×

খেলা

নিউক্যাসলকে হারিয়ে শীর্ষে লিভারপুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৩ পিএম

নিউক্যাসলকে হারিয়ে শীর্ষে লিভারপুল

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শনিবার নিউক্যাসলের বিপক্ষে দুর্দান্ত শটে জয়সূচক গোল করেন নাবি কেইতা

ইউরোপে সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আর জমজমাট লিগের জায়গা দখল করে আছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। লিগ ওয়ান ও বুন্দেসলিগার মতো লিগগুলোর শিরোপা যখন নিশ্চিত তখন ৫ ম্যাচ বাকি থাকার পরও এখনো বলা যাচ্ছে না কার হাতে উঠতে যাচ্ছে এবারের ইপিএল শিরোপা। টেবিল টপার ম্যানচেস্টার সিটি নাকি মাত্র এক পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা লিভারপুল। এ মুহূর্তে দারুণ জমে উঠেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। ম্যানচেস্টার সিটি নাকি লিভারপুল কে জিতবে শিরোপা, তা বলা মুশকিল। শনিবার নিউক্যাসলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। শনিবার (৩০ এপ্রিল) প্রতিপক্ষের মাঠে ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। একমাত্র গোলটি করেন নাবি কেইতা। কষ্টের এই জয়ের পর ৩৪ ম্যাচে ২৫ জয় ও ৭ ড্রয়ে লিভারপুলের পয়েন্ট ৮২। এক ম্যাচ কম খেলা সিটি ৮০ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে। পরের ম্যাচে পেপ গুয়ার্দিওলার শিষ্যরা। লিডস ইউনাইটেডকে হারাতে পারলে ফের শীর্ষে পৌঁছে যাবে।

শনিবার প্রত্যাশিত আক্রমণাত্মক শুরুর পর ১৯তম মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল পেয়ে যায় লিভারপুল। ডি-বক্সের বাইরে দিয়োগো জটাকে বল দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন কেইতা। এরপর ফিরতি পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বাঁ-পায়ের শটে দলকে এগিয়ে নেন গিনির মিডফিল্ডার।

৩৯তম মিনিটে জালে বল পাঠান নিউক্যাসলের মিগেল আলমিরন। তবে প্যারাগুয়ের এই মিডফিল্ডার অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ৬৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন সাদিও মানে। ডান দিক দিয়ে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে আক্রমণে ওঠা জো গোমেজ বল বাড়ান বক্সের মুখে। কিন্তু অবিশ^াস্যভাবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন দারুণ ছন্দে থাকা সেনেগালের ফরোয়ার্ড।

অন্য দিকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে গত ম্যাচের পরই। চার ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে পচেত্তিনোর দল। যে কারণে লিগের বাকি চার ম্যাচ তাদের জন্য আনুষ্ঠানিকতার। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের ম্যাচেই মাঠে নেমে তারা ড্র করে ফিরেছে। স্ত্রাসবুর্গের বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তে যোগ করা সময়ে গোল হজম করে ম্যাচ ৩-৩ গোলে ড্র করেছে পিএসজি। পিএসজির ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে করেছেন জোড়া গোল এবং আরেকটি গোল এসেছে আশরাফ হাকিমির পা থেকে। ম্যাচের শুরুতেই কেভিন গামেইরোর গোলে এগিয়ে যায় স্ত্রাসবুর্গ। এরপর ৩-১ গোলে পিছিয়েপড়া দলটি মার্কো ভেরাত্তির আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমায় এবং দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে অ্যান্থনি কাচির গোলে ফেরায় সমতা।

নিজেদের মাঠে শুরুটা ভালোই করেছে স্ত্রাসবুর্গ। ম্যাচের মাত্র ৩ মিনিটেই কেভিন গামেইরোর গোলে এগিয়ে যায় তারা। স্ত্রাসবুর্গের পেরিন দারুণ গতিতে প্রেসনেল কিম্পেম্বেকে পেছনে ফেলে পাস দুর্দান্ত এক থ্রু বল বাড়ান গামেইরোর উদ্দেশ্যে, আর সেই বল থেকে বেশ কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকেই পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারুমাকে পরাস্ত করেন তিনি। গোল খাওয়ার পর প্রতিপক্ষের মাঠে যেন খেই হারিয়ে ফেলে পিএসজি। শুরুতে নিজেদের রক্ষণ সামলাতেই বেশি ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। ৮ মিনিটে অল্পের জন্য গোলমুখে চমৎকার ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি গামেইরো। এর পরের মিনিটেই আবারো জালে বল পাঠায় স্ত্রাসবুর্গ, কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় গোলটি।

আস্তে আস্তে নিজেদের গুছিয়ে নিতে আক্রমণে যায় পিএসজি। ১৮ মিনিটে নেইমারের কর্নারে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ডিফেন্ডার সের্হিও রামোস। এর পাঁচ মিনিট পর ম্যাটের ২৩ মিনিটে চমৎকার ফিনিশিংয়ে সমতা আনেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। পিএসজির রক্ষণে পেরিন বল হারালে তা কিম্পেম্বের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। এরপর তিনি পাস দেন নেইমারকে। কিছুটা এগিয়ে মাঝমাঠ থেকে বাঁয়ে এমবাপ্পেকে খুঁজে নেন নেইমার। আড়াআড়ি ভেতরে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। এর একটু পর লিওনেল মেসির ফ্রি কিক ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। ৩১তম মিনিটে ব্যর্থ করে দেন নেইমারের শটও। ১-১ গোলে সমতায় থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬৪ মিনিটে পিএসজিকে এগিয়ে দেন আশরাফ হাকিমি। নেইমারের ডিফেন্স চেরা পাসে ফাঁকায় থাকা হাকিমিকে কাটব্যাক করেন এমবাপ্পে। এরপর পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে সহজেই জালে বল জড়ান হাকিমি। এর চার মিনিট পরেই আবারো স্ত্রাসবুর্গের জালে দ্বিতীয়বার বল জড়ান এমবাপ্পে। গোলরক্ষকের উদ্দেশে ডিফেন্ডার জিকুর ভুল ব্যাক পাস ধরে ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।

তখনো মনে হতেই পারে পিএসজি এই ম্যাচটিতে জয় পেতে চলেছে। কিন্তু এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্বাগতিক দলটির কাছে। ৭৫ মিনিটে কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে হাবিব দিয়ালোর হেড ভেরাত্তির গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না পিএসজি গোলরক্ষক দোন্নারুম্মার। ম্যাচে ফিরে আসে স্ত্রাসবুর্গ। ৮৪ মিনিটে মেসির পাসে একটুর জন্য শট নিতে পারেননি এমবাপ্পে। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের পাস আরেকটু গতিময় হলেই হয়তো হ্যাটট্রিক করে ফেলে পারতেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। এর পাঁচ মিনিট পর মেসির শট ঠেকিয়ে দেন স্ত্রাসবুর্গ গোলরক্ষক।

এরপরও নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়েই ছিল পিএসজি। কিন্তু এরপরই স্বাগতিকদের সমতায় ফেরায় অ্যান্থনি কাচি। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করে দলকে পয়েন্ট হারানো থেকে বাঁচিয়ে দেন কাচি। ৩-৩ গোলে সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় পচেত্তিনোর শিষ্যদের। ৩৫ ম্যাচে ২৪ জয় ও ৭ ড্রয়ে চ্যাম্পিয়ন পিএসজির পয়েন্ট ৭৯। তবে এই এক পয়েন্টের সুবাদে লিগ টেবিলের পাঁচ নম্বরে থাকা স্ত্রাসবুর্গের আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে এখনো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App