গ্রিন ভয়েস : প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের দাবিতে সাইকেল র‌্যালি

আগের সংবাদ

বাজেটে কেউ খুশি নয় : সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বেড়েছে, পূরণ হয়নি ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দাবি

পরের সংবাদ

ফ্যাটি লিভারই এখন ক্রনিক হেপাটাইটিসের প্রধান কারণ : দেশে প্রতি ৪ জনে ১ জন আক্রান্ত

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ফ্যাটি লিভার বা যকৃতে চর্বি- এখন অনেকেই ভুগছেন এই রোগে। কয়েক বছর আগেও ধারণা করা হতো, শহরের মানুষের মধ্যেই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। কিন্তু সেই চিত্র বদলে গ্রামেও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। বর্তমানে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে প্রতি ৪ জনের ১ জন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত।
স¤প্রতি ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলায় শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সেখানে ২৩ শতাংশ নারী ও ২০ শতাংশ পুরুষের মধ্যে ফ্যাটি লিভার পাওয়া গেছে। শহরে এর হার ৩০ শতাংশের মতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক অবস্থায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার সিরোসিস, এমনকি লিভার ক্যান্সারও হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, যকৃতে কিছুটা চর্বির উপস্থিতি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু একজন ব্যক্তির যকৃতের যে ওজন, তার ১০ শতাংশের বেশি যদি চর্বি হয় তখন সেটিকে ফ্যাটি লিভার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই রোগ হলে যকৃতে চর্বি জমার পাশাপাশি যকৃৎ একটু বড় হয়ে যায়। ফ্যাটি লিভারের একটি বিপজ্জনক পরিণতি হলো ‘নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিস’ (সংক্ষেপে ন্যাশ)।
ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের কারণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলছেন, আমাদের খাদ্য তালিকা ভাত নির্ভর হওয়ায় অতিরিক্ত শর্করা শরীরে গিয়ে ফ্যাটি লিভার তৈরি করে। যাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি। বিশেষ করে যাদের শরীরের মাঝখানের অংশে অর্থাৎ পেটে অনেক চর্বি তাদের ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া যাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের সমস্যা, পলিসিস্টিক ওভারি রয়েছে তাদেরও ঝুঁকি বেশি। কিন্তু এসব অসুখ নেই এমন ব্যক্তিরও এই রোগটি হতে পারে। এমনকি শিশুদের মধ্যেও এটি পাওয়া যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন-আল-মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, পাশ্চাত্যে ফ্যাটি লিভারের মূল কারণ অ্যালকোহল। তবে আমাদের মতো দেশগুলোয় মেদভুঁড়ি, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, হাইপারটেনশন বা অতিরিক্ত রক্তচাপ আর হাইপো-থাইরয়েডিজম ফ্যাটি লিভারের মূল কারণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
গবেষণা বলছে, এক সময় হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের পর ফ্যাটি লিভার এ দেশে ক্রনিক হেপাটাইটিসের দ্বিতীয় প্রধান কারণ ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯-এর পর ফ্যাটি লিভারই প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। এ দেশে প্রায় ৫ শতাংশ লিভার সিরোসিস রোগী ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এ থেকে লিভার সিরোসিস হলে, ১৫ শতাংশ রোগী ৭ বছরের মধ্যে আর ২৫ শতাংশ ১০ বছরের মধ্যে মারা যায়।
এ রোগ থেকে বাঁচতে খাদ্য তালিকা ও জীবনযাপনে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ভাত খেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমাতে না গিয়ে কমপক্ষে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করা, চা-কফিতে চিনি না খাওয়া, মিষ্টি কম খাওয়া, নিয়মিত হাঁটা ও শারীরিক পরিশ্রম করার পরামর্শও দেয়া হয়।
আগামীকাল ৮ জুন আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস।? ফ্যাটি লিভার প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করতেই এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘স্টেপ আপ পর ন্যাশ’। দিবসটি পালনের আগেই আজ সকাল ১০টায় সিরডাপ মিলনায়তনে হেপাটোলজি সোসাইটি আয়োজিত ‘ফ্যাটি লিভার: বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক বোঝা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়