বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হবে কাল সোমবার। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৩ এর মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হবে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহিদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানবতা-কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ধারণ করে ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান শান্তি মিশনে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের পতাকাতলে একতাবদ্ধ হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্য। ১৯৯৩ সালে শান্তি মিশনে যোগ দেয় নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী। এরপর নামিবিয়া মিশনে’র মাধ্যমে ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ পরিবারের সদস্য হয় বাংলাদেশ পুলিশ।
ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক মতাদর্শ ও আঞ্চলিক বৈষম্যকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিজেদের উৎসর্গ করেছে বিশ্ব মানবতার সেবায়। পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা ও মানবিকতার কারণে বিশ্বের সব মানুষের কাছে এখন দৃষ্টান্ত তারা। দীর্ঘ চার দশকের শান্তিরক্ষার ইতিহাসে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪০টি দেশে ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে ১৪টি দেশে আমাদের ৭ হাজার ৪৩৬ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ও কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে। যার মধ্যে নারী রয়েছে ৫৭২ জন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সর্বমোট ১৬৭ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। চলতি বছর পাঁচজন শহীদ শান্তিরক্ষীর পরিবারবর্গ ও পাঁচজন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে গতকাল রবিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আজ সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন প্রধান অতিথি হিসেবে সকাল বেলা শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৩ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকট-আত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন থাকবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানবতা-কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ধারণ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের পদযাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মধ্য দিয়ে। সেই থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ পুলিশের ২১ হাজার ২৮৪ জন শান্তিরক্ষী ২১টি দেশের ২৩টি মিশনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, সাইপ্রাস, সাউথ সুদান, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, লিবিয়া ও সুদান এ ৭টি দেশে বাংলাদেশ পুলিশের ১৫৭ জন নারীসহ ৫১২ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।
© ভোরের কাগজ 2002 – 2020
প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী । মুদ্রাকর: তারিক সুজাত
কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, তৃতীয় তলা, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, (নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ), ঢাকা-১২১৭ ।
ফফোন: ৯৩৬০২৮৫, ৮৩৩১০৭৪ ফ্যাক্স: ৯৩৬২৭৩৪, সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন : ৮৩৩১৮০৬ । ইমেইল: [email protected]