প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বিতরণের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সোমবার (১০ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে আবু ধাবিতে ভোটারদের হাতে তা তুলে দেয়া হবে। এর ফলে দেশের বাইরে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে চান। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় অনেকে হুণ্ডির মাধ্যমে দেশে অবৈধ উপায়ে অর্থ পাঠান। এখন এ জটিলতা কেটে গেলে তারা বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাবেন, যা দেশের রিজার্ভ বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এ সেবা মোবাইল ব্যাংকি সহ নাগরিকদের নানা ধরনের কাজেও লাগবে। সোমবার এই নির্বাচন কমিশনার, সেখানকার রাষ্ট্রদূত, কনসাল জেনারেলের উপস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়ত্র প্রদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিবন্ধন করা শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়ত্র দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় মে মাসে ইসির নিজস্ব দলের (কারিগরি ও প্রশাসনিক) সহযোগিতায় দূতাবাস সংশ্লিষ্ট জনবলকে এ বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি স্থাপন, নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা, স্থানীয় মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানোসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হয়। এরপর জুনে আবু ধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেলের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু হয়। এখন থেকে ১৫ বছর আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার দাবি উঠে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা পেরিয়ে কে এম নূরুল হুদা কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর মহামারীতে সেই উদ্যোগ থমকে যায়। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আবার সেই কাজে গতি আনার উদ্যোগ নেয়। এখন পর্যন্ত এনআইডি পেতে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপে থাকা পাঁচ হাজারেও বেশি প্রবাসী নাগরিক আবেদন করেছেন। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গণমাধ্যমকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফলভাবে পরীক্ষামূলক কাজটির পর আগামী এক বছরে অন্তত ১৫টি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সেবা শুরুর প্রচেষ্টা হবে। এরমধ্যে বেশি রেমিটেন্স আসে এমন দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।