বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনা-বগুড়া মহাসড়কজুড়ে হাট বসার কারণে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ যেন দেখার কেউ নেই।
জানা যায়, বেড়া-সাঁথিয়ার প্রাণকেন্দ্র করমজা চতুর হাট প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার বসে। হাটে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাটুরেরা বাধ্য হয়ে মহাসড়কের অনেকটা অংশজুড়ে বসেন। এতে দীর্ঘদিন ধরেই হাটবারে মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
সরজমিন দেখা যায়, মহাসড়কের অনেকটা দখল করে পেঁয়াজ, রসুন, কলা, সবজি, শুকনা মরিচসহ নানা পণ্যের চলছে বেচাকেনা। বেচাকেনার পর সেখানেই রিকশা-ভ্যান অথবা নছিমনে বোঝাই করা হচ্ছে বিক্রিত পণ্য। এ কারণে হাট সংলগ্ন, মহাসড়কের পুরো অংশজুড়েই দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। আর এরই মাঝে যানজটে পড়ে অসহায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহন। যানজট নিরসনে চোখে পড়ে না কোনো ট্রাফিক পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার।
মহাসড়কের প্রায় মাঝ বরাবর সবজি বিক্রির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন সাঁথিয়া উপজেলার ভিটাপাড়া গ্রামের কৃষক রউজ শেখ (৫২)। যানজটে থাকা গাড়িগুলো ধীরগতিতে তার শরীর ছুঁয়ে যেতে থাকলেও খুব একটা বিচলিত হতে দেখা যায়নি তাকে।
রউজ বলেন, কেউ কি ইচ্ছে করে সড়কের ওপর বেচাকেনা করতে আসে? হাটের ভেতরে একটুও জায়গা নেই, আমরা বাধ্য হয়ে সড়কে এসেছি।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রইজউদ্দিন বলেন, করমজা হাটের জন্য আমাদের দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। এতে প্রায়ই বিভিন্ন বাসের ট্রিপ মিস হয়ে যাচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
ঢাকাগামী সরকার ট্রাভেলসের যাত্রী পোশাক শ্রমিক আব্দুল মমিন (৩২) জানান, গাজীপুর থেকে প্রতি মাসেই একবার বাড়িতে আসেন তিনি। চতুর হাটের এই জ্যাম অনেক দিনের। এখানে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বাসের ভেতরে জ্যামে বসে আছেন। গন্তব্যস্থলে সময় মতো পৌঁছাতে পারবে কিনা সংশয়ে রয়েছেন।
কাশিনাথপুর থেকে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল পাবনা জেলা মালিক গ্রুপ পরিবহনে কাশেম মোল্লা (৪৫) জানান, সিএণ্ডবি চতুর হাট মহাসড়কজুড়েই বসে। জ্যামে প্রায় ৪০ মিনিট বসে আছি। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে না পারলে আমার অনেক লোকসান গুনতে হবে।
এ ব্যাপারে করমজা চতুর হাট বণিক সমিতির সভাপতি হাজী আব্দুল মজিদ বলেন, মহাসড়কে হাট ও হাটের অন্যান্য বিষয় নিয়ে বেড়া মেয়রের সঙ্গে মিটিং করে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাশিনাথপুর ফাঁড়ির টিআই রবিন্দ্রনাথ জানান, জনবল সংকটের কারণে আমরা একটু পিছিয়ে রয়েছি। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।