাজিলিয়ান এই ডিফেন্ডারের গোলের মধ্য দিয়েই প্লে অফে উঠার আনন্দে মাতোয়ারা হয় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দলটি। আরেকদিকে প্রথমবারের মতো এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে গিয়ে বসুন্ধরা কিংস আটকাতে পারল না শক্তিশালী শারজাহ এফসিকে। শারজাহ স্টেডিয়ামে গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রিলিমিনারি রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। এই হারে টুর্নামেন্টে পথচলাও থেমে গেল অস্কার ব্রুসনের দলের। সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রো লিগের ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন শারজাহ শুরু থেকেই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে। তাদের আক্রমণাত্মক খেলায় শরু থেকেই রক্ষণভাগে বেশি মনোযোগ দিতে হয়েছে কিংসের খেলোয়াড়দের। ম্যাচের ফর্মেশন ভেঙ্গে সব ফুটবলারদেরই জমান বাঁধতে হয়েছে রক্ষণভাগে। গোল পোস্টেও নিবিড়ভাবে পাহাড়ায় ছিলেন আনিসুর রহমান জিকো। তিনি কয়েকটি দুর্দান্ত শট আটকে দিয়ে একাধিকবার রক্ষা করেছেন বসুন্ধরা কিংসের জাল। তবে স্বস্তি শেষ হয় প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। কাইওর থ্রু পাস ধরে পিয়ানিচ বাইলাইনের একটু উপর থেকে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান গোলমুখে। টোকায় বাকি কাজটুকু সারেন লুয়ানজিনিয়ো। ৫২তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় পুড়তে হয় বসুন্ধরা কিংসকে। ৭০তম মিনিটে পিয়ানিচের শট আটকান জিকো, শারজাহর ফিরতি প্রচেষ্টাও প্রতিহত হয় রক্ষণে। ওই চাপ ধরে রেখে পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্বাগতিকরা। আব্দুল্লাজিজ সেলিমের ক্রসে লুয়ানজিনিয়ো হেডে লক্ষ্যভেদ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App