×

খেলা

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারের লড়াই শুরু আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৯ এএম

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারের লড়াই শুরু আজ

ইন্টারের প্রতিপক্ষ বেনফিকা, ম্যানসিটির বায়ার্ন

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর লড়াই শেষ হয়েছে ১৫ মার্চ। আট দল নিশ্চত করেছে কোয়ার্টার ফাইনাল। এরপর উয়েফার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের নিওনে কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র অনুষ্ঠিত হয় ১৭ মার্চ । দীর্ঘ বিরতির পর ফের মাঠে গড়াচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।

আজ রাত ১টায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে বায়ার্ন মিউনিখ আর ইন্টার মিলানের মোকাবিলা করবে বেনফিকা।

শেষ ষোলোতে কেউ দাপট দেখিয়ে আবার কেউ দুই লেগ মিলিয়ে কষ্টার্জিত জয় নিয়ে পৌঁছেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট পর্যন্ত। পর্তুগালের ক্লাব এফসি পোর্তোকে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় লেগে তাদের মাঠে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্টার মিলান। আর শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়েছিল বেনফিকা। ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে গনসালো রামোসের জোড়া গোলে ৫-১ ব্যবধানের বড় জয় তুলে নেয় তারা। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-১ ব্যবধানের বড় জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে বেনফিকা।

অপরদিকে লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র ও কিলিয়ান এমবাপ্পের দল পিএসজিকে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে বায়ার্ন মিউনিখ। আর লাইপজিগের বিপক্ষে প্রথম রেগে ১-১ গোলে ড্র করে দ্বিতীয় লেগে ৭-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ম্যানচেস্টার সিটি।

২০২১ সালে এই টুখেলের দূরদর্শিতায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চেলসির কাছে ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ওই সময় চেলসির কোচের দায়িত্বে ছিলেন টুখেল। চ্যাম্পিয়নস লিগের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এমন এক প্রতিযোগিতা, যেখানে নির্ধারিত দিনের খেলার উপর নির্ভর করে ফলাফল। ফুটবলে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। সেজন্য আপনার মধ্যে যেমন আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে, তেমনি প্রস্তুতিও থাকতে হবে। আসন্ন ম্যাচটি হবে ফুটবলে সবচেয়ে বড় পরীক্ষাগুলোর একটি।’

এই চার দল বাদে বাকি চার দল হলো রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, ইন্টার মিলান ও নাপোলি। ইউরোপের সেরা ৫ লিগের মধ্যে লা লিগা থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারে কেবল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রিমিয়ার লিগের দল লিভারপুলকে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-২ ব্যবধানের হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। আর ব্রুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারের পর দ্বিতীয় রেগে ২-০ গোলের জয় তুলে নিয়ে ২-১ ব্যবধানে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে চেলসি। এই দুই দলের মধ্যে হবে চতুর্থ সেমিফাইনালের লড়াই। এছাড়া টটেনহ্যামকে ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে এসি মিলান। আর ফ্রাংকফুটকে প্রথম লেগে ২-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোরে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে নাপোলি। এই দুই দলের মধ্যে হবে তৃতীয় সেমিফাইনালের লড়াই।

একই সঙ্গে সেমিফাইনালে কোন দল কার বিপক্ষে খেলবে সেই লাইনআপও চুড়ান্ত হয়েছে। প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ী দল খেলবে তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট জয়ী দলের বিপক্ষে। অর্থাৎ ইন্টার মিলান ও বেনফিকার মধ্যকার জয়ী দল খেলবে নাপোলি ও এসি মিলানের মধ্যকার জয়ী দলের বিপক্ষে। আর আর দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ী দল খেলবে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল জয়ী দলের বিপক্ষে। অর্থাৎ ম্যানচেস্টার সিটি ও বায়ার্ন মিউনিখের মধ্যকার জয়ী দল খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসি মধ্যকার জয়ী দলের বিপক্ষে। এরপর প্রথম সেমিফাইনাল ও দ্বিতীয় সেমিফাইনালের জয়ী দল আগামী ১০ জুন ফাইনালে মাঠে নামবে। তুরস্কের ইস্তানবুলে হবে এই আসের ফাইনাল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল মাদ্রিদ।

১৯৫৫ সালে ইউরোপিয়ান কাপ নামে উয়েফার হাত ধরে সৃষ্টি হয় নতুন এক ফুটবল আসর। যেখানে অংশ নেয়ার সুযোগ পায় ইউরোপিয়ান বিভিন্ন দেশের সেরা ক্লাবগুলো। ৩৭ বছর পর ১৯৯২ সালে নামে পরিবর্তন করে রাখা হয় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। আসরের শুরুর পাঁচ বছরই শিরোপার মালিক ছিলো রিয়াল। ১৯৬০-৬১ মৌসুমে এসে শেষ হয় রিয়াল আধিপত্য। ট্রফি যায় বেনফিকায়। থাকে দুই মৌসুম। এরপর শুরু হয় ইতালিয়ানদের রাজত্ব।

টানা তিন মৌসুমের একবার মিলান, আর দু’বার ইন্টারের হাতে উঠে ইউরোপিয়ান কাপ। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে ষষ্ঠ শিরোপা জিতে নেয় মাদ্রিদিস্তারা। এরপর অন্তত চার মৌসুম একক রাজত্ব করতে পারেনি কেউ। একবার করে শিরোপা ঘরে তুলে সেল্টিক, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এসি মিলান এবং ফেয়েনুর্ড। পরের ১১ বছর ইউরোপিয়ান কাপ বন্দি ছিল চার ক্লাবের হাতে। শুরুটা করেছিলো আয়াক্স। তিন মৌসুম পর তাদের থেকে নিয়ে যায় বায়ার্ন মিউনিখ। দুই মৌসুম করে ট্রফি ঘরে তুলে লিভারপুল এবং নটিংহ্যাম ফরেস্ট। সেই দশকের শেষ শিরোপা জিতেছিল অ্যাস্টন ভিলা।

১৯৯২ সালে নাম বদলের আগে এ শিরোপায় খুব একটা প্রভাব রাখতে পারেনি কোন ক্লাব। হামবুর্গ, লিভারপুল, পোর্তো, মিলানসহ বুকুরেস্টি এবং রেড স্টাররাও জিতেছিল একবার করে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যুগে প্রবেশের পর প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনা। পরেরগুলো গেছে মার্সেই, মিলান এবং আয়াক্সের ঘরে। ১৯৯৫-৯৬ সালে নতুন এক চ্যাম্পিয়ন পায় ইউসিএল। ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাস। আর পরেরবার জিতে নেয় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।

এরপর ২০১১-১২ মৌসুমে এক চেলসি ছাড়া কখনই আর কোনো নতুন শিরোপার দাবিদার পাওয়া যায়নি চ্যাম্পিয়নস লিগে। ঘুরে ফিরে সেই রিয়াল, মিলান, বার্সেলোনা, ইন্টার, বায়ার্ন, লিভারপুল, ম্যান ইউনাইটেডদের শোকেসেই শোভা বাড়িয়েছে ট্রফিটি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারে ওঠার লড়াই তারিখ প্রতিপক্ষ সময় ১২ এপ্রিল ইন্টার মিলান : বেনফিকা রাত ১টা ১২ এপ্রিল ম্যানচেস্টার সিটি : বায়ার্ন মিউনিখ রাত ১টা ১৩ এপ্রিল এসি মিলান : নাপোলি রাত ১টা ১৩ এপ্রিল রিয়াল মাদ্রিদ : চেলসি রাত ১টা

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App