×

খেলা

জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত জামালদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম

জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত জামালদের

ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে মঙ্গলবার নিজের ঝালিয়ে নিচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা

জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত জামালদের

ভুটানের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচের ১০টিতে জেতা জামালরা বুধবার জিততে পারলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে

বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বুধবার (২৮ জুন) রাত ৮টায় ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হবে জামাল ভূঁইয়াদের।

এর আগে প্রথম ম্যাচে লেবাননের কাছে হেরে আসর শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে উড়িয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখেন হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা। দুই ম্যাচে ১ জয় ও ১ হারে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্টে তিনে মালদ্বীপ। ‘বি’ গ্রুপে তুলনামূলক শক্তিশালী দল লেবানন। দুই ম্যাচের দুটিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে তারা। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। সেমিফাইনালে যেতে হলে মালদ্বীপকে জিততে হবে বড় ব্যবধানে। তবে শক্তিমত্তা কিংবা সব দিকেই এগিয়ে লেবানন। আর ভুটান র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকলেও শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। যে কারণে সেমিফাইনালে যাওয়া তুলনামূলক সহজ হবে ক্যাবরেরার শিষ্যদের।

‘এ’ গ্রুপের সেমিফাইনালিস্ট নির্ধারিত হয়েছে এক ম্যাচ আগেই। স্বাগতিক ভারতের সঙ্গে সেমি নিশ্চিত করেছে অতিথি দল কুয়েত। অন্যদিকে ‘বি’ গ্রুপের যে দুটি ম্যাচ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চার দলেরই সম্ভাবনা আছে সেমিফাইনালে খেলার। বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ ছাড়াও বুধবার প্রথম ম্যাচে বিকাল ৪টায় লেবাননের মুখোমুখি হবে মালদ্বীপ। সর্বশেষ ২০০৯ সালে সাফের সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। প্রায় ১৩ বছর পর আবার সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা জেগেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের সামনে। প্রতিপক্ষ ভুটান হয়ায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে তারা। মালদ্বীপ-লেবানন ম্যাচের পর বাংলাদেশের সমীকরণ আরো স্পষ্ট হবে।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়, ড্র এবং পরাজয় তিন ফলাফলেই সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা আছে আবার তিন ফলাফলেই বাদ পড়তে পারে। লেবানন যদি মালদ্বীপকে হারায় তাহলে সেমিফাইনাল খেলা প্রায় নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। পরের ম্যাচে ভুটানের সঙ্গে ড্র করলেই ৪ পয়েন্ট নিয়ে মালদ্বীপকে পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে যাবে বাংলাদেশ। আবার লেবানন ও মালদ্বীপের ম্যাচ যদি ড্র হয় তাহলে ভুটানের বিপক্ষে জিতলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ ড্র হলে বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপের হবে ৪ পয়েন্ট। তখন গোল বেশি দেয়া দল সেমিফাইনাল যাবে। দুই ম্যাচ শেষে দুই দলই তিনটি করে গোল দিয়েছে। শেষ ম্যাচে মালদ্বীপ গোলশূন্য ড্র আর বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করলে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলবে। আবার মালদ্বীপ যদি লেবাননকে হারায় আর বাংলাদেশ ভুটানকে হারায় তাহলে গ্রুপপর্বে লেবানন, মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের সমান পয়েন্ট ৬ হবে। তিন দলের মধ্যে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দুই দল সেমিফাইনালে যাবে। সেক্ষেত্রে লেবানন +৫ গোল ব্যবধান নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে। মালদ্বীপের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে না হারলে তাদের বাদ পড়ার সম্ভাবনা নেই। আবার বাংলাদেশ হারলেও সেমিফাইনালে খেলতে পারে। লেবানন মালদ্বীপকে হারালে এবং ভুটান বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলে মালদ্বীপ, বাংলাদেশ, ভুটানের সমান ৩ পয়েন্ট হবে। সেক্ষেত্রে ভুটানের সেমিফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ গোলের ব্যবধানে জয় এবং মালদ্বীপ ৩ গোলের ব্যবধানে লেবাননকে হারাতে হবে। অন্যদিকে মালদ্বীপ ২ এবং বাংলাদেশ ১ গোলের ব্যবধানে হারলে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে যাবে।

[caption id="attachment_443422" align="aligncenter" width="1600"]জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত জামালদের ভুটানের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচের ১০টিতে জেতা জামালরা বুধবার জিততে পারলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে[/caption]

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভুটানের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। আর সব মিলিয়ে ১৩ বারের দেখায় বাংলাদেশ জিতেছে ১০টি ম্যাচে। ড্র করেছে ২টি। ভুটানও র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ওপরে। সাফে এ দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের পাল্লা ভারী। ২০০৮-এর সাফ ১-১ ড্র ছাড়া বাকি সব আসরেই ২০০৩ সালের চ্যাম্পিয়নদের জয়। অবশ্য ভুটান ২০১৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাই প্লে-অফে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করার পর ফিরতি ম্যাচে ৩-১ গোলে জয় পায়। যে কারণে এবার ভুটান বধে আশাবাদী জামালরা। ভুটানকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে সেরা চারে যেতে চান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) তিনি বলেন, ‘লেবাননের বিপক্ষে মালদ্বীপ কী করছে, এটা একটা বড় ব্যাপার। মালদ্বীপ হেরে গেলে ভুটানের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেলেই হয়তো আমরা সেমিফাইনালে চলে যাব। তবে মালদ্বীপ ম্যাচের পর আমরা আমাদের মানসিকভাবে যেভাবে চাঙা করেছি, সেখান থেকে আমরা সরে আসছি না। কারণ, ভুটানের সঙ্গে আমাদের একটা বাজে অতীত আছে, সেই ঘটনা যেন না ফিরে আসে, সেটাই আমরা চাইব। আমরা জয়ের ধারা ধরে রাখতে চাইব, কারণ জয়ের মানসিকতা একটা অভ্যাস তৈরি করে দেয়। আমরা সেভাবেই পরিণত হতে চাই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব মাঠে। কারণ জিতে সেমিফাইনালে গেলে সেটা হবে দলের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা। আমরা চাইব, টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিতে যেতে। কারণ তখন প্রতিপক্ষও আমাদের ভয় পাবে, এই দলটা অনেক কঠিন পরিস্থিতি থেকে জিতে এ পর্যন্ত এসেছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার হবে।’

সাফে বাংলাদেশের সাফল্য আসে ২০০৩ সালে। এরপর ২০০৫ সালে শেষবারের মতো ফাইনালে খেলা। একসময় সাফ মানেই ছিল বাংলাদেশ ফেভারিট। আর এখন তারা দ্বিতীয় সারির দল। ১৯৯৩ সালে সার্ক ফুটবল নামে শুরু এ আসরটি পরে সাফ ফুটবল নাম ধারণ করে। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি। ১৯৯৫ সালে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে সেমিতে টাইব্রেকারে হেরে বিদায়। সাফ ফুটবলে প্রথম ফাইনালে খেলা ১৯৯৯ সালে। আর প্রথম ও একমাত্র ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব ২০০৩ সালে। ১৯৯৭, ২০০৮, ২০১১ ও ২০১৩ সাফে কোনো ম্যাচ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। গ্রুপে দুই জয় ২০১৮, ২০০৯, ২০০৫ ও ২০০৩ এ। এছাড়া ১৯৯৭, ২০০৮, ২০১১, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App