×

খেলা

এজবাস্টনে হারলেও ফের শীর্ষে রুট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ১০:২৪ পিএম

এজবাস্টনে হারলেও ফের শীর্ষে রুট

অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের ৩০তম সেঞ্চুরি করে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে উঠে আসেন ইংল্যান্ডের জো রুট। ছবি ইন্টারনেট

অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে হারলেও আবারো টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে এসেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট। এদিকে এজবাস্টনে স্লো ওভার রেটের কারণে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ২ পয়েন্ট করে কাটার পাশাপাশি ম্যাচ ফির ৪০ শতাংশ করে উভয় দলকেই জরিমানা করেছে আইসিসি। সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ইংলিশ ব্যাটসম্যান জো রুট ৮৮৭ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ ধাপ এগিয়ে উঠেছেন শীর্ষে। এজবাস্টনে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারের ৩০তম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া রুট অপরাজিত থাকেন ১১৮ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসেও করেন দলের সর্বোচ্চ ৪৬ রান। অপরদিকে এজবাস্টনে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি টানা ৯ টেস্টে কোনো সেঞ্চুরি না পাওয়া অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান মারনাস লাবুশেন প্রায় ৬ মাস পর আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান হারিয়েছেন। কোনো ম্যাচ না খেলেই র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে উঠেছেন কেইন উইলিয়ামসন। রুটের সঙ্গে উইলিয়ামসনের রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য ৪। তিন নম্বরে থাকা লাবুশেন অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের ব্যর্থতায় রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছেন ২৬। একধাপ পিছিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা ট্রাভিস হেডের অবস্থান এখন চারে। লাবুশেন-হেড ছাড়াও র‌্যাঙ্কিংয়ে চার ধাপ নেমে গেছেন স্টিভ স্মিথ। বর্তমানে তার অবস্থান ৬ নম্বরে। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ২১৮ রান করা উসমান খাজা দুই ধাপ এগিয়ে আছেন ক্যারিয়ার সেরা সাত নম্বরে।

র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৬ ব্যাটসম্যানের মধ্যেই রেটিং পয়েন্ট অনেকটা কাছাকাছি। শীর্ষে থাকা রুটের সঙ্গে ৬ নম্বরে থাকা স্মিথের রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য মাত্র ২৬। এদিকে আফগানদের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা নাজমুল হাসান শান্ত ৫০৩ রেটিং নিয়ে এক লাফে উঠে এসেছেন ৫৪ নম্বরে। বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৮৬০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানেই আছেন ভারতের এ অফ স্পিনার। দুই নম্বরে থাকা ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের সঙ্গে অশ্বিনের ব্যবধান ৩১ পয়েন্টের। একধাপ এগিয়েছেন দুই ইংলিশ পেসার ওলি রবিনসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। রবিনসন পাঁচে ও ব্রড আছেন নয়ে।

এজবাস্টনে জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই শাস্তি আর জরিমানার খবর শুনতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। একই খবর শুনতে হয়েছে প্রথম টেস্ট হেরে হতাশায় ডুবে যাওয়া ইংল্যান্ডকেও। স্লো ওভার রেটের জন্য দুই দলকেই শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। দলীয় শাস্তির সঙ্গে দুই দলের খেলোয়াড়দের জরিমানাও করা হয়েছে। শাস্তি হিসেবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড দলের ২ পয়েন্ট করে কেটে নিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। এছাড়া দুই দলের খেলোয়াড়দেরই ম্যাচ ফির ৪০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে দুই দলই দুটি করে ওভার কম বোলিং করেছে। যার ফলে দুই দলকে এই শাস্তি দিয়েছেন আইসিসির এলিট প্যানেলের ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস বিষয়টি মেনে নেয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি। এর আগে হাত শুকানোর স্প্রে ব্যবহার করার জন্য ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ কেটে রাখা হয় ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীর।

এজবাস্টনে শেষদিনে অস্ট্রেলিয়ার জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭৫ রান, ইংল্যান্ডের ৭ উইকেট। বৃষ্টিতে প্রথম সেশনের খেলা ভেস্তে গেলেও দুই সেশন মিলিয়ে ৬৭ ওভারের খেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ভেজা উইকেটে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেটের পতন হয় দিনের অষ্টম ওভারে। স্টুয়ার্ট ব্রডের আউট সুইংয়ে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নাইটওয়াচম্যান স্কট বোল্যান্ড। শেষদিনে স্পিনের বড় ভূমিকা থাকবে, এমনটা বলা হচ্ছিল শুরু থেকেই। অবসর ভেঙে প্রায় দুই বছর পর ফেরা অফস্পিনার মঈনই ইংল্যান্ডকে এনে দেন দিনের দ্বিতীয় সফলতা। মঈনের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ট্রাভিস হেড। কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করতে থাকেন খাজা। ১৯৮৯ সালে মার্ক টেলরের পর প্রথম অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজের একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা ব্যাটসম্যান হন তিনি। হয়েছেন পাঁচ দিনের টেস্টের ইতিহাসে প্রতিদিনই ব্যাটিং করা মাত্র পঞ্চম ব্যাটসম্যানও।

ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে খাজার জুটিতে অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে ১৮৩ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায়। শেষ সেশনে তাদের প্রয়োজন ছিল ৯৮ রান, ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৫ উইকেট। ইংল্যান্ডকে প্রথমটি এনে দেন ওলি রবিনসন। স্ট্যাম্পে বল ডেকে এনে নিজের বিপদটা ডেকে আনেন গ্রিন। ইনিংসের ৭০তম ওভারে প্রথম বল করতে আসেন স্টোকস, সফল হন দ্বিতীয় ওভারে। এবার স্ট্যাম্পে বল ডেকে এনে খাজা আউট হন ৬৫ রানে। মঈন আলীর আঙুলের চোটের কারণে অন্যপ্রান্তে বল করে যাচ্ছিলেন জো রুট। নতুন বল না নিয়ে পুরনো বলে রুটকে এনে আরেকবার চমকে দিলেন স্টোকস। পার্টটাইমারের বিপক্ষে সুযোগ নিতে গিয়ে অ্যালেক্স ক্যারি ক্যাচ দিলেন রুটের হাতেই। এর আগে কঠিন ও মোটামুটি নেয়ার মতো ধরনের দুটি সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন রুট। ক্যারির বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কামিন্স নিজেই। প্রথমে রুটের ওপর চড়াও হয়ে এক ওভারে মারেন দুটি ছক্কা। এদিকে পুরনো বলেই এগিয়েছে ইংল্যান্ড, ব্রডের শর্ট বলে লায়নের পুল শটে তোলা ক্যাচটি স্কয়ার লেগে দারুণ প্রচেষ্টার পরও নিতে পারেননি স্টোকস। ৮৬তম ওভারে গিয়ে অবশেষে দ্বিতীয় নতুন বলটি নেয়া ইংল্যান্ড রবিনসন ও ব্রডকে দিয়ে বল করিয়ে গেছেন। তবে কোনো ঝুঁকি না নিয়েই লায়ন আর কামিন্স দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ২১৮ রান করে ম্যাচসেরা হন উসমান খাজা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App