রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

রাষ্ট্রপতি : স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন কোনোমতেই ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পাশাপাশি একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান তিনি। গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধে ৭১’ এর ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাব। যারা চক্রান্ত করবে তাদের বিরোধিতা করব। সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধির উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে তারা যেন কোনোভাবেই আর ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও অনুরোধ করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তার ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটা অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক খেলা হয়েছে, অনেক নেতৃত্ব এসেছে। কিন্তু এ খেলায় বিজয়ী হচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি জানতেন কীভাবে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করতে হয়। ১৯৭১ সালের গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের বাংলার মাটিতে সংগঠিত এ গণহত্যা বিংশ শতাব্দীর জঘন্যতম বৃহৎ গণহত্যা। একাত্তরের ১৩ জুন যুক্তরাজ্যের দি সানডে টাইমস পত্রিকায় প্রখ্যাত সাংবাদিক এ্যান্থনি মাসকারেনহাসের লেখা প্রতিবেদনে গণহত্যার বিস্তারিত বিবরণ ছাপা হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো করা প্রয়োজন। এ দাবি নিয়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারও এক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
অনুষ্ঠানে সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ এবং মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ওপর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম প্রকাশিত ‘জেনোসাইড ১৯৭১’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী একাত্তরের গণহত্যার সঙ্গে জড়িত পাকিস্তান বাহিনীর শীর্ষ ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় এবং দেশের প্রতি জেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, বধ্যভূমি, গণকবর ইত্যাদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ বলেন, প্রতিটি যুদ্ধাপরাধী শাস্তি পাক, এটাই আমাদের লক্ষ্য। গণহত্যার স্বীকৃতিও আদায় করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে এই দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।
সংগঠনের মহাসচিব হারুন হাবীব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি আবারো সংগঠিত হতে শুরু করেছে। আমাদের আত্মতৃপ্তিতে ভুগলে চলবে না। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা এমন হতে হবে যেখানে সরকার ও বিরোধী দল দুটোই যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়। তবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল আলম বলেন, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাই। যুব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে বেগবান করেছি। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও একইভাবে আদায় করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়