এন এ রবিউল হাসান লিটন, বোদা থেকে : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তৃতীয় দিনে আরো ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন নদী থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ জনে। মৃতদের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৫ জন, দেবীগঞ্জের ১৭ জন, আটোয়ারীর ২ জন ও ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ জন ও পঞ্চগড় সদরের ১ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে নারী ৩০ জন এবং পুরুষ ১৭ জন এবং বাকি ২১ জন শিশু।
জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্যকেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, উদ্ধারকৃত সব মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায়। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ৬৮ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ বাকিদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ চলছে।
গতকাল দুপুরে উপজেলার গোবিন্দগুরু গ্রামে একই পরিবারের নিখোঁজ দুই বোন কবিতা রানী (৯) ও পুতুল রাণীর (১৫) মরদেহে উদ্ধার হয়। মরদেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার পরিবারে কান্নার রোল পড়ে যায়। বারবার মূর্ছা যায় তাদের বাবা-মা।
গতকাল যে ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তারা হলেন- শৈলবালা (৫১), সনেকা রানী (৫৫), হরি কিশোর (৪৫), শিল্টু বর্মন (৩২), মহেন চন্দ্র (৩০), ভূমিকা রায় পূজা (১৫), আঁখি রানী (১৫), সুমি রানী (৩৮), পলাশ চন্দ্র (১৫), ধৃতি রানী (১০), সজিব রায় (১০), পুতুল রানী (১৫), কবিতা রানী (৯), রতœা রানী (৪০), মালিন্দ্র নাথ বর্মন (৫৬), মণিভূষণ বর্মণ (৪৬), মুনিকা রানী (৩৬) ও দোলা রানী (৫)।
এদিকে দুপুরে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি, জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রংপুর বিভাগের উপপরিচালক মো. জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অন্যদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় জেলায় ৩ দিনের (২৭, ২৮, ২৯ সেপ্টেম্বর) শোক ঘোষণা করা হয়েছে।