×

খেলা

নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩, ১০:৫৭ পিএম

নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া
উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে গতকাল রাতে নেদারল্যান্ডসকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে একটি পেনাল্টি আদায় ও এক গোল করে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন ক্রোয়েট অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। স্পেন ও ইতালির বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জয়ী দলের বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া। ঘরের মাঠ রটারডামে ক্রোয়েটদের আতিথেয়তা দেয় ডাচরা। নির্ধারিত সময়ে ফলাফল ২-২ গোলে সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে- যেখানে ব্রুনো পেটকোভিচ ও অভিজ্ঞ মদ্রিচের গোলে জয় পায় ২০১৮ বিশ্বকাপের রানার্সআপরা। নিজেদের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য দেখানো শুরু করে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে এগিয়েও যায় তারা। গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ডনিয়েল ম্যালেন। এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। তবে বিরতি থেকে ফিরে খেলায় ফিরতে মরিয়া হয় সফরকারীরা। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ডাচ ফরোয়ার্ড কোডি গাপকো ডিবক্সে মদ্রিচকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ক্রোয়েশিয়া। সফল স্পট কিকে দলকে সমতা এনে দেন আন্দ্রেজ ক্রামারিচ। এরপর ম্যাচের ৭২ মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। ক্রোয়েটদের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন মারিও পাসালিচ। তবে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে হোঁচট খায় মদ্রিচ-পেরিসিচরা। নির্ধারিত মিনিটের যোগ করা সময়ে নোয়া ল্যাংয়ের গোলে সমতায় ফেরে নেদারল্যান্ডস। ফলে ৯০ মিনিট শেষ হয় ২-২ গোলের সমতা নিয়ে। সেখান থেকে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ম্যাচের ৯৮ মিনিটে মদ্রিচের সহযোগিতায় ক্রোয়েশিয়াকে আবারো এগিয়ে দেন পেটকোভিচ। এরপর ম্যাচের ১১৬ মিনিটে স্পট কিক থেকে দলের জন্য জয়সূচক গোলটি করেন মদ্রিচ। ফলে ৪-২ গোলের জয় নিয়েই ফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা নেই মদ্রিচের। শিরোপা জিতে দেশের হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারলে সেটা হবে তার জন্য দারুণ অর্জন। ২০১৮ বিশ্বকাপে ফাইনাল ও গত বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলা দলটির এবার একটি শিরোপা প্রাপ্য বলেও মনে করেন ক্রোয়েশিয়া কোচ। ম্যাচ শেষে মদ্রিচের প্রশংসা করে কোচ জাৎকো দালিচ বলেন, ‘মদ্রিচ আমাদের শিরোপা এনে দিতে পারে। ফাইনালের পর সে সিদ্ধান্ত নেবে পরে খেলবে কিনা। তবে অবশ্যই তার দলে থাকা মানে আমরা অনেক ভালো দল, সে থাকলে দলের মান অনেক অনেক বেড়ে যায়। একটি শিরোপা জিততে পারলে তা আমাদের জন্য হবে দারুণ স্বীকৃতি। আমার মনে হয়, এটা আমাদের প্রাপ্য। গত ৬ বছর ধরে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে চলেছি।’ মদ্রিচ আসার আগে ক্রোয়েশিয়া কখনো বড় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে পারেনি। তবে মদ্রিচ দলে যোগ দেয়ার পর রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে তারা। কাতার বিশ্বকাপেও হয়েছে তৃতীয়। নিজেদের শেষ ১৬ ম্যাচে মাত্র একটিতে পরাজিত হয়েছে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সর্বশেষ আর্জেন্টিনার কাছে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল তারা। ক্রোয়েট কোচ আরো বলেন, ‘এই জয়টা ক্রোয়েশিয়ার জনগণের জন্য। আমরা নেদারল্যান্ডসকে তাদের সমর্থকদের সামনে পরাজিত করেছি। ক্রোয়েশিয়া আরো একটি পদক জয় করল। এটা সত্যিই অভাবনীয়। যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমরা ফাইনালে খেলছি। আগের ব্যর্থতার কোনো কিছুই এই দলটিকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয় না। সবাই জানে তারা ক্রোয়েশিয়ার জন্য খেলছে। এটা আমাদের অন্যতম বড় একটি জয়। স্বাগতিকদের ৪-২ গোলে হারানো মোটেই সহজ কাজ নয়। আমরা একসময় হেরে গিয়েছিলাম, ৯৬ মিনিটে গোল হজমের পর আবারো লড়াইয়ে ফিরে এসেছি। অবশ্যই এই জয় ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেবে।’ ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে মদ্রিচকে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন আপনার পাসপোর্ট দেখতে পারি? কারণ ৩৭ বছর বয়সে ১২০ মিনিট ধরে এভাবে দৌড়ে বেড়ানো তো অবিশ্বাস্য! মদ্রিচ হাসিমুখে জবাব দেন, ‘আপনি চাইলে আমি সাক্ষাৎকার শেষে দেখাতে পারি! আমি ফুটবলকে স্রেফ ভালোবাসি। এটাই আমার শক্তি ও চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।’ অপরদিকে ১৯৮৮ ইউরোর পর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে আর কোনো শিরোপা জিততে পারেনি নেদারল্যান্ডস। ৩৫ বছরের শিরোপ খরা চলছে ডাচ ফুটবলে। এবারো সেমিফাইনালেই থেমে যেতে হয় তাদের। রোনাল্ড কোম্যানের দল নেদারল্যান্ডস ২০১৯ সালে পর্তুগালে অনুষ্ঠিত নেশন্স লিগের প্রথম আসরে রানার্সআপ হয়েছিল। আক্রমণভাগে ডান দিকে মালেনকে নামিয়েছিলেন কোম্যান। বামদিকে ছিলেন তরুণ জাভি সাইমন্স। এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের হয়ে চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন সাইমন্স। এই দুজনই প্রথম গোলের কারিগর ছিলেন। লিভারপুল ফরোয়ার্ড কোডি গাকপোও তাদের সহযোগিতা করেছেন। ম্যাচ শেষে নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক ভার্জিল ভন ডাইক বলেন, ‘আমরা সিংহের মতো লড়াই করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দিনটা আমাদের ছিল না। এটা সত্যিই খুব হতাশার। আমরা জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে। কিন্তু লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। প্রতিপক্ষকে দুটি পেনাল্টি উপহার দিয়েছি। এই জায়গায় আমাদের উন্নতি করতে হবে। এই মুহূর্তে কথা বলাটা কঠিন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App