×

খেলা

সবুজ ঘাসের উইকেটে জিততে আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

সবুজ ঘাসের উইকেটে জিততে আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস

সবুজ ঘাসের উইকেটে জিততে আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক

আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে একমাত্র টেস্টে হেরেছিল টাইগাররা। এবার ঢাকা টেস্টে সেই হারের বদলা নিতে মরিয়া হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। আগামী ১৪ জুন হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।

টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে সোমবার দুই অধিনায়কই সংবাদ সম্মেলনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দুই দল মাঠে নামার আগে আলোচনায় রয়েছে উইকেট। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরের সঙ্গে ঘূর্ণি উইকেট যেন একে অপরের পরিপূরক। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে আর ঘূর্ণি উইকেট থাকছে না।

সবুজ ঘাসের উইকেটে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ সাদা পোশাকে আফগানদের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লায় টেস্ট অভিষেক লিটনের। সেই থেকে লাল-সবুজের জার্সিতে ৩৮টি টেস্ট খেলা লিটন এবার বাংলাদেশের ১২তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নেতৃত্ব দেবেন।

নতুন দায়িত্ব কেমন লাগছে, টেস্টের অধিনায়ক বলে রোমাঞ্চিত কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে লিটন বলেছেন, এটা নিয়ে তার ‘বিশেষ’ কোনো অনুভূতি হচ্ছে না, পরে অবশ্য যোগ করেন, ‘একটা ভালো লাগা কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, টেস্ট খেলোয়াড় হওয়াটাই বড় বিষয়, দেশের অধিনায়ক হওয়া তো আরো বড় ব্যাপার।’

উইকেটের প্রসঙ্গে লিটন জানান, ঘাসের উইকেটে বাংলাদেশ কেমন খেলে সেটা পরখ করতে চান তারা। ‘অনেক দিন ধরে মিরপুরে যখন খেলা হয় সবগুলোই ঘূর্ণি উইকেটে খেলা হয়। আমাদের চ্যালেঞ্জ এটাই আমরা কীভাবে ঘাসের উইকেটে ভালো খেলি। এখন বিষয় এটা যে আমরা কীভাবে সারভাইভ করি, বড় স্কোর করতে পারি। এ রকম টিমের সঙ্গে আপনি নরমাল ইভেন (বাউন্সি) উইকেটে খেলবেন এটাই স্বাভাবিক।’

[caption id="attachment_439139" align="alignnone" width="1280"] আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি[/caption]

আফগানিস্তান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদিও সবুজ উইকেট প্রসঙ্গে বলেন, এমন উইকেটে খেলার জন্য তাদের পর্যাপ্ত সিমার আছে। তার সুরে তাল মিলিয়ে লিটনও জানান বাংলাদেশের কোয়ালিটি পেস অ্যাটাকের কথা।‘আফগানিস্তান অধিনায়ক যেটা বলেছেন সিমিং কন্ডিশন, আমাদের হাতেও ভালো কোয়ালিটি পেস অ্যাটাক আছে। দেখা যাক।’

টেস্ট দলের নেতৃত্বের অংশীদার লিটন আগে থেকেই। সাকিবকে অধিনায়ক করা হয় লিটনকে সহঅধিনায়ক রেখেই। সাকিবের অনুপস্থিতিতে তিনি টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শোনা গিয়েছিল, আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই টেস্টে তিনি অধিনায়কত্ব করবেন কি করবেন না, তা নিয়ে নাকি দোটানায় ছিলেন।

লিটন অবশ্য গতকাল বলেছেন, ‘সহঅধিনায়ক হিসেবে সাকিব ভাই মাঠে না থাকলে অনেক সময় আমাকে আগেও ২-৩ ওভার অধিনায়কত্ব করতে হয়েছে। ও রকম কিছু নয়।’

