Print

Bhorer Kagoj

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৮০ বিলিয়ন ডলার: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ৬:২৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২, ৬:২৯ অপরাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক

মহামারীর সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই নতুন রপ্তানি নীতিতে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে দেশের রপ্তানি আয়কে আট হাজার কোটি বা ৮০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমাদের বিদ্যমান রপ্তানি বাণিজ্যের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এটিকে বাড়িয়ে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রেক্ষাপট এবং দেশীয় সক্ষমতা বিবেচনা করেই নতুন এই লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এজন্য আনুষঙ্গিক যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলোর জন্য যা যা করা দরকার করা হবে বলে জানান তিনি।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২০২১-২০২৪ মেয়াদে এ নীতি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত রপ্তানির একটা নীতিমালা আমরা অনুমোদন দিয়েছি। আমাদের বিদ্যমান রপ্তানি বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এটাকে বাড়িয়ে ৮০ বিলিয়ন ডলারে নির্ধারণ করেছি। এর জন্য যেসব অ্যামেন্ডমেন্ট ও অ্যাডজাস্টমেন্ট করা দরকার সেগুলো করা হবে।

সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৪ হাজার ৫৩৭ কোটি ডলার। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাত থেকে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয় হবে বলে সরকার আশা করছে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে পণ্য রপ্তানিতে ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এ সময়ে ২ হাজার ৪৬৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে; গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যা ছিল এক হাজার ৯২৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। মহামারীর কারণে গত বছর বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

রপ্তানি লক্ষ্য বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু নীতিগত পরিবর্তন আনার কথাও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, নতুন নীতিতে অগ্রাধিকারমূলক খাতে সম্ভাবনাময় কিছু পণ্য ও সেবা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কৌশল গ্রহণ করে রপ্তানি বাণিজ্য কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কর্মকৌশল নিয়েও বিস্তারিত পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে টেকসই নীতিকৌশল গ্রহণে উৎসাহিতকরণ, আইসিটি ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজসহ অন্যান্য সেবাখাতে সুবিধা দেয়া, রপ্তানিমুখী সব খাতে একইভাবে নীতিসুবিধা দেয়া, নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের রপ্তানিতে সম্পৃক্ততা বাড়ানো, আমদানি নীতি আদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোর সামঞ্জস্য রাখা, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজীকরণে বিশেষ নজর দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে নতুন রপ্তানি নীতিতে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কমপ্লায়েন্স ও স্ট্যান্ডার্ড’ প্রতিপালনে খাতভিত্তিক সুপারিশ আনা হয়েছে নতুন নীতিতে। ইন্টারমিডিয়েট ও রিসাইকেলড পণ্য উৎপাদনে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পণ্য ও সেবা বহুমুখীকরণের সুপারিশ করা হয়েছে। রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, হালাল পণ্য উৎপাদন ইত্যাদি প্রসঙ্গেও রয়েছে দিক নির্দেশনা। সব মিলিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডিংকে জোরদার করার কথা বলা আছে।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ট্র্যাপের মধ্যে পড়াটা আমাদের জন্য কার্যকর নয়। ২০৪১ সাল পর্যন্ত আমরা যে পরিকল্পনা করেছি, সেখানে বাৎসরিক আমাদের প্রক্ষেপণ এবং বাস্তবায়ন সবকিছু উল্লেখ করা আছে। আমি মনে করি অন্যদের সঙ্গে আমাদের মেলানো যাবে না। মুস্তফা কামাল বলেন, যদি ভিয়েতনামের কথা বলেন, তাদের বিনিয়োগ অলমোস্ট আসে বাইরে থেকে, বিদেশি বিনিয়োগ থেকেই তারা করে। সেখানে আন্তর্জাতিক বাজার আপস অ্যান্ড ডাউন হলে কিছু বৈদেশিক বিনিয়োগ ইম্প্যাক্টেড হয়। আমাদের দেশে তা উল্টো। আমাদের দেশে আমরা যা করে আসছি তা নিজেদের বিনিয়োগ থেকে করছি। মূলত আমাদের বিনিয়োগ অনেক বড়। ফলে আমাদের ওপর এর প্রভাব আসবে বলে মনে করি না।

জ্বালানি তেলের দাম কমার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই কোনো সিদ্ধান্ত আসবে কি না, জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। এটা আমাদের পর্যায়ে এলে আপনাদের জানাতে পারব। তবে আমার বিশ্বাস, যখন যা করা দরকার সরকার অবশ্যই করবে। আপনারা জানেন, জ্বালানি তেলের দাম কতটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এখন আমরা নিম্নমুখী দেখতে পাচ্ছি। আমার বিশ্বাস সরকার সেটি বিবেচনা করবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

আট জেলায় হাই-টেক পার্কের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে পাঁচ বছর বিলম্বের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এটি করা হয়েছে। আগে বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হয়েছে। সেখানে কিছু কাজ আমরা শুরু করেছি। বাকি কাজগুলো করার জন্য আজ আমরা অনুমোদন দিয়েছি। বিভিন্ন কারণে এটি বিলম্ব হয়েছে। ভারত অবশ্যই টাকা দেবে। এখন যাদের দেয়া হচ্ছে লারসেন অ্যান্ড টাব্রো নামকরা একটি কোম্পানি, আমার মনে হয় এবার এ প্রকল্পটি নিয়ে এগোতে পারব।

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

© ভোরের কাগজ 2002 – 2020

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী । মুদ্রাকর: তারিক সুজাত

কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, তৃতীয় তলা, ৭০ শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, (নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ), ঢাকা-১২১৭ ।
ফফোন: ৯৩৬০২৮৫, ৮৩৩১০৭৪ ফ্যাক্স: ৯৩৬২৭৩৪, সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন : ৮৩৩১৮০৬ । ইমেইল: [email protected]com