লিগ খেতাবের দৌঁড়ে তরতর করে এগিয়ে চলা রিয়াল মাদ্রিদের গাড়িতে ব্রেক লাগানোর বড় সুযোগ ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে। কিন্তু ২৭৯তম মাদ্রিদ ডার্বিতে দিয়োগো সিমিওনের দলকে আবারও শূন্য হাতেই সান্তিয়াগো বার্নাবেউ থেকে ফিরতে হল। রিয়ালের হয়ে চেনা নায়কেরাই জ্বলে উঠলেন অ্যাটলেটির বিরুদ্ধে প্রথম ডার্বিতে।

একদিকে করিম বেঞ্জেমা, মার্কো অ্যাসেন্সিও গোল করলেন। আরেকদিকে লুকা মদ্রিচ মাঠের মধ্যভাগে অবস্থান করে পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করলেন- এই চিত্র মাদ্রিদ সমর্থকদের অতিপরিচিত। তবে গোল না পেলেও প্রথমবারের মতো ম্যাচে এক নয় জোড়া অ্যাসিস্ট এল ভিনিসিয়াস জুনিয়ারের পা থেকে। দ্বিতীয়ার্ধ্বের শুরুতে দুই গোল লস ব্লাঙ্কোসকে ডিসেম্বরেই কার্যত লা লিগা খেতাবে এক হাত এগিয়ে নিল। রিয়ালের বিরুদ্ধে ফের একবার যথেষ্ট লড়াই করে ভাল খেলেও ২-০ ফলাফলে খালি হাতেই স্পেনের রাজধানীর অপর প্রান্তের ছোট্ট সফর করতে বাধ্য হল অ্যাটলেটি। এই নিয়ে নাগাড়ে ১১ নম্বর ডার্বি জিততে ব্যর্থ হল সিমিওনের দল। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

বেঞ্জেমা ম্যাচের ১৬ মিনিটে দুর্দান্ত ভলিতে অ্যাটলেটি গোলরক্ষক ইয়ান ওব্ল্যাককে সম্পূর্ণভাবে হেরে রিয়ালকে এগিয়ে দেন। বক্সের ধারেকাছে সাত জন অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডারের বিরুদ্ধে একা থাকলেও নিজের অসামান্য স্পেস রিডিং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সকলে মাত দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চলতি মৌসুমে এটি তার ১৩তম লিগ গোল। সদ্য চোট সারিয়ে এই ম্যাচের জন্য তড়িঘড়ি বেঞ্জেমাকে ফেরানো হয়। কিন্তু কার্লো আনসেলত্তি দলের এই তারকা ফরোয়ার্ডকে নিয়ে আর বেশি ঝুঁকি নিতে রাজি না থাকায় প্রথমার্ধের পরেই তাঁকে প্রত্যাহার করে নেন।

পিছিয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার উদ্দেশ্যে থমাস লেমার এবং জাও ফেলিক্সকে নামান অ্যাটলেটিকো কোচ। মাঠে নামার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দুজন মিলে অ্যাটলেটিকোর হয়ে ভাল সুযোগ তৈরি করলেও তা রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়া সেভ করে দেন। দুরন্ত ফেলিক্সে ভর করে অ্যাটলেটিকোর লাগাতার আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়া রিয়াল মাদ্রিদ এক মুহূর্তের হালকা সুযোগকে কাজে লাগিয়েই ম্যাচ শেষ করে দেয়। সমতায় ফেরার লক্ষ্যে মরিয়া অ্যাটলেটিকো দলের বিরুদ্ধে প্রতিআক্রমণে লুকা জভিচের লম্বা পাস ভিনিসিয়াস রিসিভ করে অ্যাসেনসিওয়ের উদ্দেশ্যে পা বাড়ান যার থেকেই আসে ৫৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোল।

ম্যচের বাকি ৩০ মিনিটে আরও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে অ্যাটলেটিকো। লেমারের জোড়া শট সেভ করে কোর্তুয়া, লুইস সুয়ারেজ গোলের সামনে ভাল সুযোগ পেয়েও বলের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। এমনকি ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ফেলিক্সে জোরাল শট অবধি কোর্তুয়া সেভ করে অ্যাটলেটিকোকে সান্ত্বনার এক গোলও করতে দেননি। এই জয়ের ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেভিয়ার থেকে আট পয়েন্ট ও চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকোর থেকে ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে ৪২ পয়েন্টে রয়েছে রিয়াল। ১৭ ম্যাচ খেলা লস ব্লাঙ্কোসের থেকে অবশ্য সেভিয়া, অ্যাটলেটিকো একটি ম্যাচ কম খেলেছে।