মাহমুদুর রহমান মান্না : খালেদা জিয়া এখন তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছেন

আগের সংবাদ

ওমিক্রন ঠেকাতে চার সুপারিশ

পরের সংবাদ

করোনাকালেও রাজস্ব আয়ে ঊর্ধ্বগতি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলী ইব্রাহিম : করোনার নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে গতি ফিরেছে রাজস্ব আয়ে। যার প্রমাণ মিলেছে রাজস্ব আয়ে। আর রাজস্ব আহরণ বেড়ে যাওয়ায় কমে আসছে ঘাটতি। সর্বশেষ হিসাবে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব আদায়ে আবারও রেকর্ড ১৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। প্রথম চার মাসে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগ মিলিয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাড়ে ১৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলো রাজস্ব আয়ে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) আয়কর থেকে ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আহরণ অর্থাৎ আদায় হয়েছে ২৩ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯১ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে, ভ্যাটের ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ২৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার সাড়ে ৯১ শতাংশ। তবে, সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমদানি-রপ্তানির শুল্ক খাত থেকে। এ খাতে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে আদায় হয়েছে ২৬ হাজার ৪০৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সাড়ে ৮৭ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৫২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। মোট ঘাটতি ৮ হাজার ৭৫৩ কোটি এক লাখ টাকা।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগে এনবিআরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যথাক্রমে এক হাজার ৯৭৮ কোটি, এক হাজার ৯৪৭ কোটি এবং দুই হাজার ৪১৭ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছিল। মোট ঘাটতি ছিল ছয় হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারির মধ্যেও ধারাবাহিকভাবে বড় অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি বিবেচনা করলে আমি মনে করি, আমাদের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো। নিবিড় পর্যবেক্ষণ, অটোমেশন ও করের আওতা বাড়ানোর কারণে রাজস্ব আহরণে গতি ফিরেছে। করোনা মহামারির মধ্যেও ধারাবাহিকভাবে বড় অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাবে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ও প্রবৃদ্ধি আরো বাড়তে পারে বলেও মনে করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
সূত্র আরো জানায়, অর্থবছরের প্রথম চার মাসে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগ মিলিয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাড়ে ১৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলো এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। গত জুলাই-আগস্টে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি, নিবিড় পর্যবেক্ষণ, করনেট বৃদ্ধি ও অটোমেশনের কারণে রাজস্ব আদায়ে গতি ফিরেছে। যদিও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এনবিআর এখনো আট হাজার ৭৫৩ কোটি এক লাখ টাকা পিছিয়ে রয়েছে। অর্জিত হয়েছে ৯০ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ঘাটতি ছিল ছয় হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারঘোষিত লকডাউনের ধাক্কা লেগেছিল গত ২০২০-২১ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে। ওই অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায়ে মাত্র ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল এনবিআর। যদিও সেই ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই সামলে উঠেছে রাজস্ব সংগ্রহের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমদানি-রপ্তানির শুল্ক খাত থেকে। এ খাতে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে আদায় হয়েছে ২৬ হাজার ৪০৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সাড়ে ৮৭ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯ হাজার ৩৫২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। মোট ঘাটতি আট হাজার ৭৫৩ কোটি এক লাখ টাকা। শুধু অক্টোবরের রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যেখানে তিন বিভাগে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুল্ক খাতে। আমদানির প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই মাসে ২২ দশমিক ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ মাসে আয়কর ও ভ্যাট বিভাগে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৮ দশমিক ২৪ ও ১০ দশমিক ৯ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ৪১ হাজার ১১৮ কোটি ২০ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ করেছিল এনবিআর। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়