×

প্রবাস

নষ্ট সময়ের কিছু কথা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০২ পিএম

নষ্ট সময়ের কিছু কথা
আমেরিকার অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার মিয়ামি থেকে ফেরার পর প্রথম রাতে ঘুম হলেও পরের রাতে ঘুম আসছে না। রাত চারটে বাজে, সময় পার হয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলায় নাকি সময় নষ্ট করেছি আমি, পরিবারের অনেকে সেটা বলে। এখন আমাকে নষ্ট করছে সময়, তা না হলে রাত চারটে বাজে অথচ চোখে ঘুম নেই কেন? এই যে একটি রাত পার হয়ে গেল ঘুম ছাড়া, এতে করে স্বাভাবিকভাবেই দিনে বেশ ক্লান্ত লাগবে। হয়তো শরীর খারাপ লাগবে এবং একটি অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হবে আমার শরীরের মধ্যে। তার মানে কি দাঁড়ালো? সময় আমাকে নষ্ট করছে। আসলে ঘটনাটি তেমন না, আজীবন রাতে ঘুমাই, হঠাৎ আজীবনের সেই রুটিনের কিছুটা পরিবর্তন হলে যা হয় আরকি। আমরা যখন রাগের মাথায় কিছু করি, রাগ সরে গেলে বেশিরভাগ সময় কিন্তু লজ্জাবোধ করি সেই কর্মের কথা ভেবে। পৃথিবীর সব মানুষ যদি রেগে কিছু না করতো এবং পরে লজ্জা না পেতো তবে অনেক সময় নষ্ট হতো না এবং সে সময়গুলো ভালো কাজে ব্যয় করা যেত— এটাই সবাই বলবে। আমি এসব বিষয় নিয়ে ভেবে অনেক সময় নষ্ট করি, আজ পুরো রাতটাই কেটে গেল এসব বিষয় নিয়ে। পরে সকালে ভেবে দেখলাম যদি সারা রাত ঘুমাতাম তাহলেও কিন্তু সময় ঠিকই চলে যেত। তবে আমার পুরো শরীর ক্লান্তি দূর করতো। হয়তো সকালে নিজেকে একটু ফ্রেশ মনে হতো ঠিকই, কিন্তু না ঘুমানোর ফলে নষ্ট সময়কে কাজে লাগিয়ে পুরো চিন্তাটিকে লিখছি আর ভাবছি, এটা কিন্তু কম কথা নয়। আসলে জীবনের কোনো সময়ই কখনও নষ্ট হয়নি। নষ্ট হয়েছে যা কিছু করেছি সেগুলোর মূল্যায়ন না করার কারণ। প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের জন্য আশীর্বাদ, সেটা ভুলে আমরা পরাজয়ের গ্লানিতে ডুবেছি। অথচ ভাবিনি কখনও পরাজয়ই মূলত পরবর্তী সময়ে জয়ের সন্ধান দিয়েছে। আজকের এই না ঘুমানো রাতটি আমাকে অনেক তথ্য দিয়ে সাহসী করেছে। সাহসী করেছে পরাজয়কে মেনে নিতে। যেমন কত শত বার আমেরিকা ভ্রমণ করেছি, অথচ এবার যে বিষয়গুলো নিয়ে ভেবেছি অতীতে সেগুলো কখনও ভাবিনি। আমেরিকা এত বড় একটি ক্ষমতাশীল দেশ, সারা বিশ্বকে দমন করতে তারা সারাক্ষণ ব্যস্ত। গণতন্ত্রের মন্ত্রতন্ত্র বলে যেখানে সেখানে দেশটি ঢুকে নান্ডিভাস্টি পরিবেশ সৃষ্টি করে ফিরে এসেছে। এ অবদি কোথাও গণতন্ত্রের পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি। পারেনি তার নিজ দেশের সব মানুষকে সুন্দর পরিবেশ দিতে। এখনও হোয়াইট হাউজের চারপাশজুড়ে না খেতে পারা, অন্ন-বস্ত্র এবং নিজ বাসস্থান ছাড়া হাজারও মানুষের ভিড় দেখা যায়। মিয়ামি শহরের অবস্থা দেখলে ঢাকার ফুটপাতের কথা মনে করিয়ে দেয়, কিন্তু কেন? কোটি কোটি মানুষের অভিশাপ নাকি রাষ্ট্রের ব্যর্থতা? জানি না। তবে কিছু একটা হবে এ বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিত। আমেরিকাতেও সাধারণ জীবন ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। সব কিছুতেই অসাধারণের ছোঁয়া। যেমন আকাশ ছোঁয়া অট্টালিকা, সাগর ভরা পানি, সেভেন ইলেভেন কাজ আর শহর-ভরা দূষিত বায়ু সেখানেও, বাংলাদেশের মতো অতটা না হলেও বেশ বিদ্যমান আমাদের সুইডেনের তুলনায়। বড় লোকের সময় নষ্ট, গরীবের নষ্ট জীবন আর আমার গেছে অর্থ নষ্ট এবারের ভ্রমণে। কিন্তু তাতে ক্ষতি নেই, ক্ষতি হতো যদি কিছু না লিখে যেতাম। শেয়ার করলাম অভিজ্ঞতা, যদি কখনও, কোনোদিন কাজে লাগে, তা না হলে ধরে নেব আমার ভ্রমণটি ছিল বাজে, অর্থহীন এবং মূল্যহীন। রাত পোহালেই ১০ ডিসেম্বর। হতাশা নয় প্রত্যাশা, অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনায় ভরা একটি দিন। আজ বিশ্ববাসীর সম্মুখে এসে হাজির হবে কিছু মহামানব যারা নতুনত্বের বার্তা বাহক, নোবেল লরিয়েট। আজকের দিনটি দেবে মানব জাতিকে হোপ ও প্রেরণার বার্তা নানা বিষয়ের ওপর, যা আমাদের সবাইকে দেবে বেচে থাকার উদ্দীপনা, তেমন একটি আশা নিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন থেকে, [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App