×

খেলা

নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে উইম্বলডন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪৫ এএম

নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে উইম্বলডন

চূড়ান্ত হয়েছে উইম্বলডন নারী এককের দুই ফাইনালিস্ট। সেমিফাইনালে দ্বিতীয় বাঁছাই আরিনা সাবালেঙ্কাকে ৬-৭ (৫-৭), ৬-৪, ৬-৩ সেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছেন ছয় নম্বর বাঁছাই ওন্স জাবেউর। আরেক সেমিফাইনালে এলিনা সভিতোলিনাকে সরাসরি ৬-৩, ৬-৩ সেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন মার্কেতা ভন্দ্রোসোভা। টেনিসের উন্মুক্ত যুগে প্রথম অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠার কীর্তি গড়েন এই চেক তারকা। ফাইনালে ওঠা এই দুই তারকার সামনেই ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের হাতছানি। গত আসরে উইম্বলডনের ফাইনালে এলিনা রিবাকিনার কাছে হেরে শিরোপা জেতা হয়নি জাবেউরের। আর ২০১৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে রানার্সআপ হয়েছিলেন ভন্দ্রোসোভা।

সেমিফাইনালের শুরু থেকেই লড়াই চলে জাবেউর ও সাবালেঙ্কার মধ্যে। কেউ কাউকে ছাড় দেননি। একবার সাবালেঙ্কা এগিয়ে গেলে পরেরবার এগিয়ে যান জাবেউর। এই দুই তারকার হাড্ডাহাড্ডি লড়া য়ে সেট গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানেও চলে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তবে প্রথম সেটে সাবালেঙ্কার সঙ্গে পেরে ওঠেননি জাবেউর। ৭-৫ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে এগিয়ে যান সাবালেঙ্কা। দ্বিতীয় সেটে আরো আত্মবিশ্বাসী শুরু করেন তিনি। প্রথম গেমেই জাবেউরের সার্ভিস ভেঙে দেন। তবে পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েননি জাবেউর। ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নেন দ্বিতীয় সেটে।

খেলা গড়ায় তৃতীয় সেটে। সেখানে দাপট দেখান জাবেউর। সাবালেঙ্কার শটের মোকাবিলা তিনি করেন বুদ্ধি দিয়ে। শেষ পর্যন্ত নিজের সার্ভিস ধরে রেখে উইম্বলডনের ফাইনালে পা রাখেন গত আসরের রানার্সআপ। ফাইনালে ওঠার পর তিনি বলেন, ‘ওই লোকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। যারা সবসময় আমাকে বলে, জিতো বা হারো, আমরা তোমাকে ভালবাসি। এটা শুনতে খুব ভালো লাগে। আমি সবসময় মনে রাখার চেষ্টা করি, যদিও আমি জানি সবাই আমাকে জয়ী দেখতে চায়।’

২০১১ সালে প্রথম বার কোনো গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফিতে হাত রেখেছিলেন জাবেউর। সেটা ছিল জুনিয়র গ্র্যান্ড স্লাম। এরপর থেকে দাপট দেখাতে থাকেন। গত আসরে ইতিহাস গড়ে প্রথম তিউনিশিয়ান খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু এলিনা রিবাকিনার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তার। এবার কোয়ার্টার ফাইনালে রিবাকিনাকে হারিয়ে সেই হারের বদলা নেন তিনি। এবারের ফাইনাল নিয়ে জাবেউর বলেন, ‘আমি ফাইনালে উঠেছি। শিরোপার জন্যই যাচ্ছি। আমি শতভাগ প্রস্তুতি নেব। আশা করি আমি শুধু তিউনিসিয়ার জন্য নয়, আফ্রিকার জন্য ইতিহাস গড়তে পারব।’

অপরদিকে শীর্ষ বাছাই ইগা সোয়াটেককে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন ইউক্রেনের এলিনা সভিতোলিনা। যিনি কিনা সেমিতে দাঁড়াতেই পারেননি র‌্যাঙ্কিংয়ের বাইরে থাকা মার্কেতা ভন্দ্রোসোভার বিপক্ষে। সভিতোলিনাকে সরাসরি সেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইালে ওফেন ভন্দ্রোসোভা। সেমিফাইনাল ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখাতে থাকেন এই তারকা।

প্রথম সেটেই সভিতোলিনার তিনটি সার্ভিস ভেঙে দেন তিনি। সভিাতোলিনাকে তেমন কোন সুযোগ না দিয়ে ৬-৩ ব্যবধানে জিতে নেন প্রথম সেট। দ্বিতীয় সেটেও একই ধারা অব্যাহত রাখেন ভন্দ্রোসোভা। পর পর সোভাতোলিনার দুটি সার্ভিস ভেঙে দেন। অন্যদিকে ধরে রাখেন নিজের সার্ভিস। ফলে ৪-০ এগিয়ে যান তিনি। পরে সার্ভিস ভাঙার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি সভিতোলিনা।

ফলে একই ব্যবধানে হেরে যান দ্বিতীয় সেট। উন্মুক্ত যুগের প্রথম অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে ওঠেন উইম্বলডনের ফাইনালে। জয়ের পর তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি খুব খুশি যে আমি এলিনার বিপক্ষে জিতে ফাইনালে উঠেছি। সে একজন যোদ্ধা এবং একই সঙ্গে একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। আমার জন্য এটি একটি কঠিন ম্যাচ ছিল। পুরো ম্যাচে আমি নার্ভাস ছিলাম। আমি দ্বিতীয় সেটে ৪-০ তে এগিয়ে ছিলাম এবং সে ফিরে এসে দুবার আমার সার্ভিস ভেঙে দেয়। যে কারণে আমার ফোকাস আরো বাড়াতে হয় এবং কঠিন লড়াই করতে হয়। দর্শকদের সমর্থন জন্য কৃতজ্ঞতা।’

২০১৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন ভন্দ্রোসোভা। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলি বার্টির কাছে পরাজিত হন তিনি। তারপরে চোটে দীর্ঘ দিন ভুগতে হয় তাকে। গত বছরও চোটের কারণে ছয় মাস ছিলেন কোর্টের বাইরে। ফলে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪৩ নম্বরে নেমে যান তিনি। ফাইনাল নিয়ে ভন্দ্রোসোভা বলেন, ‘ফাইনালে নিজের সেরাটা দেব। লড়াই করব। এ বারের প্রতিযোগিতায় প্রতিটা ম্যাচ উপভোগ করছি। ফাইনালেও সেটাই করতে চাই। যাতে প্রতিপক্ষ আমাকে সহজে হারাতে না পারে।’

২৪ বছরের ভন্দ্রোসোভা ছোট থেকেই খেলার পরিবেশে বড় হয়েছেন। তার দাদু ছিলেন জাতীয় স্তরে পেন্টাথলন চ্যাম্পিয়ন। মা পেশাদার ভলিবল খেলোয়াড়। ছোট থেকেই টেনিসে দাপট দেখাতে থাকেন ভন্দ্রোসোভা। জুনিয়র স্তরে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন। সিনিয়র স্তরে এসে শুরুতেই চমক দিয়েছিলেন এই বাঁ হাতি খেলোয়াড়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App