কাগজ ডেস্ক : ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ ৬ মাসে গড়িয়েছে। এখনো মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া। প্রতিনিয়িতই গোলার আঘাতে বিদীর্ণ হচ্ছে ইউক্রেন। প্রতিমুহূর্তই নিরাপত্তাহীনতায় কাটাচ্ছে দেশটির মানুষ। তবে তারাও বসে নেই। নিজেদের মতো করে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে। অসীম মনোবল আর দেশপ্রেমই যুদ্ধকে ৬ মাস পর্যন্ত টেনে নিতে পেরেছে ইউক্রেনীয়রা। সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর তারা। তবে রাশিয়াও নিজেদের অবস্থানে অনড়। লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত পিছু হটার কোনো লক্ষণ নেই।
ইতোমধ্যে বেশ সাফল্যও পেয়েছে বিশ্বের অন্যতম এই পরাশক্তি। এখন অপেক্ষা করছে নিজেদের চূড়ান্ত বিজয় দেখার জন্য।
যুদ্ধের এই দামামার মধ্যে ইউক্রেন যাচ্ছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তাদের এই সফর নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধে দূতিয়ালি করছেন এরদোগান ও গুতেরেস।
জানা গেছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন এই দুই নেতা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাদের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। খবর আলজাজিরার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন ‘প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আমন্ত্রণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপে এরদোগান এবং ইউক্রেনের নেতার সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার লভিভে থাকবেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ডুজারিক আরো বলেন, বৈঠকের পর এই তিনজন (গুতেরেস, এরদোগান ও জেলেনস্কি) পর দিন শুক্রবার কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসার বন্দর পরিদর্শন করবেন। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির অধীনে স¤প্রতি এই বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি আবারো শুরু হয়েছে। মূলত গত ২২ জুলাই স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের বিভিন্ন গুদামে আটকে থাকা আড়াই কোটি টন গম ও ভুট্টার আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছানোর পথ খুলে যায়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্যবহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সে জন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হবে। সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে জাতিসংঘ, রাশিয়া ও তুরস্ক।
ডুজারিক বলেন, গুতেরেস পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন। একই সঙ্গে সেখানে তিনি ‘সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা’ নিয়েও আলোচনা করবেন। ইউক্রেন ও রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে হামলার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণের পর পরই দখল করেছিল রাশিয়ান বাহিনী।
তবে এই স্থাপনাটি এখনো ইউক্রেনীয় প্রযুক্তিবিদদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের কিয়েভ থেকে জাপোরিঝিয়া সফরের সুবিধা করে দিতে তারা সাহায্য করতে পারে।