×

খেলা

কম্বোডিয়া থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন জামালরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৩, ০৯:৪৬ পিএম

কম্বোডিয়া থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন জামালরা

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। পাশে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: ভোরের কাগজ

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার উদ্দেশ্যে শনিবার কম্বোডিয়ায় পাড়ি জমাবে বাংলাদেশ ফুটবল দল। একদিন বিশ্রাম শেষে তারা আগামী ১২ ও ১৫ জুন দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এরপর আর দেশে না ফিরে আগামী ১৬ জুন ভারতের বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে বিমানে উঠবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

কম্বোডিয়ায় পৌঁছে প্রথম দিন বিশ্রামে কাটাবে বাংলাদেশ দল। এরপর তারা আগামী সোমবার কম্বোডিয়া প্রিমিয়ার লিগের দল টিফি আর্মি ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। আগামী ১৩ ও ১৪ জুন অনুশীলনে ব্যস্ত সময় পার করে ১৫ জুন কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ফিফা উইন্ডোর প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামবে জামাল ভূঁইয়ারা। এরপর এক রাত বিশ্রাম শেষে হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে ভারতের বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে নমপেন ছাড়বে।

দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশ সফলতার মুখ দেখে সর্বশেষ ২০০৩ সালে। এরপর থেকে আর বাংলাদেশ পুরুষ দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তেমন ভালো করতে পারেনি। পুরুষ দল না পারলেও বাংলাদেশ নারী দল সাফের গত আসরে শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরে। একদিকে নারী ফুটবলে সফলতা, অন্যদিকে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন জামালরা। এসব নিয়ে তাদের ওপর বাফুফের কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের অধিনায়ক বলেন, ‘চাপ তো মিডিয়ার।’

কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বসেন জামাল। সেখানে তিনি বলেন, ‘মিডিয়া এবং সমর্থকরা আরো অনেকে অনেক বিষয় আলোচনা ও সমালোচনা করবে। আমরা ফুটবলাররা সেদিকে মনোযোগ দিই না। আমরা নিজেদের খেলাতেই মনোযোগ রাখি।’ মালদ্বীপ সাফের সঙ্গে আসন্ন বেঙ্গালুরু সাফে দলের শক্তিমত্তা বিশ্লেষণ করে জামাল বলেন, ‘এই দলে আমি ও সোহেল সবচেয়ে অভিজ্ঞ। গত সাফ এবং এই সাফের দল সমানই।’

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশ আর সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি। বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা সরাসরি সেমিফাইনালে খেলার ব্যাপারে না বললেও ভালো খেলার আশা আছে বলে জানান। অন্যদিকে জামাল নিজেদের আন্ডারডগ বলে দাবি করেন। এবারের সাফে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দুটি দেশ অংশগ্রহণ করবে। যার মধ্যে বাংলাদেশের গ্রুপ বি-তে রয়েছে শক্তিশালী লেবানন। সাফের আটটি দলের মধ্যে লেবাননের র‌্যাঙ্কিং সবচেয়ে ভালো। তাই গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের সেরা হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। তাই বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে যওয়া। এই প্রসঙ্গে কোচ কাবরেরা জানান, ‘লেবানন আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আমরা মালদ্বীপ ও ভুটানকে নির্ধারণ করেছি আমাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য।’

বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২২ জুন শক্তিশালী লেবাননের বিপক্ষে। ব্যাঙ্গালুরুতে ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা)। বাংলাদেশের গ্রুপপর্বে অন্য দুই ম্যাচ যথাক্রমে ২৫ ও ২৮ জুন। ২৫ জুন মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচটিও বিকালে। ২৮ জুন গ্রুপের শেষ ম্যাচটি ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। প্রথম দুই ম্যাচে প্রাপ্ত পয়েন্টের ওপরই নির্ভর করবে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের স্থায়িত্ব। সাফে বিগত কয়েক টুর্নামেন্টে মালদ্বীপকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে অন্য টুর্নামেন্টের বিজয়কে সামনে আনছেন কোচ, ‘সাফে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা তাদের সঙ্গে পারিনি, কিন্তু শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ জিতেছিল’।

অন্যদিকে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া টুর্নামেন্টে নিজেদের আন্ডারডগ হিসেবে দেখছেন, ‘আমাদের নিয়ে কিন্তু আলোচনা নেই। আমরা আন্ডারডগ হিসেবেই যাচ্ছি।’ এরপর তিনি যোগ করেন, ‘আন্ডারডগ থাকায় আমাদের নিয়ে তেমন বিশ্লেষণ নেই অন্যদের। এটা আমাদের জন্য ভালো হবে।’

সাফকে সামনে রেখে প্রথমে ৩৫ সদস্যের একটি প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছিলেন কাবরেরা। সেখান থেকে পাঁচজনকে বাদ দিয়ে তিনি প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু করেন। গতকাল তিনি ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেন। তার চূড়ান্ত দলে জায়গা পাননি ঘরোয়া ফুটবলে দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ গোল করা এলিটা কিংসলে। তিনি বাদ গেলেও বসুন্ধরা কিংসের সুমন রেজা জায়গা পেয়েছেন কাবরেরার দলে। ঘরোয়া লিগে তিনি এবার কোনো গোল করতে পারেননি। তারপরও সুমন রেজা দলে থাকার কারণ জানতে চাইলে কাবরেরা বলেন, ‘টাফ কম্পিটিশন, ক্যাপাসিটি ও কোয়ালিটি- এই তিন ক্যাটাগরি বিবেচনায় দল নির্বাচন করা হয়েছে।’

একজন ফরোয়ার্ডের মূল মানদণ্ড স্কোরিং। সেই স্কোরিংয়ে এলিটা এগিয়ে থাকলেও হ্যাভিয়েরের ব্যাখ্যা, ‘প্রথম লেগের সঙ্গে দ্বিতীয় লেগের পারফরম্যান্সে তারতম্য রয়েছে।’

অধিনায়ক জামাল কিংসলের বাদ পড়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘বুঝতে পারছি আপনারা দল নিয়ে অনেক প্রশ্ন করছেন। কোচ খেলা দেখেছে এবং অনুশীলন করিয়েছে। সে যেটা ভালো মনে করেছে তাদেরই নিয়েছে। এখন যারা রয়েছে তাদের নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে।’ চূড়ান্ত দল ঘোষণার আগেই চোটের কারণে সাফ থেকে ছিটকে যান টুটুল হোসেন বাদশা ও রিমন হোসেন। এরপর চূড়ান্ত দল ঘোষণার সময় পারফরম্যান্স বিবেচনায় বাদ পড়েছেন জনি, শ্রাবণ, সাজ্জাদ ও এলিটা কিংসলে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App