নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : নন্দীগ্রামে শতবিঘা ধান আবাদি কৃষি জমি ভরাট ও ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণের মাধ্যমে কৌশলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার অভিযোগ করা হয়েছে। পৌরসভার ঢাকুইর মোড় সংলগ্ন কাথম-কালিগঞ্জ সড়কের পাশে বাদলাশন মাঠে তিন ফসলি জমি পতিত রেখে ভরাট ও নির্মাণকাজ করছে কোয়ালিটি লাইভস্টক লিমিটেড। কৃষি জমির মাঝখানে টাঙানো হয়েছে সাইনবোর্ড। নির্মাণকাজ তদারকি করছেন কাথম কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের কর্মকর্তারা। কৃষকদের প্রলোভন দেখিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে জমিগুলো ক্রয় করে কৌশলে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণ হলে কমবে ফসলি জমি, কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ। কৃষি জমি বিনষ্ট করে ভরাট এবং ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে কৃষকেরা বাধ্য হয়ে আশপাশের জমিগুলো বিক্রয় করতে পারেন। একারণে উপজেলার খাদ্য শস্য উৎপাদন হুমকির মুখে রয়েছে উল্লেখ করে নির্মাণাধীন স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, কৃষি জমি সুরক্ষা, ভূমি ব্যবহার আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন না মেনে উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ সড়কের পাশে বাদলাশন মাঠে কৃষি জমি ভরাট করে ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রি ও মিল-কারখানা। কোয়ালিটি লাইভস্টক লিমিটেড প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা ঢাকুইর-চাকলমা সড়কের পাশে ইট-বালি রাখে এবং রাতের আঁধারে কৃষি জমি ভরাটকাজ করছে। কীভাবে ধান আবাদি কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং ভূমি অফিসসহ সরকারি কোনো দপ্তরের কর্মকর্তারা এই অনিয়মে জড়িত আছেন কিনা! কৃষি জমিতে ইন্ডাস্ট্রি ও মিল-কারখানা স্থাপন-নির্মাণে পরিবেশগত ছাড়পত্র আছে কিনা, তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ উপজেলা ধান চাষ ও চাল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। উপজেলার খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত ধান, চাল, সরিষা এবং আলুসহ কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরজমিন গিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক মো. মতলুবর রহমান জানান, কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে সরকার আইনের মাধ্যমে নিরুৎসাহীত করেছে। জেলা পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আবেদন করলে যাচাই-বাছাইয়ের পর অনুমোদনের সুযোগ রয়েছে। তবে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ সীমিত করেছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোয়ালিটি লাইভস্টক লিমিটেড অবস্থানগত ছাড়পত্রের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছে। তবে অনুমোদন হয়নি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।