×

খেলা

অপরাজিত ঢাকা আবাহনীকে থামিয়ে দিল চট্টগ্রাম আবাহনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২২, ১০:৩৫ পিএম

অপরাজিত ঢাকা আবাহনীকে থামিয়ে দিল চট্টগ্রাম আবাহনী

বাংলাদেশ ফুটবল প্রিমিয়ার লিগে মঙ্গলবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে ঢাকা আবাহনীর কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেসকে তিন দিক থেকে ঘিরে ধরেছে চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবলাররা। ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশ ফুটবল প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে মঙ্গলবার ঢাকা আবাহনীকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে একটি করে গোল করেছেন থ্যাঙ্কগড, উইলিয়াম তোয়ালা ও ওমিদ পপলজয়। ঢাকা আবাহনীর হয়ে একটি করে গোল করেছেন ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস ও রাফায়েল অগাস্তো। মঙ্গলবার দিনের আরেক ম্যাচে স্বাধীনতা সংসদ ক্রীড়াচক্রকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে জামাল ভূঁইয়ার সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। সাইফের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন এমেকা অগবাগ এবং একটি করে গোল করেছেন বাইসেঙ্গে ও আসরোর গফুরোভ।

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই আবাহনী মুখোমুখি হয়েছিল। টান টান উত্তেজনায় দুই দলই আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলেছে। ম্যাচের প্রথমে লিড পেয়েও শেষ পর্যন্ত হেরেছে ঢাকা আবাহনী। আক্রমণে উঠে বারবার গোল করতে ব্যর্থ হচ্ছিল আকাশি নীল জার্সিধারীরা। আকাশি-নীলদের অধিনায়ক নাবীব নেওয়াজ জীবন বেশ কয়েক বার বল পেয়ে গোলপোস্টের উপর দিয়ে শট নিয়েছেন। শেষদিকে গোল করতে ব্যর্থ হলেও ম্যাচের মাত্র ১৬ মিনিটেই ডানিয়েল কলিন্দ্রেসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ঢাকা আবাহনী। তবে ম্যাচে ফিরতে চট্টগ্রাম আবাহনীর বেশ একটা সময় লাগেনি। প্রথম গোল হজম করার প্রতি আক্রমণেই ম্যাচে ফিরেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের ২০ মিনিটে থ্যাঙ্কগডের গোলে ১-১ তে সমতায় ফেরে তারা।

এরপর ৩৭ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবলার উইলিয়াম তোয়ালা। প্রথমার্ধে অনেক চেষ্টা করেও গোলের দেখা পায়নি পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত অপরাজিত থাকা ঢাকা আবাহনী। বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধের ৬২ মিনিটে সমতায় ফেরার লক্ষ্যে আক্রমণে উঠে ঢাকা আবাহনী। কিন্তু তাদের ভুল পাসে বল পেয়ে তিন পাসে প্রতি আক্রমণে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৩-১ গোলে এগিয়ে দেন আফগান ফুটবলার ওমিদ পপলজয়। তৃতীয় পাসে বল পেয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে সহজেই পরাস্ত করেছিল এই আফগান ফুটবলার।

এরপর ম্যাচের ৮৯ মিনিটে গোল করে ব্যবধান কমিয়েছিলেন ঢাকা আবাহনীর রাফায়েল অগাস্তো। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আর কোনো গোল না হওয়ায় ৩-২ গোলের ব্যবধানে জীবনদের হারায় চট্টগ্রাম আবাহনী। প্রিমিয়ার লিগের এ ম্যাচের আগে ঢাকা আবাহনী অপরাজিত ছিল। ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচসহ ৬ ম্যাচে ১টি ড্র ও ৪টি জয় পেয়েছিল ঢাকা আবাহনী। ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ঢাকা আবাহনী। ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে শেখ রাসেলকে হারিয়ে শীর্ষে উঠেছিল বসুন্ধরা কিংস। মঙ্গলবারের ম্যাচে ঢাকা আবাহনী জিততে পারলে আবারো শীর্ষস্থান অর্জন করতে পারত আকাশি-নীল জার্সিধারীরা।

প্রিমিয়ার লিগের আরেক ম্যাচে রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে কোনোভাবেই দাঁড়াতে দেননি সাইফের ফুটবলাররা। প্রিমিয়ার লিগের এ আসরে দারুণ শুরু করেছিল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়ে তৃতীয় ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় তারা। তৃতীয় ও চতুর্থ রাউন্ডে পরপর দুই ম্যাচে হারের স্বাদ পায় দলটি। পঞ্চম রাউন্ডে ড্র করে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে উঠে আসে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। তারপর ষষ্ঠ রাউন্ডে বড় ব্যবধানে জয় তুলে আবারো জয়ে ফিরে জামাল ভূঁইয়ারা। শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা করে ফেলে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংসদকে। ম্যাচের দ্বাদশ মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিল। স্বাধীনতার গোলরক্ষকের জন্য লিড নিতে পারেননি জামাল ভূঁইয়ারা।

এরপর মাত্র তিন মিনিট পর সাফল্য পায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন এমেরি বাইসেঙ্গে। তবে ১৯ মিনিটেই সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়ে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল জয়নাল আবেদিন দিপু। স্বাধীনতা সমতায় ফেরতে ব্যর্থ হলেও লিডকে দ্বিগুণ করতে ভুল করেননি অগবাগ। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডি-বক্সে প্রবেশ করে তিন ডিফেন্ডারকে প্রতিহত করে আড়াআড়ি শটে সাইফকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন তিনি। প্রথমার্ধে কোনো গোল করতে না পারায় ২ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাধীনতা ক্রীড় সংসদ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান কমাতে আক্রমণে উঠেছিল স্বাধীনতা ক্রীড়া সংসদ।

তবে গোলের দেখা না পেয়ে উল্টো হজম করতে হয়েছে আরেকটি গোল। ৪৬ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে ৩-০ ব্যবধান করেন আসরোর গফুরোভ। তিন মিনিট পরই ফ্রি কিক পেয়ে উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার মাভলোনোভ সরাসরি শটে বলকে জালে জাড়িয়ে গোল ব্যবধান কমিয়ে আনেন। উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডারের গোলে কিছুটা সময় স্বাধীনতা স্বস্তিতে থাকলেও বাকি সময়ে অগবাগের আধিপত্য ছিল দেখার মতো। পরের ৯ মিনিটে জোড়া গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন অগবাগ। ৭০ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে আক্রমণে ওঠে রক্ষণভাগের দুইজনকে কাটিয়ে ব্যবধানকে ৪-১ করেন এই নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড।

এরপর ৭৯ মিনিটে তৃতীয় গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করে নেন অগাবগ। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রসকে হেডের মাধ্যমে জালে জড়িয়ে ৫-১ ব্যবধানে সাইফের জয়কে প্রায় নিশ্চিত করেন তিনি। চলতি লিগে প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেন অগবাগ। সব মিলিয়ে লিগে এটি তৃতীয় হ্যাটট্রিক। আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড দোরিয়েলতন প্রথম হ্যাটট্রিক করেন। দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকটি করেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর পিটার থ্যাঙ্কগড। তৃতীয় হ্যাটট্রিক পেলেন সাইফ স্পোর্টিংয়ের এ ফুটবলার। এ জয়ের মাধ্যমে ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে আছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App