×

প্রবাস

পর্তুগালের আতংকের নাম কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য

Icon

হাফিজ আল আসাদ, লিসবন থেকে

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম

পর্তুগালের আতংকের নাম কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য

ছবি: সংগৃহীত

স্বপ্নের দেশ ইউরোপে পারি জমানোর জন্য অনেক আশা ও বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে আসেন বাংলাদেশীরা। কিন্তু পর্তুগালে এসে বাংলাদেশীদের কাছেই প্রতারণা শিকার হন অনেক বাংলাদেশী ।

সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট বা সেনজেন ভিসা না পেয়ে সড়কপথে ইউরোপের আসেন অনেক বাংলাদেশী। বড় সমস্যা হচ্ছে সড়কপথে আশা মানুষগুলো ইউরোপের অন্য সব দেশে অবৈধ হয়ে পড়লে বৈধ হওয়ার আশায় চলে আসে পর্তুগালে।

পর্তুগালে প্রথমে অবৈধ থেকে বৈধ হওয়ার জন্য মাইগ্রেন্টকে সেফ এন্ট্রি করতে হয় এবং একটি কন্ট্রাক্ট চালু করতে হয় যার মাধ্যমে সরকারকে ট্যাক্স প্রদান করতে হয়। এই ট্যাক্সের উপর নির্ধারণ করেই মাইগ্রেন্টকে এখানকার টিআরসি বা টেম্পোরারি রেসিডেন্ট কার্ড দেয়া হয়।

পর্তুগালে বৈধ হওয়ার পদ্ধতি খুবই সহজ। মাইগ্রেন্টরা সহজেই টাকার বিনিময়ে এখানে কন্ট্রাক্ট জব কিনতে পারেন। 

সুত্র বলছে, এখানকার বেশীরভাগ জব কন্ট্রাক্টই সাধারণত ভুয়া হয়ে থাকে। আর এসকল ভুয়া জব কন্ট্রাক্ট কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এখানকার মাইগ্রেন্ট বাংলাদেশীরা। 

কথা হয় কুমিল্লা থেকে মাইগ্রেন্ট হয়ে আসা মামুনের সঙ্গে। তিনি জানান টানাটানি সংসারে দারিদ্রতা ছিল তার নিত্যদিনের সঙ্গী। উন্নত জীবনের আশায় প্রথমে তিনি পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকে। ইরাক থেকে সড়কপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৬ দেশ পার হয়ে পাড়ি জমান স্বপ্নের ইউরোপে। বুক ভরা আশা নিয়ে স্বপ্নের দেশে আসলেও স্বপ্ন যেন তার দুঃস্বপ্নে রূপ নেয়। পর্তুগাল আসার পরে কোন কাজ না পেয়ে তিনি চরম হতাশায় মধ্যে পড়েন। 

এমন পরিস্থিতিতে কয়েকমাস পর বাধ্য হয়ে সে ফুড ডেলিভারির কাজ শুরু করে। কিন্তু বৈধ কোন জব কন্ট্রাক্ট না থাকার কারণে তিনি বিড়ম্বনায় পড়েন। পরে এক বাঙালি দালালের কাছ থেকে ১ হাজার ইউরোর বিনিময়ে একটি জব কন্ট্রাক্টের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু হাতে পাওয়ার পরে জানতে পারেন এটি একটি ভুয়া কন্ট্রাক্ট। ফেলে গচ্চা যায় তার পুরো টাকাটাই। 

সব কিছু হারিয়ে বিদেশের মাটিতে এখন নিঃস্ব অবস্থায় আছেন মামুন । তিনি ভোরের কাগজ কে বলেন, ‘আমি এই সব দালাল প্রতারকদের বিচার চাই। বিদেশের মাটিতে আমার মতো যেন আর কোন বাংলাদেশী ভাইয়ের সব কিছু হারিয়ে এমন নিঃস্ব হতে না হয়।’

অনেক বাংলাদেশীদের মনে করেন বাঙালি কমিউনিটির নেতারা যদি এখনি এসব দালাল ও প্রতারকদের লাগাম টানতে না পারে তবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হবে। অনিয়মের সঙ্গে যুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যেন আর কোনো বাঙালি এ ধরনের প্রতারণা শিকার না হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App