×

খেলা

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারলো না লঙ্কানরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৩, ০৭:০০ পিএম

হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারলো না লঙ্কানরা

বৃহস্পতিবার ২৯ বছর পর টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করেছে পাকিস্তান

কলম্বো টেস্টের চতুর্থ দিনেই জয় পেয়েছে পাকিস্তান।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে এক ইনিংস ও ২২২ রানে হারিয়েছে সফরকারীরা। তৃতীয় দিনে আবদুল্লাহ শফিকের করা ডাবল সেঞ্চুরিও ও আগা সালমানের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে চতুর্থ দিনে বল হাতে সাত উইকেট নেন নোমান আলী। বাঁহাতি এই স্পিনারের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে লঙ্কানদের ২৯ বছর পর টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে পাকিস্তান। পাশাপাশি আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই ম্যাচ থেকে পূর্ণ পয়েন্ট তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা। ডাবল সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যাচসেরা হন আব্দুল্লাহ শফিক। আর অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে সিরিজসেরা হন আগা সালমান।

প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা অলআউট হয় ১৬৬ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ৫৭৬ রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। তখনই বোঝা যাচ্ছিল, লঙ্কানদের সামনে ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা। হয়েছেও তাই। নোমান আলী ও নাসিম শাহর বোলিং তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭.৪ ওভারে ১৮৮ রানে অলআউট হয় লঙ্কানরা। তাতেই দেশের বাইরে টেস্টে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় পায় পাকিস্তান। দুই দলের দুই বা তার বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এ নিয়ে দশমবার সিরিজ জিতল পাকিস্তান। আর শ্রীলঙ্কাকে ধবলধোলাই করে সিরিজ জিতল ২৯ বছর পর, সর্বশেষটি ছিল ১৯৯৪ সালে। বর্তমানে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ টেবিলে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান। ২ ম্যাচে ২ জয়ে তাদের পয়েন্ট ২৪। পয়েন্টের শতকরা হার ১০০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের পয়েন্ট ১৬। দুই ম্যাচে ১ জয়ের পাশাপাশি একটি ড্র করেছে তারা।

কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার আগের দিনের ৫৬৩ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে পাকস্তান। এর সঙ্গে আর মাত্র ১৩ রান যোগ করেই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তারা। তৃতীয় দিনের সেঞ্চুরিয়ান আগা সালমান অপরাজিত থাকেন ১৩২ রানে আর মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৫০ রানে। শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১১ রানের। এই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও নিশান মাদুশকা। প্রথম ১৮ ওভার ব্যাট করে ৬৯ রান তুলে নেন দুজনে। তবে বোলিংয়ে এসে তাদের প্রতিরোধ ভেঙে দেন নোমন আলী। তার করা প্রথম বলেই বোল্ড হন মাদুশকা। ৭২ বলে ৩৩ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ওপেনার। পরে আর কোন ব্যাটারকে থিতু হতে দেননি নোমান। তার স্পিন ভেলকিতে হাফসেঞ্চুরির সম্ভবনা জাগিয়েও সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার ও অধিনায়ক করুনারত্নে। এই ব্যটারের ব্যাট থেকে আনে ৬১ বলে ৪১ রান। ওয়ানডাউনে নামা কুশল মেন্ডিসকে ১৪ রানে সাজঘরে ফেরেন ৩৬ বছর বয়সী এই স্পিনার। এরপর একে একে তুলে নেন দিনেশ চান্ডিমাল, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, সাদিরা সামারাবিক্রমা ও রমেশ মেন্ডিসের উইকেট। বিনা উইকেটে ৬৯ থেকে ১৭৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। যার সবকয়টি নেন নোমান আলী।

অনেকে হয়তো ভেবেছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে একাই দশ উইকেট পকেটে পুরবেন নোমান। তবে শেষদিকে ঝলক দেখান পেসার নাসিম শাহ। তুলে নেন বাকি থাকা ৩ উইকেট। আবারও দুইশর আগে থেমে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের সঙ্গে হারে সিরিজও। দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের হয়ে একাই লড়াই করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সঙ্গীর অভাবে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান। ১২৭ বলে ৭ চার আর ২ ছক্কায় ৬৩ করেন তিনি। নোমান ৭০ রানে শিকার করেন ৭ উইকেট। ৪৪ রানে শেষ তিনটি উইকেট নেন নাসিম। তিনটিই করেন বোল্ড। দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন পাক ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক। দুই টেস্টে ব্যাট হাতে ২১১ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৮৩ রানে ৩ উইকেট নেন আগা সালমান। এমন অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের সুবাদে সিরিজসেরা নির্বাচিত হন তিনি।

অপরদিকে কলম্বো টেস্টে উইকেট শিকারের পর মাত্রাতিরিক্ত উদযাপন করে তিরস্কৃত হয়েছেন শ্রীলঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দো। সেই সঙ্গে তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। গত বুধবার পাকিস্তান ইনিংসের ৮১তম ওভারে এ ঘটনা ঘটে। দারুণ ছন্দে থাকা পাকিস্তানি ব্যাটার সাউদ শাকিলকে এলবিডাব্লিউ করে তার খুব কাছাকাছি গিয়ে বুনো উল্লাসে ফেটে পড়েন আসিথা। লঙ্কান বোলারের এমন আচরণ ভালো চোখে দেখেনি বিশ্বক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি। আইন অনুযায়ী আসিথার উদযাপন ছিল মাত্রাতিরিক্ত ও আচরণবিধি লঙ্ঘন। আসিথার আচরণ শাকিলকে উসকে দেওয়ার মতো ছিল বলে মনে করছে আইসিসি। যে কারণে আসিথাকে তিরস্কার করা হয়েছে ও তার নামের পাশে যোগ হয়েছে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট। ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুনের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে শাস্তি মেনে নিয়েছেন আসিথা। যে কারণে আর আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App