কাগজ প্রতিবেদক : ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং সবাই তার নাম উচ্চারণ করতে সাহস পাচ্ছিল না, আকবর হোসেন পাঠান ফারুক নির্ভয়ে কথা বলতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন। সিনেমা অঙ্গনে তিনি অন্যদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে বেঁচে থাকবেন।
গতকাল বুধবার বিকালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মিলনায়তনে বাঙালি সাংস্কৃতিক বন্ধন আয়োজিত চিত্রনায়ক ফারুকের স্মরণসভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন। বাঙালি সাংস্কৃতিক বন্ধনের সভাপতি সাইদুর রহমান সজলের সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সংস্থার সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাসার। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ ও ‘এই পৃথিবীর পরে কতো ফুল ফোটে আর ঝরে’ সম্মেলক গান পরিবেশন করেন সংগঠনের শিল্পীরা। এরপর সাইদুর রহমান সজল পরিচালিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ফারুক জাতির পিতার সংস্পর্শে এসেছিলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফারুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ডানপিঠে হওয়ার কারণে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয়কর্মী ছিলেন এবং সে সময় আইয়ুবের রোষানলে পড়েন। তিনি দমে যাননি প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি যথার্থ সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনোই ভোলার নয়।
মন্ত্রী বলেন, ফারুক শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবেই অবদান রাখেননি, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছেন। তার কর্মের মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝে চিরজাগরূক থাকবেন এবং সিনেমা অঙ্গনে অন্যদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে বেঁচে থাকবেন। আখতারুজ্জামান বলেন, চিত্রনায়ক ফারুক আর আমি এক সঙ্গে পিঠাপিঠি বড় হয়েছি, একসঙ্গে একই গ্রামের ৭ জন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। তিনি এই দেশের গ্রাম, সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং যুব সমাজকে জীবন্ত করে রেখেছিলেন তার সাংস্কৃতিক চেতনার মধ্য দিয়ে। তিনি কিংবদন্তি।
সাইদুর রহমান সজল বলেন, ফারুক ভাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন এবং এই দেশের জন্য অবদান রেখেছেন, তা অনুস্মরণীয় দৃষ্টান্ত। সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ ঠেকাতে আমাদের তার দেখানো পথে হাঁটতে হবে।