রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

কিউইদের বড় জয় : ব্যাটিং ব্যর্থতায় টাইগারদের হার

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল কিউইদের বিপক্ষে লড়তে নেমে ৮৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। টস হেরে প্রথমে বোলিংয়ে নেমে ৩ উইকেট শিকার করে অভিষেক রাঙান খালেদ মাহমুদ। অন্যান্য বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সফরকারীদের মাত্র ২৫৪ রানেই আটকে দেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ইনিংসটা রাঙাতে পারেননি তারা। ৪১.১ ওভারে ১৬৮ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। গতকাল এক উইকেট হারানোর পর প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ঘরের মাঠে ৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেও ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন তামিম ইকবাল। এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫ হাজার রানের মাইলফলকের পথে মাত্র এক রানের আক্ষেপ নিয়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বিদায়ের পর বাকি ব্যাটাররা চেষ্টা করেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট শিকার করেন ইশ সোধি।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে থিতু হওয়ার চেষ্টা চালান ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। চোটের কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকা তামিম উইকেটে থিতু হলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক লিটন। ষষ্ঠ ওভারে কাইল জ্যামিসনের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে মাত্র ৬ রান যোগ হয় বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। এরপর তানজিদ তামিমকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম ইকবাল। দুই ব্যাটারই নির্ভয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন। তানজিদ নিজের ইনিংস শুরু করেন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। এরপর তামিমও একের পর এক চার হাঁকাতে থাকেন। এর মধ্যেই প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে তিনি ৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। তার পরপরই ৩ চারে ১৬ রান করার পর আরেকটি বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টায় ইশ সোধির হাতে ধরা পড়েন তানজিদ। এরপর সৌম্য সরকার ২০২১ সালের পর প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে নেমে রানের খাতা না খুলেই সাজঘরের পথ ধরেন। তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটও আলো ছড়াতে পারেনি গতকাল। তিনি ৪ রানে আউট হলে ব্যাট হাতে উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে তুলে আনার চেষ্টায় রক্ষণাত্মক খেলার চেষ্টা করে তামিম-মাহমুদউল্লাহ জুটি। ১৯তম ওভারে তামিম কট বিহাইন্ড হয়ে আউট হওয়াতে এ জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। পরবর্তীতে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ ও শেখ মেহেদী। উইকেট পতনের মিছিল সামাল দিয়ে ধীরগতিতে তারা দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যেই ৩০তম ওভারে সোধির শিকারে পরিণত হন ১৭ রান করা মেহেদী। যার কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। সপ্তম উইকেট জুটিতে নাসুমকে সঙ্গী করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালান রিয়াদ। তাছাড়া তার লড়াই চলছিল একটি মাইলফলক স্পর্শেরও। ৫০ রান করতে পারলেই তিনি ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারতেন। তবে ৪৯ রান করে এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। বাকিদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ০ রানে, নাসুম ২১ রানে ও খালেদ ১ রানে আউট হন। শেষ পর্যন্ত ২ রানে অপরাজিত ছিলেন মোস্তাফিজ।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন শেখ মেহেদী ও খালেদ আহমেদ। বাকিদের মধ্যে ২টি উইকেট তোলেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং ১টি করে উইকেট তোলেন হাসান মাহমুদ ও নাসুম আহমেদ। কিউই শিবিরে প্রথম হানা দিয়েছেন কাটারমাস্টার খ্যাত মোস্তাফিজ। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই তার বলে রানের খাতা না খোলে সাজঘরের পথ ধরেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের ওপেনার উইল ইয়ং। আরেক ওপেনার ফিল অ্যালেন তিনে নামা চাড বাউসকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা চালান। এর মধ্যেই অ্যালেনকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। তিনি ১৫ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলেন। চারে নামা হেনরি নিকোলস এরপর রক্ষণাত্মক খেলে উইকেটে নিজের অবস্থান শক্ত করেন। এক প্রান্তে তিনি বলের পর বল ডিফেন্স করছিলেন, আরেক প্রান্তে থাকা বাউস গতকালের ম্যাচে অভিষিক্ত খালেদের ক্যারিয়ারের প্রথম শিকারে পরিণত হন তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে। ৭ দশমিক ৫ ওভারে ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড দল কোণঠাসা হয়ে পড়ার কথা থাকলেও চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন টম ব্লান্ডেল ও নিকোলস। দুই ব্যাটারের মধ্যে নিকোলসের খেলা ছিল রক্ষণধর্মী, অন্যদিকে স্ট্রাইক রেট ঠিক রেখে চার-ছক্কা হাঁকাচ্ছিলেন ব্লান্ডেল। তাদের জুটি ভাঙে নিকোলস ৪৯ রানে খালেদের শিকারে পরিণত হলে। এর তিন ওভার পরই হাসান মাহমুদের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে আউট হন ৬৮ রানের ইনিংস খেলা ব্লান্ডেল। পরবর্তীতে দাপট দেখান স্পিনাররা। এর আগ পর্যন্ত কিপ্টে রান খরচে বল হাতে লড়াই করলেও স্পিনারদের হয়ে প্রথম উইকেটটি শিকার করেন শেখ মেহেদী। তার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরের পথ ধরেন রচিন রবীন্দ্র। এরপর কোল ম্যাককঞ্চিকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেন নাসুম আহমেদ। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি এই কিউই ব্যাটারের। টানা উইকেট পড়তে থাকায় মনে হচ্ছিল ২১০ রানের মধ্যেই সফরকারীদের আটকে দেবে টাইগাররা। তবে এমন পরিস্থিতিতে দলের ত্রাতা হয়ে ওঠেন ইশ সোধি ও কাইল জ্যামিসন। ২১৯ রানের সময় জ্যামিসনকে সাজঘরে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মেহেদী। এরপর হাসান মাহমুদ নিজের শেষ ওভারে মানকাড করে আউট করেন সোধিকে। পরবর্তীতে অধিনায়ক লিটনের অনুরোধে মাঠে ফিরিয়ে আনা হয় তাকে। এরপর কিউই অধিনায়ক লোকি ফার্গুসনকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করেন মেহেদী। শেষ উইকেট জুটিতে মারমুখি হওয়ার চেষ্টায় খালেদের শিকার হয়ে ফিরে যান সোধি। সবার প্রচেষ্টায় ২৫৪ রানের সংগ্রহ গড়ে নিউজিল্যান্ড।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়