রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

নিবিড় পর্যবেক্ষণ : সিসিইউ থেকে ফের কেবিনে খালেদা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২ মাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) সেটআপে কেবিনেই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি। গতকাল শনিবার তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ম্যাডাম অত্যন্ত অসুস্থ। শুক্রবার তার অবস্থার অবণতি হলে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেয়া হয়েছিল। বিকালের দিকে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে আবার কেবিনে নিয়ে আসা হয়। এখন কেবিনে সিসিইউ সেটআপে চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে তিনি আছেন।
৭৮ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার, ফুসফুস, কিডনি জটিলতাসহ হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসহ নানা রোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন যাবত। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসা দিচ্ছেন। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন জানিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি করে আসছেন দলটির নেতাকর্মীরা। গত শুক্রবার এক সমবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যখন তার (খালেদা জিয়া) জীবনমরণ সমস্যা তখন তাকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে বন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রীর যদি সুচিকিৎসা না হয়, তাকে যদি বিদেশে পাঠানো না হয়, চিকিৎসার অভাবে তার শারিরীক অবস্থা আরো অবণতির দিকে যেতে পারে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতিবেদনে অবিলম্বে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানোর সুপারিশ করেছে। তাকে দ্রুত বিদেশে উন্নত মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি সেন্টারে পাঠানো দরকার।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে গতকাল শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আমার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি কাগজপত্রের আলোকে ভেবে দেখবে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়া যায় কিনা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হয়েও এখন যে মুক্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন সেটাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায়।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আইনি কোনো সুযোগ নেই। তবে বিএনপি নেত্রীর মুক্তির আগের বাড়ানো মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে একই শর্তে মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। আবেদনে বিদেশে নেয়ার বিষয়টি ছিল। কিন্তু সেই বিষয়ে আইনি কোনো সুযোগ নেই। আইনি সুযোগ থাকলে আমরা বিবেচনা করতাম।
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে ফের আবেদন করা হবে কিনা- জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ভোরের কাগজকে বলেন, কয়েকদিন আগে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতেই ম্যাডামের মুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। এখন আবার নতুন করে আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। তখন করোনা মহামারির মধ্যে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। যে দুটি শর্তে নির্বাহী আদেশে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে, তার প্রথমটি হলো- তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে; দ্বিতীয়টি হলো- তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়