সাকিবের অনুপস্থিতিতে লিটনের কাঁধে শুধু অধিনায়কত্বই আসেনি, অধিনায়ক লিটনের জন্য দলে সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি কিছুটা হতাশারও হওয়ার কথা। তবে লিটনের কথায় মনে হলো না সাকিবকে না পাওয়া নিয়ে তিনি কোনো চিন্তায় আছেন, ‘সাকিব ভাই থাকলে আপনি ব্যাটিং-বোলিং দুই দিকেই সার্ভিস পাবেন। তবে উনি না থাকলে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতেই বেশি অসুবিধা হয়, টেস্টে নয়। টেস্টে আমাদের যথেষ্ট বোলার আছে।’

বোলারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বরং লিটনকে আক্রমণাত্মক চিন্তা করতেই সাহায্য করছে। তিনি টেস্টের দল সাজাতে চান ৫ বোলার নিয়ে, ‘বিষয়টা নির্ভর করছে উইকেটের ওপর। উইকেট ভালো থাকলে আমি ৫ বোলারের পক্ষে।’ আর সেই বোলিং আক্রমণে পেসারের সংখ্যাটাই যে বেশি হতে পারে, সে আভাসও দিয়েছেন তিনি, ‘অবশ্যই দুইয়ের বেশি পেসার খেলানোর সম্ভাবনা বেশি।’ ৩৫.৬৭ গড়ে রান করা লিটনের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্নটা অনেক বড়। ডানহাতি এই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান জানান, উত্থান-পতনে মোড়ানো ছিল তার পথচলা।

তিনি বলেন, ‘জার্নিটা খুব একটা সহজ ছিল না। উত্থান-পতন সব সময় ছিল। সামনেও থাকবে। আমি এটাতে বিশ্বাস করি, আপনি যদি ব্যর্থ না হন তাহলে শিখতে পারবেন না। আমি সব সময় ব্যর্থতাকে স্বাগতম জানাই। ব্যর্থ হলে পরবর্তীতে আমি কী ভুল করছি তা শুধরাতে পারব।’ এরপরেই লিটন বলেন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তার স্বপ্নের কথা, ‘টেস্ট ক্রিকেটটা হচ্ছে অবশ্যই গর্বের খেলা। আমি সব সময় অনুভব করি, এটা গর্বের খেলা। দেশের হয়ে খেলাটাই অনেক গর্বের, তার মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট। এটা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার লক্ষ্য অনেক বড়। আমি আমার শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করব সব সময়।’

বাংলাদেশের মাটিতে আফগানরা একটি টেস্টই খেলেছে এবং তাতে জয়ী হয়েছে। সেই টেস্টকে অনুপ্রেরণা ধরেই এগোতে চান আফগান দলপতি হাসমতউল্লাহ শহীদি। দুই বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেছে আফগানরা। ২০২১ সালের মার্চে আবুধাবিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি ১-১ এ অমীমাংসিত থেকে যায়। প্রথম টেস্টে পাত্তাই পায়নি আফগানরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হার মানে। তবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৬ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনে তারা। তাই হাসমতউল্লাহ শহীদির মুখে শুরুতেই এমন আশা জাগানিয়া ও আত্মবিশ্বাসী সংলাপ, ‘প্রত্যাশা অনেক উঁচুতে। আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে এসেছি। জিততে চাই।’

মানছেন, তার দল ২ বছর ৩ মাস পর টেস্ট খেলছে। তবে যারা ভাবছেন বা ধরে বসেছিলেন, আফগানরা দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের বাইরে। তাদের ভুল প্রমাণ করে শহীদি বলে দিলেন, ‘আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছি। আমরা এই ম্যাচটার প্রস্তুতি নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ তারপরও রশিদ খানের অনুপস্থিতিটা চ্যালেঞ্জিং, স্বীকার করতে দ্বিধা নেই আফগান অধিনায়কের, ‘এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। আপনারা সবাই জানেন, রশিদ খান আমাদের দলের মূল বোলারের একজন। সে আগের টেস্টগুলোতে ভালো পারফর্ম করেছে। তবে এখন আমাদের অন্যান্য বোলার আছে, অন্য অপশনও আছে। আশা করছি তারা আমাদের হয়ে পারফর্ম করবে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App