শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : শ্রীপুরে নিখোঁজের পাঁচ দিনপর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রামিমুল হাসান বিজয়ের (১৪) গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকার রোমান বেপারীর ছেলে ও একই এলাকার শতদল কিন্ডারগার্টেনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। গত রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের শালবনের ভেতর থেকে ছাত্রের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রামিমুল হাসান বিজয়ের চাচা একই এলাকার মৃত নূর হোসেন বেপারীর ছেলে জুয়েল বেপারীসহ (৩০), তার দুই সহযোগী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জিহাদ (১৭) এবং ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ধলিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে শামীমকে (২৪) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে রামিমুল হাসান বিজয়ের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গতকাল সোমবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
রামিমুল হাসান বিজয়ের বাবা রোমান বেপারী বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করলেও পুলিশ আমার ছেলেকে উদ্ধারে কোনো সহযোগীতা করেনি। ছেলেকে উদ্ধারের জন্য থানায় গেলে পুলিশ গুরুত্ব দেননি। পুলিশের অসহযোগিতার কারণে আমার ছেলেকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা নিয়ে নেত্রকোনার সুসং দুর্গাপুর নিয়ে যেতে বলে সংযোগ কেটে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে অপহরণকারীরা। রামিমুল হাসান বিজয় চন্নাপাড়া এলাকার শতদল কিন্ডারগার্টেনের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মো. নাসিম থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বরাত দিয়ে জানান, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা রামিমুল হাসান বিজয়কে বাড়ির পাশ থেকে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে তার আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সবাইকে বিষয়টি অবগত করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারী সবার পরামর্শে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অপহরণের একদিন পর বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে বিজয়ের বাবার মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে তার চাচা জুয়েল বেপারী শ্রীপুর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করে। নিখোঁজ জিডির পর পুলিশ বিজয়কে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া এলাকা থেকে জিহাদ এবং নেত্রকোনার নান্দাইল উপজেলার ধলিয়াপাড়া গ্রাম থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চন্নাপাড়া থেকে বিজয়ের চাচা জুয়েল বেপারীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তিতে রামিমুল হাসান বিজয়ের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।