Print

Bhorer Kagoj

রেমিট্যান্স বাড়াতে বিকল্প উদ্যোগ নিন

প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ২, ২০২২ , ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০২২, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক

নানা ইস্যুতে রেমিট্যান্স কমছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি দমন করার কথা বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আমরা দেখছি না। গতকাল ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনার দাপট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশের অর্থনৈতিক খাতে রেমিট্যান্সের গতি কমে গেছে। এর পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে টাকা আসায় রেমিট্যান্সে এর প্রভাব পড়ছে না। অবস্থা বিবেচনায় সরকার বৈধ উপায়ে টাকা আনাসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গুরুত্বের কথা বলছে। খুঁজছে নতুন নতুন শ্রমবাজারও। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানি। আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখনো জনশক্তি রপ্তানির প্রধান টার্গেট। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানির বাজার দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। তবে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে রোমানিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ২০টি দেশ। এ দেশগুলো হতে পারে আমাদের শ্রমবাজারের নতুন ডেস্টিনেশন। সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সম্ভাবনা থাকলেও অনিশ্চয়তা কাটছে না। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সরকার চলতি বছর রেকর্ডসংখ্যক শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে চায়। গ্রিস, ইতালি, রোমানিয়ার মতো উন্নত দেশে নতুন করে শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরাও চাই সরকারের উদ্যোগে কর্মী প্রেরণের পথ সুযোগ হোক। এতে করে রেমিট্যান্সেও স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। অন্যদিকে হুন্ডি প্রতিরোধের কথা বলা হচ্ছে। হুন্ডি হচ্ছে অর্থ পাচারের একটি ভয়ংকর রূপ ও মাধ্যম। অভিযোগ আছে, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। এই অভিযোগ যে অমূলক নয়, তা স্পষ্ট হয় হুন্ডি ব্যবসায়ীদের প্রভাব বিস্তারের প্রবণতা থেকে। মুহূর্তের মধ্যে তারা বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষমতা রাখে। হুন্ডির মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিদেশে অর্থ পাচার করে বাড়ি বানাচ্ছেন, জমি কিনছেন, কারখানা গড়ছেন। বিদেশে অর্থ পাচার হলে দেশের অর্থনীতির ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাতে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কোনোভাবেই অর্থ পাচার রোধ করা যাচ্ছে না, তেমনি পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কোনো প্রচেষ্টাও আমরা দেখছি না। এ পর্যন্ত অর্থ পাচার রোধে যত কথা হয়েছে, সে অনুপাতে কি কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? হয়নি। অর্থ পাচার রোধ কঠিন বিষয় নয়। সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সব বিভাগেরই যদি সমতৎপরতা থাকে, এটি রোধ করা সম্ভব। গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি চক্র প্রায় ৩ কোটি টাকা হুন্ডি করেছে। শুধু তাই নয়, এমএফএসের দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন করেছে বলে তথ্য পেয়েছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিট। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আলাপ-আলোচনার কথাও শোনা যায় জোরেশোরে। কিন্তু কার্যত সেই উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সংকট থেকে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বেরিয়ে আসতে হলে রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে, পণ্যের গুণগত মান বাড়াতে হবে এবং দক্ষ জনবল বিদেশে পাঠাতে হবে। এটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রডাক্ট ডাইভারসিফাই করে রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে।

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

© ভোরের কাগজ 2002 – 2020

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী । মুদ্রাকর: তারিক সুজাত

কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, তৃতীয় তলা, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, (নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ), ঢাকা-১২১৭ ।
ফফোন: ৯৩৬০২৮৫, ৮৩৩১০৭৪ ফ্যাক্স: ৯৩৬২৭৩৪, সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন : ৮৩৩১৮০৬ । ইমেইল: [email protected]