রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

সৈয়দপুর পৌরসভার উন্নয়ন ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছে : প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : ব্যবসা ও শিল্প সমৃদ্ধ পৌরসভা সৈয়দপুর। ৩০ বছর আগেই এটি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা লাভ করে। সেই সময় বছরে আয় ছিল ৬০ লাখ টাকারও বেশি। যা বর্তমানে কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অথচ শহর ও পাড়া মহল্লার সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। বলতে গেলেই নাগরিক সুবিধা থমকে গেছে। ভাঙ্গা চোরা রাস্তা মেরামত নিয়ে বছর বছর স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করে আসছে। চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখিও। বিগত ২০২১ সালের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফিকা আকতার জাহানকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। শেখ হাসিনার প্রার্থী হওয়ায় মেয়র পদে বিপুল ভোটে তিনি জয়লাভ করেন। অথচ তার ক্ষমতায় আসীনের আড়াই বছরেও পৌরবাসীর নজরে আসেনি কাক্সিক্ষত উন্নয়ন। এ নিয়ে শাসক দল ও দলের বাইরেও সমালোচনার ঝড় বইছে। আর সমালোচনার বোঝা কাঁধে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রথম নারী মেয়র রাফিকা আকতার জাহান। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ২৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ১৫টি ওয়ার্ডের এ পৌরসভায় ১৮৫ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ কিলোমিটার কাঁচা। প্রতিটি সড়কের আয়ুষ্কাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। চলছে প্রান্তিককাল। বার্ষিক বরাদ্দ যা আসে সরকারের তরফ থেকে তা টুকিটাকি মেরামতে শেষ হয়ে যায়। একই দপ্তরের দেয়া তথ্য মতে ১৭০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার মধ্যে ১৫০ কিলোমিটার সড়কের নাজুক অবস্থা। একেবারেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই রাস্তা মেরামতে প্রয়োজন বর্তমান বাজার দরে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা। বছরখানিক আগেও কাজ শুরু করা হলে প্রয়োজন হতো প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। কিন্তু নির্মাণ সামগ্রীর দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় এক বছর আগের করা বাজেট বৃদ্ধি করে বর্তমানে প্রকল্প ব্যয় হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, পৌর এলাকার নাগরিক সুবিধা বাড়াতে ও রাস্তা পুনর্নির্মাণ করতে প্রকল্প প্রফাইল জমা দেয়া হয়েছে। অর্থের যোগান দেবে বিশ্বব্যাংক। তবে পুরোটাই ঋণ হিসেবে দিবে দাতা সংস্থা। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি সামাজিক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কাজী লিয়াকত আলী প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম আরো জানান, সড়কগুলোর বেহাল অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ী জনগণের অসচেতনতা। তার মতে বিটুমিনের রাস্তার প্রধান শত্রæ হলো পানি, মবিল, পেট্রোল ও ডিজেল। কোনোভাবে এসব পদার্থ রাস্তার ওপর গড়ালে রাস্তা ভাঙতে শুরু করে। এজন্য পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কের স্থায়িত্ব বাড়াতে শহরের মূল সড়গুলো আরসিসি ঢালাই দিয়ে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তিনি এও জানান, সবকিছুই নির্ভর করছে দাতা সংস্থার মর্জির ওপর। তারা যেটা চাইবে সেভাবেই কাজ করতে হবে।
এদিকে শহরের একাধিক বিশিষ্টজন অভিযোগ করে বলেছেন আগের মেয়রের আমলে সড়কগুলোর নির্মাণ কাজ নি¤œমানের হওয়ায় অল্প দিনেই তা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থাকে ঘিরে সাবেক কাউন্সিলর আকতার হোসেন ফেকু, মশিউর রহমান, আশরাফুল আলমসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সৈয়দপুর পৌরসভার উন্নয়ন পুরোপুরি ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে।
তাদের মতে পৌর মেয়র ন্যায়, নিষ্ঠা ও কৃচ্ছ্্রতা সাধন করতে পারলে প্রতি বছর নিজস্ব আয় থেকেই পৌর পরিষদ অন্তত পাঁচ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারবে। তাদের মতে শুধুমাত্র টোল ও অন্যান্য দুই তিনটি খাত থেকে আসা রাজস্ব আয়ের টাকা সঞ্চিত রাখতে পারলেই যে কোনো মেয়র ক্ষমতার এক মেয়াদেই সৈয়দপুর পৌর এলাকার উন্নয়নের দৃশ্যপট পাল্টে দিতে পারবেন। তবে তারা বলেন, এজন্য প্রয়োজন রয়েছে মেয়র ও কাউন্সিলরের স্বচ্ছতা ও ত্যাগের মানসিকতা।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান মুঠোফোনে বলেন, পৌরবাসীকে আমি ধৈর্য্য ধরতে বলব, অপেক্ষা করেন, উন্নয়ন কাকে বলে আমি তা দেখিয়ে দেবো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়