×

খেলা

আত্মবিশ্বাসী টাইগ্রেসদের সিরিজ জয়ের হাতছানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৩, ১০:৪৯ পিএম

আত্মবিশ্বাসী টাইগ্রেসদের সিরিজ জয়ের হাতছানি

বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও ভারতের হারমানপ্রীত কৌর

ভারতের মেয়েদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে শনিবার মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল নয়টা ৩০ মিনিটে। এই ম্যাচ জিতলেই ইতিহাসে জায়গা করে নেবে নিগার সুলতানা জ্যোতি বাহিনী। এর আগে ভারতের বিপক্ষে কোনো সিরিজ জিততে পারেনি তারা। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারীদের হারিয়ে চমক দেখায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের সম্ভবনা জাগিয়েও হেরে যায় তারা। আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। এই ম্যাচ জিতলেই ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেবে টাইগ্রেসরা।

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে জ্যোতিরা জয় পায় ৪০ রানে। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচের আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। পরে ৪৪ ওভারে জয়ের জন্য ১৫৪ রানের টার্গেট পায় ভারত। এই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মারুফা ও রাবেয়ার বোলিং তোপে ৩৫.৫ ওভারে ১১৩ রানে অলআউট হয় ভারত। এটি ছিল ভারতের মেয়েদের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের প্রথম জয়। এরপর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ভারতের কাছে ১০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় টাইগ্রেসরা। বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২২৮ রান করতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৫.১ ওভারে ১২০ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। ১-১ এ সমতায় ফেরে ভারত। টাইগ্রেসদের বিপক্ষে সবমিলিয়ে সাতবারের দেখায় ভারত জিতেছে ছয়টি ম্যাচে।

দ্বিতীয় ওয়ানডের পর টাইগ্রেস শিবিরে ব্যাটিং দুশ্চিন্তা ছিলই। তৃতীয় ওয়ানডের আগে নতুন করে যোগ দিয়েছে অসুস্থতা। সিরিজের শেষ ম্যাচ থেকে অসুস্থতার কারণে ছিটকে গেছেন স্বর্ণা আক্তার। অধিনায়ক নিগার সুলতানাও অসুস্থ। তার মাঠে নামা নির্ভর করছে ম্যাচের আগে ফিটনেস পরীক্ষার ওপর। ম্যাচের আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান দলের কোচ হাশান তিলকরত্নে। তিনি বলেন, ‘ব্যাটিংটা বড় দুশ্চিন্তা। ওরা থিতু হয়ে আউট হচ্ছে। ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে থিতু হওয়া। আপনি ভালো শুরু পেয়ে গেলে সেটাকে কাজে লাগাতে চাইবেন। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৯ ওভারের পর ৩ উইকেটে ১০৩ রান। ভেবেছিলাম, আমরা সঠিক পথেই আছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে সে সময় আমরা পিংকিকে (ফারজানা হক) হারিয়েছি। আমরা সেখানেই ম্যাচ হেরে গিয়েছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’

ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ নারী দলের ব্যাটিংয়ে সন্তুষ্ট নন কোচ। এমনকি ফিটনেস আরেকটি বড় সমস্যা। এসবও পিছিয়ে পড়ার কারণ মনে করছেন এই শ্রীলঙ্কান কোচ। এত কিছুর পরও জয়ের আশা দেখছেন নারী দলের প্রধান কোচ। জিততে পারলে প্রথমবারের মতো ভারতকে সিরিজে হারানোর ইতিহাস গড়বে নিগার সুলতানার দল। তিনি আরো বলেন, ‘সমস্যা হলো, আমরা অনেক ডট বল খেলছি। পাওয়ারপ্লেতে অনেক পিছিয়ে থাকছি। এ নিয়ে কথা হয়েছে। আশা করি, ওরা সামনে ভালো করবে। ওরা টেকনিক্যালি সাউন্ড। কিন্তু লম্বা ইনিংস খেলার যে মানসিকতা, সেখানে কাজ করতে হবে। আর ফিটনেসের মান গড়পড়তা মানের চেয়েও কম। আমাদের ফিটনেস ট্রেনার এসেছে ইংল্যান্ড থেকে। সে কাজ করবে। এই সিরিজ শেষে ৬ সপ্তাহের একটা ফিটনেস ক্যাম্প হবে। তবে মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী, দ্বিতীয় ম্যাচটি আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি। এরপর আমাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। আমরা কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি এখন পারফরম্যান্সের দায়িত্ব ওদের। ক্রিকেটাররা খুব আত্মবিশ্বাসী। আশা করছি, ভালো পারফরম্যান্স নিয়ে ঘুরে দাঁড়াব।’

হাশানের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফাহিমা খাতুন। তিনিও বেশ আত্মবিশ্বাসী। মিরপুরেই ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে চায় টাইগ্রেসরা। ফাহিমা বলেন, ‘বোর্ডের কাছে আমাদের সব সময় চাওয়া ছিল, আমরা মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলব। তারা আমাদের আশা পূরণ করেছে, আমাদের কথা রেখেছে। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি জেতার পর আমরা দেখেছি, প্রথম ওয়ানডেতে অনেক দর্শক এসেছে। আমি আশা করব, যেহেতু সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ, অনেক দর্শক হবে এবং আমরাও দর্শকদের একটা আশানুরূপ ফল দিতে পারব।’

অপরদিকে ম্যাচের আগে শুক্রবার ভারতের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন দলের সহঅধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা। তিনি কথা বলেন বাংলাদেশ দলের পেসার মারুফা আক্তারকে নিয়ে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৯ রানে ৪ উইকেট নেন মারুফা। সেই সুবাদে ভারতকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে হারায় বাংলাদেশ। মান্ধানা বলেন, ‘মারুফার বয়স কত, এটা কোনো ব্যাপার নয়। মাঠে যেভাবে সে নিজেকে উপস্থাপন করছে, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে যেভাবে সে নিজেকে মেলে ধরছে, তা অসাধারণ। তার ভেতরে ভালো ক্রিকেটার হয়ে ওঠার যে আগুন দেখেছি আমি নিশ্চিত, সামনের পথচলায় সে বাংলাদেশের জন্য অসাধারণ একজন ক্রিকেটার হয়ে উঠবে।’

ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার পেস সহায়ক উইকেটে মারুফা কেমন করেন, সেটা দেখতে মুখিয়ে আছেন মান্ধানা। মারুফাকে নিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘তার অ্যাকশন একদমই আলাদা। সে যতটা জোরে বল করে, অ্যাকশনের কারণেই আরো দ্রুতগতির মনে হয়। তার রিলিজ পয়েন্ট থেকে আমাদের ধারণার চেয়ে আরেকটু বেশি স্কিড করে তার বল। তাই (ব্যাটারদের) আরেকটু বেশি প্রস্তুত থাকতে হয়। এ ধরনের উইকেট অবশ্যই তাকে খুব একটা সহায়তা করছে না। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় সে কেমন করে, দেখার অপেক্ষা থাকবে। সে খুব ভালো একজন ক্রিকেটার। গত ম্যাচ শেষে তার সঙ্গে খানিকটা কথা হয়েছে আমার। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছি যে তার পারফরম্যান্স আমাদের সবাইকে দারুণ অনুপ্রাণিত করেছে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App